তাঁকে শাসনের বাড়িতে ফেরানোর দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনের, এমনকী মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকেরএমনই দাবি তুললেন সিপিএম নেতা মজিদ মাস্টার (মজিদ আলি)। সরাসরি সেই দাবি নাকচ না করলেও পুলিশ-প্রশাসন বুঝিয়ে দিয়েছে, সিপিএমের উত্তর ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদকমণ্ডলীর এই সদস্যকে ফেরালে শাসনে অশান্তি বাড়বে। এক ধাপ সুর চড়িয়ে তৃণমূলের জেলা পর্যবেক্ষক তথা রাজ্যের মন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় বলেছেন, “গোটা ভারতবর্ষের সিপিএম নেতারা এলেও মজিদকে শাসনে ঢুকতে দেব না।”
রবিবার বিকেলে শাসন-লাগোয়া বেলিয়াঘাটায় সিপিএমের জোনাল অফিসে হামলার ঘটনা খতিয়ে দেখতে গেলে বছর দু’য়েক ঘরছাড়া মজিদকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে পরে তিনি জামিন পান। সম্প্রতি সিপিএম মজিদ-সহ শাসনে ঘরছাড়াদের ফেরানোর দাবিতে মিটিং-মিছিল করায় জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেছিলেন, “মজিদরা শাসনে ঢুকলে আঁশ-বঁটি নিয়ে সবাই তৈরি আছে।” সোমবার বারাসতের ‘অজ্ঞাতবাস’ থেকে সেই সূত্র টেনে মজিদ বলেন, “জ্যোতিপ্রিয়বাবু যদি জেনেই থাকেন, যে আমাকে মারার জন্য আঁশ-বটি নিয়ে লোক তৈরি রয়েছে, তা হলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া তো তাঁরই কর্তব্য। আমাকে নিরাপত্তা দিয়ে ঘরে ফেরানোর ব্যবস্থা করা তো এক জন মন্ত্রীর দায়িত্ব।” তাঁর কটাক্ষ, “তৃণমূল ভয় পাচ্ছে, আমি এলাকায় ঢুকলে ওদের দলে কেউ থাকবে না!”
জ্যোতিপ্রিয়বাবুর জবাব, “আমরা তাঁর দায়িত্ব নিতে পারি, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ নেই। মজিদের বিরুদ্ধে খুন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীদের গাড়িতে গুলি চালানো, বোমাবাজি-সহ হাজার অভিযোগ রয়েছে। কী ভাবে আশা করেন শাসনে ফিরে ফের সন্ত্রাসের শাসন কায়েম করবেন? তা ছাড়া, ওঁর পরিবারের লোকেরা তো শাসনে দিব্যিই আছেন।” মন্ত্রীর অভিযোগ, “জেলায় পুলিশের কাছে যত অস্ত্র আছে, তার চেয়ে বেশি আছে মজিদের কাছে।”
পক্ষান্তরে তাঁকে ঘরে ফেরানো এবং নিরাপত্তার দায় পুলিশ-প্রশাসনের উপরে বলেও মন্তব্য করেছেন মজিদ। তাঁর কথায়, “আমাকে একটি খুনের মামলায় মিথ্যা অভিযোগে জড়ানো হয়েছিল বলেই আমি শাসন ছেড়েছি। আমি জামিন পাওয়া আসামি। আমাকে নিশ্চিন্তে ঘরে পাঠানো ও সেখানে রাখার ব্যবস্থা করার দায়িত্ব পুলিশ-প্রশাসনেরও।”
কী করবেন? জেলার পুলিশ সুপার সুগত সেন সরাসরি জবাব এড়িয়ে বলেন, “মজিদ মাস্টারের বাড়ি এমন একটি এলাকায় যেখানে তিনি ঢুকলে আইন-শৃঙ্খলার অবনতির সম্ভাবনা রয়েছে।” তা হলে পুলিশ কি মজিদকে নিরাপত্তা দেবে না? জেলা পুলিশের এক কর্তা বলেন, “রাজ্যের অন্যত্র মজিদকে নিরাপত্তা দেওয়া গেলেও যেতে পারে, তবে শাসনে নয়।”
|