তৃণমূলের এক যুব নেতা দলেরই মহকুমা সভাপতির বিরুদ্ধে ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ তুললেন। মুর্শিদাবাদের জিয়াগঞ্জে সোমবার দু’পক্ষের মধ্যে হাতাহাতিতে ওই যুব নেতা সহ দু’জন আহত হয়েছেন। পুলিশ জানিয়েছে, দু’তরফেই অভিযোগ জমা পড়েছে। তা খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। কাউকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি।
জেলার লালগোলা ব্লক যুব তৃণমূলের সভাপতি ইমদাদুল হকের দাবি, “৮ জন ইটভাটা মালিকের কাছ থেকে তৃণমূলের লালবাগ মহকুমা সভাপতি সমর দে ৩ লক্ষ ৭০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছিলেন। ওই ৮ জনকে তিনি ইটভাটা করার জন্য বৈধ অনুমতিপত্রের ব্যবস্থা করে দেবেন বলে আশ্বাস দেন।”
কিন্তু মাস দু’য়েক কেটে যাওয়ার পরেও সেই অনুমতিপত্র সংগ্রহ করে না দেওয়ায় ওই ইটভাটা মালিকেরা সে কথা ইমদাদুলকে জানান।
ইমদাদুলের দাবি, “আমি সমরবাবুকে তখন টাকা ফেরত দিয়ে দিতে বলি। সে কারণেই তিনি
সোমবার আমাকে ওই ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে তাঁর বাড়ি যেতে বলেছিলেন। কিন্তু টাকা ফেরত দেওয়া তো দূরের কথা, তাঁর লোকজন আমাদের মারধর করেছে।”
ইমদাদুলকে প্রথমে জিয়াগঞ্জ ব্লক হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। তারপরে তাঁকে পাঠানো হয়েছে বহরমপুরে মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। ওই ইটভাটা মালিকদের অন্যতম মহম্মদ খলিলুর রহমান ভর্তি রয়েছেন একই হাসপাতালে। তিনি বলেন, “সমরবাবু আমাদের ধোঁকা দিয়েছেন। সে কারণেই ইমদাদুলের কাছে গিয়েছিলাম। এই দিন টাকা ফেরত চাইতে গেলে তাঁর লোকজন আমাদের বেধড়ক মারধর করেছে।”
সমরবাবুর অবশ্য দাবি, তিনি এই ঘটনার সঙ্গে কোনও ভাবেই জড়িত নন। তাঁর কথায়, “চক্রান্ত করে আমাকে ফাঁসানো হচ্ছে। মারধরের অভিযোগও মিথ্যা। বরং ওরাই আমার বাড়ি ভাঙচুর করেছে।”
জেলা কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরীর বক্তব্য, “তৃণমূল বাঁকা পথে কাজ করতে চায়, তাই নিজেরাই সমস্যায় পড়ে।”
রাজ্যের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের মন্ত্রী জেলার বিধায়ক সুব্রত সাহা অবশ্য জানিয়ে দিয়েছেন, সমরবাবুকে নিয়ে একটি অভিযোগের কথা তিনি শুনেছেন। তাঁর কথায়, “দল সবই খতিয়ে দেখছে। যদি অভিযোগ সত্যি হয় তা হলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে।”
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, গত বছর লালগোলার ময়া, পাইকপাড়া ও দেওয়ানসরাই এলাকায় ওই ৮টি ইটভাটা গজিয়ে ওঠে। সে বছর জুলাইয়ে লালগোলা থানায় তাদের বিরুদ্ধে বেআইনি ভাবে ইটভাটা চালানোর অভিযোগও দায়ের করেছিল ব্লক ভূমি ও ভূমি সংস্কার দফতর। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মৃণাল মজুমদার বলেন, “জেলায় অবৈধ ইটভাটা নিয়ে অনেক অভিযোগ রয়েছে। আমরা তা খতিয়ে দেখে দ্রুত ব্যবস্থা নিচ্ছি।” |