ফুটবল ক্যালেন্ডার বদলে গেছে। কলকাতা ময়দানের ঐতিহ্যবাহী বারপুজো কিন্তু বদলায়নি। সোমবার বাংলা নববর্ষের দিন তাই ফুল, মালা, মিষ্টি, ধুপ-ধুনোর গন্ধে ক্লাবগুলিতে উৎসবের আমেজ।
অবনমন বাঁচানো মোহনবাগান, আই লিগ খেতাব থেকে অল্পের জন্য দূরে সরে যাওয়া ইস্টবেঙ্গল বা আই লিগের তিন নম্বরের লক্ষ্যে থাকা প্রয়াগ ইউনাইটেড— তিন ক্লাবেই এ দিনের সকালটা বাঙালিয়ানায় ভরা। অন্য রকম। ভবানীপুর, খিদিরপুরের মতো ছোট ক্লাবগুলিও প্রথা মেনে একই পথের পথিক।
পয়লা বৈশাখে নতুন মরসুমের অধিনায়কদের দিয়ে বার পূজো করানোটাই রীতি বহু দিনের। সেটা মানার চেষ্টা করে সব ক্লাবই। এ বার যেমন ইস্টবেঙ্গলের পরের মরসুমের অধিনায়ক মেহতাব হোসেন ও সহ-অধিনায়ক হরমনজিৎ খাবড়া বার পুজো করলেন। মোহনবাগানে অবশ্য নতুন মরসুমের অধিনায়ক রহিম নবি দেরি করে আসায় নির্ধারিত সময়ে দুই কর্তা সহ সচিব সৃঞ্জয় বসু এবং অর্থসচিব দেবাশিস দত্ত পুজোয় বসে যান। পুজোর নিয়ম মানা হলেও সরকারি ভাবে কোনও ক্লাবই তাদের অধিনায়কের নাম ঘোষণা করেনি। মরসুম শেষ না হওয়ায়। তবে নবি এবং মেহতাব দু’জনেই জানান যে, ক্লাব তাদের জানিয়ে দিয়েছে পরের মরসুমে তাদেরই অধিনায়কের দায়িত্ব পালন করতে হবে। |
ময়দানের প্রধান দুই ক্লাবেই বারপুজোয় প্রচুর সদস্য-সমর্থক এলেও তাদের আলোচনায় শুধুই আই লিগ আর অসন্ন মরসুমের দল বদল। কোচ-ফুটবলাররাও তাতে সামিল। ইস্টবেঙ্গলের মেহতাব যেমন বলছিলেন, “লড়াইটা সত্যিই কঠিন হয়ে পড়েছে। যতক্ষণ আশা আছে, ততক্ষণ লড়াইয়ে রয়েছি।” আবার এডে চিডি বললেন, “পরের মরসুম নিয়ে ভাবার সময় আসেনি। এই মরসুমের আই লিগ নিয়েই ভাবছি।”
আই লিগে মোহনবাগানের ওপর এখন অনেকটাই নির্ভর করে থাকতে হচ্ছে লাল-হলুদ শিবিরকে। চার্চিল যদি করিম ব্রিগেডের কাছে পয়েন্ট নষ্ট করে তবে লাভ মেহতাব-পেনদেরই। নবি বললেন, “আমরা নিজেদের জন্যই জিততে চাই। তবে আমরা জিতলে যদি কোনও বাংলার ক্লাবের লাভ হয়, তাতে ক্ষতি কি?” টোলগে আবার বলছিলেন, “চার্চিল আমাদের থেকে ছয় পয়েন্ট নিয়ে যাবে এটা তো আমাদের কাছে অসম্মানের। নিজেদের সম্মান রক্ষার জন্য জিততে চাই”।
কোচ ট্রেভর মর্গ্যান অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ায় রঞ্জন চৌধুরী অনুশীলন করান ফুটবলারদের। পেন এবং বরিসিচ ছাড়া সবাই এসেছিলেন লাল-হলুদের অনুশীলনে। কোচের ক্লাব ছেড়ে দেওয়ার ঘোষণা এবং আই লিগ কার্যত হারানোর যন্ত্রণা ইস্টবেঙ্গলের উৎসবে ছাপ ফেলেছিল। অবনমন বাঁচিয়ে ফেলা স্বস্তির মোহনবাগানে তুলনায় উৎসাহ ছিল বেশি। |