|
|
|
|
চুল্লির বিল মেটাতে হিমসিম খাচ্ছে পর্ষদ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
আয় যা, ব্যয় তার দ্বিগুণ! সদ্য চালু হওয়া মেদিনীপুর পদ্মাবতী শ্মশানের বৈদ্যুতিক চুল্লি নিয়ে তাই হিমসিম অবস্থা মেদিনীপুর-খড়্গপুর উন্নয়ন পর্ষদের (এমকেডিএ)। অধিকাংশ টাকাই চলে যাচ্ছে বিদ্যুতের খরচ মেটাতে। পরিস্থিতি দেখে চুল্লির ট্রান্সফরমারের লোড কমাতে বিদ্যুৎ দফতরকে চিঠি দিয়েছে এমকেডিএ। তাদের আর্জি, যে ভাবেই হোক, বিদ্যুতের খরচ যাতে কমে তার ব্যবস্থা করা হোক। পর্ষদের চেয়ারম্যান তথা বিধায়ক মৃগেন মাইতির কথায়, “প্রচুর বিদ্যুৎ বিল আসছে। মাসে যেখানে গড়ে ৬০ হাজার টাকা আয় হচ্ছে, সেখানে ১ লক্ষ ২০ হাজার টাকা বিদ্যুতের বিল মেটাতেই চলে যাচ্ছে। পরিস্থিতি দেখে বিদ্যুৎ দফতরকে চিঠি দিয়েছি। লোড কমানোর অনুরোধ করেছি।” এ ভাবে কি লোড কমানো যায়? বিদ্যুৎ দফতরের মেদিনীপুর জোনাল ম্যানেজার বিনয় সেন বলেন, “এমকেডিএ-র চিঠি পেয়েছি। লোড কমানো যায় কি না, খতিয়ে দেখছি।”
বহু টানাপোড়েনের পর গত মার্চে চালু হয় এই বৈদ্যুতিক চুল্লি। ব্যয় হয়েছে দু’কোটিরও বেশি অর্থ। চুল্লির পাশে একটি পার্কও তৈরি করা হয়েছে। শ্মশানযাত্রীরা যাতে বসতে পারেন, সে জন্যই এই বন্দোবস্ত। মার্চের গোড়ায় চুল্লির উদ্বোধনের সময় রীতিমতো উৎসাহ দেখিয়েছিল এমকেডিএ। অথচ এক মাস পেরোতে না পেরোতে সেই চুল্লিই তাদের চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। পর্ষদ সূত্রে খবর, বৈদ্যুতিক চুল্লিতে শবদাহ করতে ১,২৫০ টাকা করে নেওয়া হয়। আর কাঠে দাহ করতে লাগে ১,৪০০ থেকে ১,৭০০ টাকা। গত এক মাসে পদ্মাবতী শ্মশানে অধিকাংশই শবদেহই বৈদ্যুতিক চুল্লিতে দাহ করা হয়েছে। ফলে, আয় কমেছে। পর্ষদের এক কর্তার কথায়, “প্রতিদিন যদি গড়ে ১০টি করে দেহ দাহ হত, তাহলে আয়ের থেকে ব্যয় দ্বিগুণ হত না। তবে মেদিনীপুরের মতো শহরে গড়ে ২টি করে দেহ দাহ হচ্ছে। অথচ, সারাদিনই চুল্লি চালিয়ে রাখতে হচ্ছে। ফলে, বিদ্যুতের বিল বেশি আসছে।” |
|
মেদিনীপুরের পদ্মাবতী শ্মশান। —ফাইল চিত্র। |
পাশের জেলা পূর্ব মেদিনীপুর, এমনকী বাঁকুড়া, পুরুলিয়াতেও শ্মশানে বৈদ্যুতিক চুল্লি নেই। পরিস্থিতি দেখে কয়েক বছর আগে মেদিনীপুর শহরে বৈদ্যুতিক চুল্লি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। তবে এক মাসের অভিজ্ঞতায় পর্ষদের এক কর্তার উপলব্ধি, “কলকাতা বা তার আশপাশের জেলাতেই চুল্লি তৈরি হলে সুবিধে। মেদিনীপুরের মতো শহরে নয়। এমন শহরে চুল্লি হলে এই পরিস্থিতিই হবে। বিদ্যুতের বিল মেটাতে হিমসিম খেতে হবে।” তিনি মানছেন, “এমন ক্ষেত্রে ভর্তুকি দিতেই হয়। তবে তার পরিমাণ কিছুটা কম হলে ভাল। না হলে দায়িত্বপ্রাপ্ত সংস্থা ক্ষতিগ্রস্ত হবে।”
চুল্লির জন্য যে ট্রান্সফরমার বসানো হয়েছে, সেখানে ১৮০ কেভি লোড রয়েছে। শুরুতে বিদ্যুৎ দফতরকে ১৮০ কেভি লোডের ব্যবস্থা করতেই বলা হয়েছিল। তবে পরিস্থিতি দেখে এখন এই লোড কমিয়ে ১২৬ কেভি করার তোড়জোড় শুরু হয়েছে। লোড কমিয়ে ১২৬ কেভি করার অনুরোধ করেই বিদ্যুৎ দফতরকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ দফতরের মেদিনীপুর জোনাল ম্যানেজার কথায়, “এমকেডিএ’র সমস্যার কথা বুঝতে পারছি। এ ক্ষেত্রে সবদিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত পদক্ষেপ করা হবে। প্রয়োজনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গেও কথা বলব।” |
|
|
|
|
|