দক্ষিণ দিনাজপুরের তাঁতশিল্প সংকটে |
দক্ষিণ দিনাজপুরের ক্ষুদ্র কুটির শিল্প বলতে তাঁতশিল্প অন্যতম। জেলার হস্তচালিত তাঁতশিল্প বহু প্রাচীন এবং জেলার বেশিরভাগ তাঁত কারখানাগুলি গঙ্গারামপুরে অবস্থিত। চোরাচালানের জন্য তাঁতশিল্প সংকটের সম্মুখীন। বাংলাদেশ থেকে চোরাপথে যন্ত্রচালিত তাঁতের শাড়ি এই জেলাতে চলে আসায় গঙ্গারামপুরের হস্তচালিত তাঁতশিল্প ও শিল্পীরা চরম সংকটে পড়েছেন। দক্ষিণ দিনাজপুর হস্তচালিত তাঁত সুরক্ষা সমিতির অভিযোগ, গঙ্গারামপুরের প্রায় ৩০ হাজার তাঁতশিল্পী আজ কর্মহীন হয়ে পড়েছেন এবং তাঁরা জেলার এই প্রাচীন শিল্পকে বাঁচাতে পুলিশ ও প্রশাসনের কাছে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের আরজি জানিয়েছেন। অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে যন্ত্রচালিত তাঁতের শাড়ি এ পারে বাজারে আসায় এখানকার হস্তচালিত তাঁতশিল্প মার খাচ্ছে। এটা বন্ধ হওয়া দরকার। গঙ্গারামপুরের হাজার হাজার শিল্পী বেকার হয়ে পড়বেন। এ বিষয়ে অ্যাকশন প্ল্যান তৈরির জন্য পুলিশের এনফোর্সমেন্ট ব্রাঞ্চকে ভার দেওয়া হয়েছে।
তাঁতশিল্পীরা বলেন, গঙ্গারামপুর ব্লকে ঠ্যাঙাপাড়া, বোয়ালদহ, জালালপুর, কাদিহাট ও গঙ্গারামপুরের বহু শিল্পী তাঁতের কাটাবুটি, দুই হাজার বুটি, প্লেনশাড়ি ও চেকশাড়ি প্রভৃতি তৈরি করেন। এ সবের বাজার দর ২৫০-৪৫০ টাকা। সবই হাতে তৈরি। অভিযোগ, বাংলাদেশ থেকে একই ধরনের শাড়ি সীমান্ত দিয়ে চোরাপথে বাজারে আসছে। সেই শাড়িগুলোর দাম এখানকার তৈরি শাড়িগুলোর চেয়ে অন্তত ৬০-৭০ টাকা কম। গঙ্গারামপুরে শিল্পীরা যেখানে হস্তচালিত তাঁতে দিনে দুই-তিনটে শাড়ি তৈরি করতে পারেন, সেখানে বাংলাদেশের এক জন শিল্পী দুটি যন্ত্রচালিত তাঁত দিয়ে ৭-৮টি শাড়ি তৈরি করছেন। এএখানকার তাঁতশিল্পীরা সমস্যায় পড়েছেন। তাঁতশিল্পে যুক্ত বহু মানুষ প্রত্যক্ষ-পরোক্ষ ভাবে বেকার হয়ে পড়েছেন।
তাঁত শিল্পের এই সংকটময় মুহূর্তে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্রের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। |
জয়দীপ গুহ, বালুরঘাট, দক্ষিণ দিনাজপুর। |
যক্ষ্মা নিয়ে চিন্তা, আতঙ্ক |
গত ১৪ ডিসেম্বর প্রকাশিত ‘রাজ্যে খোঁজ মিলল আট এক্সডিআর যক্ষ্মা রোগীর’ খবর পড়ে আমি এবং আমার মতো অনেকেই চিন্তিত ও আতঙ্কিত।এই রোগ থেকেই সামগ্রিক মুক্তির জন্য ভারত সরকার ১৯৬২ সালে ন্যাশনাল টিবি প্রোগ্রাম (NTP) করে। ফল আশাব্যাঞ্জক না-হওয়ায় ত্রিশ বছর পরে নতুন মোড়কে RNTCP প্রোগ্রাম নেওয়া হল W.H.O. এবং বিশ্বব্যাঙ্কের অর্থানুকূল্যে। পরে DOT পদ্ধতি এল। ছাড়াছাড়ি নেই, ‘রোগী ধর, হাসপাতালেই কফ পরীক্ষা করে ওষুধ গেলাও’এই হল DOTS।
তাও এই নৈরাশ্যজনক পরিস্থিতির উদ্ভব কেন হল? পশ্চিমবঙ্গের মাত্র দুটি হাসপাতালেই ৮ জন তা হলে, সারা গ্রামবাংলায় মোট কত? অত্যন্ত উদ্বেগের বিষয়! এরা সারবে না, অথচ Droplet infection-এর মাধ্যমে হাজারো লোককে আক্রান্ত করবে। এ পোড়া দেশে এদের isolation-এর কোনও পৃথক ব্যবস্থা নেই, যেহেতু এই রোগীগুলো গ্রাম থেকেই শহরের হাসপাতালে এসেছে। ‘পরিবর্তনের সরকার’-এর কি এক বার ভাবার সুযোগ হবে, তিন বছর পড়া, অর্ধশিক্ষিত CMS ডাক্তারগুলির উপর গ্রামীণ স্বাস্থের দায়িত্ব তুলে দেওয়া কতটা মারাত্মক হতে পারে? প্রশ্ন উঠবে, DOT-এর জন্য নিয়োজিত TB-র জীবাণু চিনতে পারবে তো? তৃতীয় বিশ্বে প্রেরিত ওষুধগুলো এবং প্রথম বিশ্বে প্রেরিত ওষুধ একই তো? |