তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত টটপাড়া-১ গ্রাম পঞ্চায়েতের রাস্তা নির্মাণের কাজে দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য শামুকতলার বিডিওকে নির্দেশ দিলেন জলপাইগুড়ির জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র। এলাকার উত্তর মজিদখানা গ্রামে ২২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে তালেশ্বরগুড়ি স্কুল থেকে ৩১-সি জাতীয় সড়ক পর্যন্ত তিন কিমি বালি পাথরের রাস্তার কাজে ব্যাপক দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অনিয়মের অভিযোগ তুলে বিডিও, জলপাইগুড়ির জেলাশাসক ও মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে লিখিত অভিযোগ জানান গ্রামবাসীরা। তাঁদের অভিযোগেই জেলা প্রশাসনের তরফে তদন্তকারী দল পাঠানো হয় এলাকায়। তদন্তে বেশ কিছু অনিয়ম ধরা পড়েছে বলে জানিয়েছেন জেলাশাসক স্মারকি মহাপাত্র। তিনি বলেন, ‘‘অনিয়ম ধরা পড়ায় বিডিওকে পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’’
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় তিন কিলোমিটার গ্রেভেল রাস্তা তৈরি করতে বরাদ্দ করা হয় প্রায় ২২ লক্ষ টাকা। কাজের বিবরণীতে হিসেব থাকলেও বাস্তবে বরাদ্দ অনুযায়ী কাজ হয়নি বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। এক নির্মাণ সহায়ক ও ঠিককাদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও জানান বাসিন্দারা। বিডিও সজল তামাং এ দিন বলেন, “দুর্নীতির অভিযোগ পেয়ে ঠিকাদারের বকেয়া না দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। জেলাশাসকের নির্দেশ মেনে খুব দ্রুত ওই পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে জরিমানা-সহ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
টটপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান শিউলি রায় বিষয়টি নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। এলাকার তৃণমুল নেতা পুলিন রায়ের অভিযোগ, “রাস্তা তৈরিতে দুর্নীতি হয়েছে। টাকা আত্মসাৎ হয়েছে বলে অনুমান। জেলাশাসক ব্যবস্থা গ্রহণ উদ্যোগী হওয়ায় আমরা খুশি।” নিজের দল পরিচালিত গ্রাম পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধেই দলের নেতারা অভিযোগ খোলায় অস্বস্তিতে তৃণমূল। তৃণমূলের ফালাকাটার বিধায়ক তথা দলের আলিপুরদুয়ার সাংগঠনিক জেলা সভাপতি অনিল অধিকারী বলেছেন, “দুর্নীতি হলে প্রশাসন ব্যবস্থা নেবে। আমাদের নেত্রীর এ নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশ আছে। এ নিয়ে দলের কে কী বলেছে জানি না। খোঁজ নিয়ে দেখছি।”
টটপাড়া ১ গ্রাম পঞ্চায়েত গত নির্বাচনে কংগ্রেস- তৃণমূল জোট বেঁধে ক্ষমতা দখল করে। পরে তৃণমূল ও সিপিএম জোট করে কংগ্রেসের প্রধানের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনে। আস্থা ভোটে কংগ্রেস হেরে যায়। এর পরে সিপিএমের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় বসে তৃণমূল। সিপিএমের টটপাড়া-১ লোকাল সম্পাদক অমল দে বলেন, “আমরাও দুর্নীতির বিরুদ্ধে। প্রসাশনের পদক্ষেপকে আমরা স্বাগত জানাচ্ছি।” |