রেলের বুকিংয়ে অব্যবস্থা ও বিশেষ কামরার অভাবে ভিন রাজ্যে পান পাঠাতে দুর্ভোগে পড়ছেন পূর্ব মেদিনীপুরের মেচেদার কয়েক লক্ষ চাষি। নালিশ সেখানকার শচীন্দ্রনাথ দত্তের।
দক্ষিণ ২৪ পরগনার সোনারপুরের বিশ্বজিৎ পুরকায়েতের আবার অভিযোগ, ভিড়ে ঠাসা ট্রেনে ছাত্রছাত্রীরা উঠতে পারে না। রেল যদি কিছু ব্যবস্থা করে। একই অভিযোগ বনগাঁ ও শিয়ালদহ মেন শাখার আরও অনেকের।
রবিবার সন্ধ্যায় চালু হল রেল প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর শিয়ালদহের ‘আমদরবার’। সেখানেই নালিশ নিয়ে এসেছিলেন শচীনবাবু, বিশ্বজিৎবাবুর মতো অনেকে। শিয়ালদহ স্টেশনের তিন তলায় প্রতিমন্ত্রীর নতুন অফিসে আট-দশ জন মানুষের কাছ থেকে রেল সংক্রান্ত অভিযোগ শুনলেন অধীরবাবু। পরে তিনি বললেন, “এখনই হয়তো কোনও সমাধান করা সম্ভব হবে না। তবে প্রত্যেকটি বিষয়ই খতিয়ে দেখে আমি ব্যবস্থা নেব।”
নাম গোপন রেখেও মন্ত্রীর কাছে অভিযোগ করেছেন অনেকে। যেমন ভিড়ের মধ্যে থেকে এক জন বলেন, “শিয়ালদহে মোটবাহকের সংখ্যা অনেক কম। যাঁরা আছেন তাঁদের অনেকেই বয়স্ক। তাই দূরপাল্লার ট্রেন ঢুকলে মাল খালাস করতে অনেক সময় লেগে যায়। নতুন কিছু মোটবাহকের ব্যবস্থা হোক।” অধীরবাবু তখনই তাঁর সচিবকে বলেন, “অত্যন্ত ভাল প্রস্তাব। এখনই ব্যবস্থা করুন।” |
শিয়ালদহের আমদরবারে সাধারণ মানুষের কথা শুনছেন রেল প্রতিমন্ত্রী অধীররঞ্জন চৌধুরী।—নিজস্ব চিত্র |
মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ বাড়ানোর জন্যই এই ‘আমদরবার’ চালু করেছেন অধীর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনেশ ত্রিবেদী বা মকুল রায়, সাম্প্রতিক কালে বাংলা থেকে অনেকেই রেলমন্ত্রী ছিলেন। কিন্তু কেউই এমন ‘আমদরবার’ খোলেননি। প্রথম দিনই যে তিনি সফল, দাবি করেন অধীর। মোটবাহক সম্পর্কিত ওই পরামর্শের পরে ভিড়ের দিকে তাকিয়ে বলেন, “সবাই পরামর্শ দিন। আমাদের কাজে লাগবে।” শেষে বলেন, “আমি নিয়মিত না থাকলেও এই অফিস চলবে। অভিযোগ থাকলে সবাই করুন।”
এ দিন দক্ষিণেশ্বর একটি র্যাম্প ও দমদম স্টেশনে দু’টি এসক্যালেটরের উদ্বোধন করেন অধীরবাবু। দক্ষিণেশ্বরে তিনি বলেন, “নববর্ষে আমরা যাত্রীদের সামান্য একটি বাড়তি পরিষেবা দিলাম। আরও অনেক কাজ হচ্ছে দক্ষিনেশ্বরে। মেট্রো আসছে। কিন্তু জমি ও জবরদখল নিয়ে সমস্যায় কাজ এগোচ্ছে না।” দমদম থেকে বরাহনগর হয়ে দক্ষিণেশ্বরের যে রাস্তা ধরে মেট্রো লাইন আসবে সেখানে প্রায় দু’কিলোমিটার এলাকা জবরদখল হয়ে রয়েছে। অধীরবাবু বলেন, “কারও জীবন-জীবিকার উপর আঘাত করতে চাই না। তবে বৃহৎ স্বার্থে আলাদা কথা।” তিনি বলেন, “কলকাতায় রাস্তার জন্য জমি কম। সেই জন্যই মেট্রোর সম্প্রসারণ প্রয়োজন।” কিন্তু এই কাজে রাজ্য সরকারের ভূমিকা সদর্থক নয় বলে ফের অভিযোগ তুলেছেন অধীরবাবু। এ দিন তিনি বলেন, “জমির দাম তো বটেই, এ রাজ্যে কাজের জন্য করও দিতে হচ্ছে রেলকে। তার পরেও নানা সমস্যায় কাজ এগোচ্ছে না। অথচ অন্যত্র রেলের কাজে রাজ্য সরকারও টাকা লগ্নি করছে।” |