আরপিজি। শিল্পজগৎ তাঁকে এই নামেই ডাকত। আরও একটা নাম ছিল তাঁর। একের পর এক শিল্প সংস্থা অধিগ্রহণের সুবাদে ‘টেকওভার স্পেশ্যালিস্ট’।
সেই রমাপ্রসাদ গোয়েন্কা রবিবার প্রয়াত হলেন। এ দিন ভোর ৬টা নাগাদ আলিপুরের বাসভবনে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন তিনি। বয়স হয়েছিল ৮৩ বছর।
কিছু দিন ধরে বাধর্ক্যজনিত কারণে অসুস্থ ছিলেন রমাপ্রসাদ। শেষ দিকে বাড়িতেই চিকিৎসা চলছিল। মুম্বই থেকে দু’দিন আগেই চলে আসেন পুত্র হর্ষবর্ধন গোয়েন্কা। অন্য ছেলে সঞ্জীব বাবার সঙ্গেই ছিলেন। তাঁর মৃত্যুর খবর ছড়ানোর পর থেকে এ দিন আলিপুরের হর্টিকালচার সোসাইটির উল্টো দিকের ‘গোয়েন্কা নিবাস’-এর বিরাট ফটক বারবার খুলেছে আর বন্ধ হয়েছে। আত্মীয়-পরিজনদের পাশাপাশি সেখানে এসে শোক জ্ঞাপন করেছেন এস কে বিড়লা-সহ শিল্পজগতের তাবড় কর্তারা। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ থাকায় নিজে আসতে পারেননি। তাঁর প্রতিনিধি হয়ে এসেছিলেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়, পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম এবং তৃণমূল সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়েন। শিল্পমন্ত্রী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, আমরা এক জন অভিভাবককে হারালাম। তবে ওঁর মতো গানওয়ালা ও বাতিওয়ালার (সঙ্গীত ও বিদ্যুৎ সংস্থার কর্ণধার হিসেবে) জীবন কখনও নিভতে পারে না।”
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য সঞ্জীবকে ফোন করে সমবেদনা জানান। দলের তরফে আলিপুরের বাসভবনে শ্রদ্ধার্ঘ্য পাঠান বামফ্রন্টের চেয়ারম্যান বিমান বসু ও প্রাক্তন শিল্পমন্ত্রী নিরুপম সেন।
বেলা সাড়ে ১০টা নাগাদ আরপিজি-র মরদেহবাহী শকট কেওড়াতলার উদ্দেশে রওনা দেয়। সওয়া ১২টা নাগাদ তাঁর শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। কেওড়াতলায় গিয়ে হর্ষ ও সঞ্জীবকে সান্ত্বনা জানান ঊষা উত্থুপ ও তৃণমূল বিধায়ক শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়। দাহকাজ শুরু হওয়ার পরে বন্ধু হর্ষ নেওটিয়াকে জড়িয়ে ধরে কান্নায় ভেঙে পড়েন সঞ্জীব।
শোকসন্তপ্ত পরিবারের পাশে ছিলেন কে কে বাঙ্গুর, সি কে ধানুকা, শিশির বাজোরিয়া, সরোজ পোদ্দার, হর্ষ নেওটিয়া, সুমিত মজুমদার, সঞ্জয় বুধিয়া, দীপক খৈতান, রাজীব কল, রাজীব ঝওয়ার, গৌরব স্বরূপ-সহ আরও অনেকেই। আজ, সোমবার পারিবারিক প্রার্থনাসভা, ‘বৈঠক’। |