মোটা ভাড়া, চাকরির টোপ
রাজ্যে শিকড় ছড়াচ্ছে ভুয়ো টাওয়ার ব্যবসা
মোবাইল টাওয়ারের ভাড়া বাবদ মোটা টাকা। সঙ্গে চাকরি। এই টোপ দিয়ে জমি ও বাড়ির মালিকদের প্রতারিত করছে কিছু ভুয়ো সংস্থা। সারা দেশে এই ভুয়ো ব্যবসার জাল ছড়াচ্ছে বেশ কিছু দিন ধরেই। কেন্দ্রীয় টেলিকম দফতরের (ডট) তদন্ত অনুযায়ী, এ বার এই ব্যবসা থাবা বসাতে শুরু করেছে এ রাজ্যেও। যে কারণে তা রুখতে ডটের পাশাপাশি কোমর বাঁধছে কলকাতা পুলিশও।
নিজেদের মোবাইল ফোনের টাওয়ার সংস্থা হিসেবে পরিচয় দিয়ে এই প্রতারণা করছে ভুয়ো সংস্থাগুলি। গোড়ায় জমি বা বাড়ির মালিকদের তারা প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে যে, টাওয়ার বসাতে দিলে মোটা ভাড়া দেওয়া হবে। মিলতে পারে চাকরিও। কিন্তু তার জন্য এক লপ্তে আগাম কিছু টাকা দিতে হবে জমি-বাড়ির মালিককে। অনেক সময় তা সরল বিশ্বাসে দিয়েও দিচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু তার পর যখন সংস্থার খোঁজ করতে যাচ্ছেন, দেখছেন তার অস্তিত্বই নেই।
উদ্বেগের বিষয় হল, অনেক সময় নিজেদের টোপের প্রচার ফলাও করে করতে সংবাদমাধ্যমে বিজ্ঞাপন দিচ্ছে সংস্থাগুলি। অনেক সময় ভুয়ো স্বীকৃতিও দিচ্ছে তারা। ফলে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন আরও বেশি মানুষ।
এ বিষয়ে ডট ও সংশ্লিষ্ট শিল্পমহলের বক্তব্য, সরকার স্বীকৃত টাওয়ার সংস্থার নির্দিষ্ট তালিকা রয়েছে। তা ছাড়া, টাওয়ার বসানোর সঙ্গে চাকরির কোনও সম্পর্কও নেই। এমনিতে নিয়ম হল, আলোচনার মাধ্যমে টাওয়ার বসানোর শর্ত ঠিক করে বাড়িওয়ালা বা জমির মালিকের সঙ্গে চুক্তি করবে সংস্থা। তার পর প্রয়োজনীয় সরকারি ছাড়পত্র পেলে টাওয়ার বসানো হবে। বিনিময়ে চুক্তিমতো প্রতি মাসে ভাড়া পাবেন তাঁরা। কিন্তু তার জন্যও বাড়ি বা জমির মালিককে কোনও ভাবেই টাকা দিতে হওয়ার কথা নয়।
সমস্যা হল, এ সব বিষয়ে সচেতনতা কম হওয়ায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই প্রয়োজনীয় তথ্য খতিয়ে দেখেন না বেশিরভাগ মানুষ। ফলে প্রতারিত হন তাঁরা।
রাজ্যে এই ভুয়ো ব্যবসার কথা জানা গেল কী ভাবে?
বিজ্ঞাপন দেখে আগ্রহীদের অনেকেই রাজ্যে টেলিকম এনফোর্সমেন্ট রিসোর্স অ্যান্ড মনিটরিং (টার্ম) সেল কিংবা ট্রাইয়ের আঞ্চলিক দফতরে খোঁজখবর নিচ্ছেন। সেই সূত্রেই এই ভুয়ো ব্যবসার হদিশ মিলেছে। টার্ম সেল (কলকাতা)-এর ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল অতনু ঘোষ জানাচ্ছেন, সম্প্রতি উত্তরপাড়ার এক বাসিন্দা এমন প্রস্তাব পান। সরকারকে কর হিসেবে দিতে হবে বলে তাঁর কাছে দুই কিস্তিতে প্রায় ৪০ হাজার টাকা চায় এক সংস্থা।
অতনুবাবুর কথায়, “প্রস্তাব শুনেই সন্দেহ হয়। ওই ব্যক্তি লিখিত অভিযোগ না-জানানোয় নিজেরাই ‘সুয়োমোটো’ তদন্ত শুরু করি আমরা। কিন্তু এমন কোনও সংস্থার হদিসই মেলেনি। সব জানিয়ে হুগলির পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছি।”
বিশ্বাস অর্জনের জন্য প্রথমে বাড়িওয়ালাকে ভাড়ার কিছু টাকা দেওয়ার পর টাওয়ার বসানোর খরচ হিসেবে ফের তাঁদের কাছেই মোটা অঙ্কের টাকা চাওয়ার নজির রয়েছে এ রাজ্যেও।
সম্প্রতি উত্তর প্রদেশেও এ ধরনের ঘটনা ঘটেছে। যা একেবারে বেআইনি। সেখানে এই জাল চক্রকে কাবু করতে বিজ্ঞাপন, এসএমএস ইত্যাদির মাধ্যমে সচেতনতা বাড়াতে চেষ্টা করছে সেখানকার টার্ম সেল। বন্ধ করছে ভুয়ো মোবাইল নম্বরও।
অতনুবাবুর দাবি, সচেতনতা বাড়াতে বিজ্ঞাপন দেওয়ার পাশাপাশি বিভিন্ন পরিকল্পনা নিচ্ছেন তাঁরা। পরামর্শ দিচ্ছেন সংস্থাটি সরকার স্বীকৃত কি না, শুরুতেই তা যাচাইয়ের। ডটের ওয়েবসাইটে সব এলাকার টার্ম সেল-এর নম্বর ও ঠিকানা রয়েছে। সেখানে অভিযোগ জানানো যায়।
কোনও রকম সন্দেহ হলে ই-মেল করা যেতে পারে devtmkol-dot@nic.in ঠিকানাতেও।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.