|
এক ঝলকে... |
পৃথিবী
৭ এপ্রিল - ১৩ এপ্রিল |
|
• দামাস্কাস • এত দিন প্রশ্ন ছিল, সিরিয়ায় গত দুই বছর ধরে বিদ্রোহী পক্ষ ও প্রেসিডেন্ট আসাদের সরকারের মধ্যে অবিশ্রান্ত রক্তাক্ত সংঘর্ষ সত্ত্বেও রাষ্ট্রপুঞ্জ কেন বিদ্রোহীদের বাঁচাতে হস্তক্ষেপ করছে না, ইত্যাদি। হঠাৎই প্রশ্নটা একশো আশি ডিগ্রি ঘুরে গেল! এখন প্রশ্ন দাঁড়িয়েছে, রাষ্ট্রপুঞ্জ সিরিয়ার সরকারের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কেন বিদ্রোহের টুঁটি টিপে ধরতে আসছে না! প্রেসিডেন্ট আসাদের তরফে রাষ্ট্রপুঞ্জের সাহায্য প্রার্থনা করা হয়েছে। এবং খবরাখবর যা, তাতে অন্যান্য দিক থেকেও রাষ্ট্রপুঞ্জের উপর বেশ চাপ: আসাদের হাত শক্ত করো!
কেন আসাদের হাত শক্ত করা দরকার? এইখানেই চমক, একশো আশি ডিগ্রি বাঁকের রহস্য। কেননা, এত দিনে নাকি সূর্যালোকের মতো স্পষ্ট ভাবে জানা গিয়েছে যে বিদ্রোহীরা আসলে আল কায়দা-র সহায়তায় আপাদমস্তক পুষ্ট! তাদের অস্ত্রশস্ত্র, খাদ্যবস্ত্র, এমনকী আদর্শ-লক্ষ্য সবই নাকি আল কায়দার থেকে পাওয়া। |
আল-নুসরা নামক একটি গোষ্ঠী নাকি কবুল করেছে যে তারাই আল কায়দা ও বিদ্রোহীদের মধ্যে সেতুবন্ধনের কাজ করছে। অর্থাৎ? অর্থাৎ এই জন্যই, কেবল এই জন্যই, এত মার খেয়েও ওরা লড়েই চলেছে, দু-দুটো বছর পার করেও এতটুকু কাবু হওয়ার নাম নেই!
বিদ্রোহের গোপন রহস্য ‘ফাঁস’ হওয়ায় প্রেসিডেন্ট আসাদ নিশ্চয়ই আহ্লাদিত! আহ্লাদ তো হবেই। আমেরিকা-ব্রিটেন-ফ্রান্স যখন বিদ্রোহীদের উপর রাষ্ট্রীয় দমননীতির প্রাবল্যে মহা বিচলিত, রাশিয়া কিন্তু শক্ত ভাবেই আসাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। আপাতত আল কায়দার মহাবাঞ্ছিত সূত্র আবিষ্কৃত হওয়ার পর দ্ব্যর্থহীন ভাষায় রাশিয়া বিশ্বকে এও বার্তা দিয়েছে যে, এখনও যদি বিদ্রোহ শায়েস্তা না হয়, অচিরেই সিরিয়া আল কায়দার ‘ডেরা’-য় পরিণত হবে! এ হেন ভয়ানক হুমকি কি অগ্রাহ্য করা যায়? করা সম্ভব? রাষ্ট্রপুঞ্জ কি পারবে, ইসলামি সন্ত্রাসের ভূমিকার কথা শুনেও স্থির থাকতে কিংবা বিদ্রোহীদের সহানুভূতির চোখে দেখতে? সুতরাং খেলার দ্বিতীয় ইনিংস শুরু। জমজমাট ভাবে শুরু।
|
• সান্তিয়াগো • ছাত্র আন্দোলনে উত্তাল চিলি। বৃহস্পতিবার রাজধানীতে লক্ষাধিক প্রতিবাদীর মিছিল। স্কুল কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের পাশে রাস্তায় নেমেছেন মাস্টারমশাইরাও। এই আন্দোলন দেশের শিক্ষা নীতির বিরুদ্ধে। সামরিক শাসক আউগুস্তো পিনোশে’র সরকার নব্বইয়ের দশকে শিক্ষায় সরকারি খরচে বিস্তর ছাঁটাই করেছিল। দেশে গণতন্ত্র ফিরেছে, শিক্ষার প্রতি সরকারের অবহেলা কমেনি। পরিণাম, শিক্ষায় অসাম্য বেড়েছে। সম্পন্ন শ্রেণির জন্য ভাল স্কুল, বাকিদের জন্য দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষা। কয়েক বছর ধরেই প্রতিবাদ চলছে। আগামী নভেম্বরে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন, সুতরাং এ বছর আন্দোলন বিপুল আকার ধারণ করেছে। সক্রিয় হয়েছে কাঁদানে গ্যাস, জলকামান ইত্যাদিও।
|
উনি কি পাগল? নাকি হদ্দ বোকা? নাকি কোনও ধান্দা আছে? নাকি উনি দেশে ফেরার পর বুঝতে পেরে গিয়েছেন, ভবিষ্যৎ বড়ই অন্ধকার, তাই যা-ইচ্ছে করে ফেলছেন?— পারভেজ মুশারফ বিষয়ে এমনই মন্তব্য পাকিস্তানি রাজনীতিকদের। প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট মুশারফ পাঁচ বছর দেশের বাইরে থাকার পর এই সবে ইসলামাবাদে ফিরেছেন আগামী নির্বাচনে লড়বেন বলে। কী ভেবে ফিরেছেন কে জানে, তবে ঘটনা হল, দেশে ফেরার পর থেকেই সময়টা ভাল যাচ্ছে না তাঁর। প্লেন থেকে নামামাত্রই ‘গো ব্যাক’ ধ্বনি, যেখানে যাচ্ছেন সেখানেই তাঁর বিরুদ্ধে জমায়েত, এমনকী আদালতে তাঁর দিকে ধেয়ে এল জুতোর পাটি! পাঁচ বছরের বিশ্রামে তিনি চাঙ্গা, তাই এক বিন্দু দমেননি মুশারফ, বরং নতুন নতুন বিতর্ক তৈরি করছেন, তাঁর দুমদাম বক্তব্যে গুঞ্জন উঠছে: ইনি কি পাগল না বোকা? সম্প্রতি তাঁর ঘোষণা, মার্কিন সরকারকে ‘কিছু ক্ষেত্রে’ ড্রোন আক্রমণের সম্মতি দিয়েছিলেন তিনি নিজেই! এত দিন অবধি পাকিস্তান সরকার (মুশারফও) বারংবার অস্বীকার করেছেন, ড্রোন-আক্রমণে পাক সরকারের কোনও ভূমিকা নেই, মার্কিন বাহিনী নিজ দায়িত্বে যা করার করেছে ইত্যাদি। এ কথা সত্যি হলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের খুবই সংকট, কেননা আন্তর্জাতিক নিয়মে, অন্য কোনও সার্বভৌম রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে তার স্বীকৃতি ছাড়া অস্ত্রক্ষেপণ ও আক্রমণ অগ্রহণযোগ্য, ‘যুদ্ধ’ বলেই তা গণ্য হবে। ওয়াশিংটন অবশ্য থেকে-থেকেই মৃদুমন্দ আপত্তি তুলছিল: যা করেছি, দ্বিপাক্ষিক ভিত্তিতেই করেছি ইত্যাদি। তবে ইসলামাবাদকে তারা ঝামেলায় ফেলতে চায় না বলে আপত্তির তীব্রতাও বাড়ায়নি। মুশারফের এই নতুন দাবির পর সব হিসেবই নতুন করে কষতে হচ্ছে। মুশারফ-পরবর্তী শাসকরাও মার্কিনদের সহায়তা দিয়ে এসেছে কি না, সে প্রশ্নও উঠবে। ভোটের আগে এ এক বিরাট হুজ্জতি, সন্দেহ নেই। এ দিকে প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনীতিকরা ভাবছেন, তা হলে কি মুশারফের বিরুদ্ধে এ বার নতুন মামলা আনা যায়? নিজের দেশের বিরুদ্ধে যুদ্ধচালনার মামলা? |