উন্নয়নের পথে কাঁটা হতে চান না তাঁরা। সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, সরে যাবেন লেক মার্কেটের মলে ঢোকার রাস্তা ছেড়ে। ওঁরা, মানে জনা কয়েক হকার। বছর দু’য়েক আগে থেকেই দক্ষিণ কলকাতার লেক মলের সামনে আস্তানা গেড়ে ব্যবসা শুরু করেন তাঁরা। যার জেরে সব কিছু প্রস্তুত থাকলেও খোলা যায়নি নব কলেবরে গড়ে ওঠা ওই আধুনিক বাজার। উন্নয়নের স্বার্থে এ বার সেখান থেকেই সরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়ে রীতিমতো নজির গড়লেন ওই হকারেরাই। মোট ৭২ জনের মধ্যে ২৫ জন হকার ইতিমধ্যেই উঠে গিয়েছেন। যার ফলে লেক মল খোলার পথ প্রশস্ত হচ্ছে বলে মনে করছেন পুরসভার কর্তারা।
কলকাতা পুরসভার নিজস্ব বাজার লেক মার্কেট। টাকার অভাবে এক সময়ে বেহাল অবস্থা হয় বাজারটির। বছর আটেক আগে পুর-প্রশাসন শহরের চারটি বাজারকে পাবলিক-প্রাইভেট মডেলে পুনর্গঠন করার সিদ্ধান্ত নেয়। এর অন্যতম ওই লেক মার্কেট। রাজ্যেরই এক চলচ্চিত্র প্রযোজক সংস্থার মালিক ওই বাজার পুর্নগঠনের কাজ শুরু করেন। মাস আটেক আগেই ওই কাজ সম্পূর্ণ হয়। কিন্তু কাজ চলাকালীন বেশ কয়েক জন হকার ওই মলে ঢোকার পথ আগলে ব্যবসা শুরু করেন। অনুরোধ করেও তাঁদের তোলা যায়নি। যার জেরে বাজার চালু করতে সমস্যা হয়। |
এক সময়ে ওই সংস্থার কর্ণধার বিষয়টি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে জানান। এর পরে রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়কে বিষয়টি দেখার নির্দেশ দেন মমতা। সুব্রতবাবু ইতিমধ্যেই মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়, বিধায়ক তথা শ্রমিক নেতা শোভনদেব চট্টোপাধ্যায়, স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা পুরসভার মেয়র পারিষদ দেবাশিস কুমারকে নিয়ে একাধিক বৈঠক করেন। সুব্রতবাবুরা জানিয়েছিলেন, ঢোকার মুখে যে সব হকারেরা বসে আছেন, তাঁদের সরাতে হবে। তবে কোনও পুনর্বাসন দিয়ে নয়। যদিও প্রাথমিক পর্যায়ে হকারেরা তাতে রাজি হননি।
পুরসভা সূত্রের খবর, ওই জায়গায় প্রায় ৭২ জন হকার ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশই তৃণমূলের, বাকিরা কংগ্রেস ও বাম-সমর্থিত। পুরসভার বাজার দফতরও তাঁদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করে। এ নিয়ে হকারদের একাংশ বাজার দফতরের মেয়র পারিষদ তারক সিংহের সঙ্গে কথাও বলেন। পুরসভা সূত্রের খবর, উন্নয়নের কথা ভেবেই তাঁরা ওই বড় বাজারের পথ আগলে থাকবেন না বলে জানিয়ে দেন। এর সঙ্গে কিছু আর্থিক সহায়তা দেওয়ার কথাও বলা হয়। এর পরেই বাজার নির্মাণকারী সংস্থা জনা পঁচিশেক হকারকে কিছু আর্থিক সাহায্য দেয়।
শনিবার ওই বাজারে গিয়ে দেখা গেল, বেশ কয়েক জন হকার সেখান থেকে উঠে গিয়েছেন। নির্মাণকারী সংস্থা ইতিমধ্যেই ওই ফাঁকা জায়গা টিন দিয়ে ঘিরে দিয়েছে। পুরসভার বাজার দফতরের এক আধিকারিক জানান, ফাঁকা জায়গা যাতে ফের দখল না হয়, তার জন্য সেখানে সৌন্দর্যায়নের কাজ করতে চায় সংস্থাটি। এ নিয়ে একটি প্রকল্পও পুরসভাকে দেবে তারা। |