ইস্পাতের রড তৈরির কারখানায় চুল্লি বিস্ফোরণে ঠিকা শ্রমিকদের মৃত্যুর পরে গঙ্গাজলঘাটি এলাকার কারখানাগুলির প্রযুক্তিগত দিক খতিয়ে দেখার দাবি তুলল বিজেপি। এই দাবিতে শুক্রবার বিজেপি গঙ্গাজলঘাটির বিডিওকে স্মারকলিপি দিল। অন্য দিকে, দুর্ঘটনার ৯ দিন পরে বৃহস্পতিবার ওই কারখানা চালু হলেও এখনও ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়নি বলে মৃত ঠিকা শ্রমিকদের পরিবারের অভিযোগ।
গঙ্গাজলঘাটি ব্লকের নিধিরামপুরের ওই কারখানায় গত ৩ এপ্রিল চুল্লিতে বিস্ফোরণ ঘটে। ছিটকে আসা গলিত লোহায় ঝলসে যান ১০ জন শ্রমিক। পরে ৪ জন শ্রমিকের মৃত্যু হয়। কারখানার শ্রমিকদের একাংশ অভিযোগ তোলেন, কারখানায় তিনটি চুল্লি থাকলেও এক নাগাড়ে তা জ্বালানো হয়। সে কারণে দুর্ঘটনা ঘটেছে। এমনকী দুর্ঘটনার পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ গা ঢাকা দেন। পুলিশ সূত্রের খবর, স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের সঙ্গে কারখানা কর্তৃপক্ষ বৈঠক করে মৃত শ্রমিকদের পরিবারকে সাত লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ ও পরিবার পিছু এক জনকে চাকরি দেওয়ার আশ্বাস দেয়।
বিজেপি-র জেলা সাধারণ সম্পাদক অজয় ঘটক বলেন, “ওই সাত লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ হিসেবে যথেষ্ট নয়। ভবিষ্যতে এই ধরনের ঘটনা এড়াতে এলাকায় থাকা কারখানাগুলির প্রযুক্তিগত দিক জেলাপ্রশাসনের খতিয়ে দেখা উচিত।” গঙ্গাজলঘাটির বিডিও উর্মি দে বিশ্বাস বলেন, “বিজেপি-র দাবিগুলি খতিয়ে দেখা হবে। দুর্গাপুরের ফ্যাক্টরি ইন্সপেক্টরকে ওই কারখানার নিরাপত্তা ব্যবস্থা খতিয়ে দেখতে বলা হয়েছে। তাদের রিপোর্ট পেলেই ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
দুর্ঘটনার পরে এলাকার কয়েক জন বাসিন্দা কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে পুলিশ কারখানা কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অনিচ্ছাকৃত খুনের অভিযোগ আনে। কিন্তু এ দিন পর্যন্ত ওই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি। এ দিকে ক্ষতিপূরণের টাকা হাতে না পাওয়ায় মৃত শ্রমিকদের পরিবারেও ক্ষোভ দেখা দিয়েছে। দুর্ঘটনায় মৃত গঙ্গাজলঘাটি থানার রাজারামপুরের বাসিন্দা সন্তোষ মাঝির দাদা পরিতোষ মাঝির অভিযোগ, “কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের আশ্বাস দিলেও এখনও ক্ষতিপূরণের সাত লক্ষ টাকা দেয়নি।” জেলা তৃণমূলের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক তথা গঙ্গাজলঘাটির আইএনটিটিইউসি নেতা নিমাই মাজি বলেন, “ক্ষতিপূরণ দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে কারখানা কর্তৃপক্ষ আমাদের জানিয়েছেন। তিন কিস্তিতে ওই টাকা দেওয়ার কথা।” এ দিন বার বার চেষ্টা করেও কারখানা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথা বলা যায়নি।
|