বসত আর রেশন দোকানের মাঝে বিভেদ তৈরি করে দিয়েছে মুকুটমণিপুর জলাধার।
জলাধার পেরিয়ে রেশন আনতে তাই দুর্ভোগে পড়েছেন বাঁকুড়া জেলার রানিবাঁধ থানার নারকলি, বনপুকুরিয়া, গোপালপুর, কুসুমখুন্দি, ঠুরকুডি, বারুনিয়া প্রভৃতি গ্রামের হাজার দুয়েক বাসিন্দা। সরকারি নথিতে ওই গ্রামগুলি বাঁকুড়া জেলায় অন্তর্ভূক্ত হলেও ভৌগোলিক ভাবে ওই গ্রামগুলির বাসিন্দাদের পুরুলিয়া জেলার মানবাজারের সঙ্গেই বেশি যোগাযোগ। বাসিন্দাদের দাবি, নৌকোয় করে মুকুটমণিপুর জলাধার পেরিয়ে রানিবাঁধের বাজারে তাঁদের যাতায়াত করতে হয়। মূলত নৌকোর উপর নির্ভরশীলতার কারণে ব্লক সদর রানিবাঁধ যাতায়াতেই তাদের দিন কাবার হয়ে যায়। সে তুলনায় মানবাজার সদরে তাঁদের যাতায়াত সহজ। কিন্তু ওই গ্রামগুলির জন্য রেশন দোকান হয়েছে জলাধারের অন্য পাড়ে ধানাড়া গ্রামে। তাতেই বিপত্তিতে পড়েছেন ওই এলাকার বাসিন্দারা।
বাঁকুড়া জেলা খাদ্য ও সরবরাহ দফতর সূত্রের খবর, নারকলি গ্রামে আগে একজন রেশন ডিলার ছিলেন। কিন্তু কিছু সমস্যার জন্য তাঁকে বাতিল করে ওই এলাকায় রেশন দেওয়ার দায়িত্ব দেওয়া হয় ধানাড়া গ্রামের এক রেশন ডিলারকে। স্থানীয় বাসিন্দা সুভাষ পাল, অনিল পরামানিক, দুর্যোধন পালরা বলেন, “খাদ্য দফতর রেশন ডিলার পরিবর্তন করতেই পারেন। কিন্তু জলাধারের অন্য পাড়ে ধানাড়ায় রেশন দোকান হওয়ায় আমরা বেশ সমস্যায় পড়ে গিয়েছি। রেশন আনার জন্য নৌকোয় যাতায়াত করতে সারা দিন কেটে যায়। সে দিনের রোজগারও বন্ধ থাকে।” ওই গ্রামগুলি রানিবাঁধের পুড্ডি পঞ্চায়েতের অধীন। বাসিন্দারা জানান, ধানাড়া গ্রামে পঞ্চায়েত অফিস থেকে এক বৃদ্ধা কিছু খাদ্য শস্য সাহায্য আনতে গিয়ে রাস্তাতেই মারা যান। সামনেই গ্রীষ্মকাল। তাই ধানাড়ায় রেশন আনতে যাওয়া নিয়ে বাসিন্দারা বেশ আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন।
বাসিন্দাদের আরও অভিযোগ, রেশন প্রাপকদের বেশির ভাগই বিপিএল তালিকাভুক্ত। রেশন আনতে তাঁদের নৌকোয় জলাধার পেরিয়ে ফের ভুটভুটি রিকশা করে ধানাড়া যেতে হয়। একই ভাবে ফিরতে হয়। তাঁদের কাছে যাতায়াতের এই খরচও বেশ বোঝা হয়ে উঠেছে। বাসিন্দাদের তাই দাবি, জলাধারের এ পাড়ে ফের রেশন দোকান চালুর ব্যপারে প্রশাসন নজর দিক। খাদ্য ও সরবরাহ দফতরের রানিবাঁধ ব্লকের খাদ্য পরিদর্শক সুব্রত দাস বলেন, “গ্রাহকদের সমস্যার কথা জানি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানিয়েছি। সেখান থেকে নির্দেশ পেলে পরবর্তী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |