দু’পক্ষেরই সুর কিছুটা নরম হলেও রাজ্যপাল-সিপিএমের দ্বৈরথ অব্যাহত।
রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের মন্তব্য নিয়ে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের দ্বারস্থ হয়েছিলেন সিপিএমের সাধারণ সম্পাদক প্রকাশ কারাট। পাল্টা বিবৃতি এসেছিল রাজভবন থেকেও। শুক্রবার প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ে এক অনুষ্ঠানে গিয়ে প্রশ্নের জবাবে রাজ্যপাল বলেন, “আমি গণতন্ত্র তুলে ধরতে চাইছি। চাইলে প্রকাশ কারাট রাষ্ট্রপতির কাছে আমার বিরুদ্ধে অভিযোগ জানাতেই পারেন। সকলেরই বাক্ স্বাধীনতা রয়েছে।”
রাজ্যপাল এ কথা বলার আধ ঘণ্টার মধ্যেই আলিমুদ্দিনে সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক বিমান বসু বলেন, “রাজ্যপালের কাজ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা দেখা। তিনি ঠিকঠাক কাজ করার জন্য রাজ্য সরকারকে উপদেশ দিতে পারেন। কিন্তু কোনও রাজনৈতিক দলকে নির্দেশ দিতে পারেন না।” রাজ্যপাল কোনও রাজনৈতিক দলের ‘এক্স অফিশিও অ্যাডভাইসার’ নন, এই মন্তব্য করে বিমানবাবু বলেন, “রাজ্যপালের কথায় কিন্তু সেই রকমই মনে হয়েছে।”
রাজ্যপাল এক জন প্রাক্তন আইপিএস অফিসার, তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে বিমানবাবু বলেন, “আমার অনেক বন্ধু আছেন, যাঁরা প্রাক্তন পুলিশ অফিসার। রাজ্যপালের মতো তাঁরাও অনেক পড়াশোনা করেছেন। কমিউনিজম সম্পর্কে পড়েছেন। তার পর পুলিশ অফিসার হয়েছেন। কিন্তু তাঁরা কোনও কমিউনিস্ট পার্টিকে উপদেশ দিতে যান না।” বিমানবাবুর দাবি, তিনি রাজ্যপালের পাণ্ডিত্য নিয়ে কোনও প্রশ্ন তোলেননি। কোনও রাজনৈতিক দলের কর্তব্য নিয়ে রাজ্যপালের মন্তব্য করার এক্তিয়ার সম্পর্কে প্রশ্ন তুলেছিলেন।
রাজ্যপাল বৃহস্পতিবারই প্রেস বিবৃতির মাধ্যমে বিমানবাবুর কথার জবাব দিয়েছিলেন। এ দিনও যে তিনি তাঁর মন্তব্যে অনড়, তা বুঝিয়ে দিতেই রাজ্যপাল বলেছেন, “সকলেরই বাক্ স্বাধীনতা রয়েছে। এটা তো অন্তত মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি রড ব্যবহার করার থেকে ভাল!” যদিও বিমানবাবু কটাক্ষ করে বলেছেন, “দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রী আহত হননি। কলকাতায় এসে ট্রমাজনিত কারণে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন।” বিমানবাবুর আরও মন্তব্য, “রাজ্য সরকার যাতে ঠিকঠাক কাজকর্ম করে, সে ব্যাপারে রাজ্যপাল উপদেশ দিলে ভাল হয়।”
|
মাছ চাষ বাড়াতে টাস্ক ফোর্স |
কয়েক মাস ধরেই রাজ্যে মাছ চাষ বাড়ানোর কথা বলে আসছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মাছের উৎপাদন বাড়াতে অবশেষে তাঁর নির্দেশে একটি টাস্ক ফোর্স গড়া হল। তার সদস্য করা হয়েছে বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত, কৃষিমন্ত্রী মলয় ঘটক, মৎস্যমন্ত্রী চন্দ্রনাথ সিংহ, সেচমন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় এবং জলসম্পদ মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রকে। শুক্রবার মহাকরণে তাঁদের প্রথম বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, কৃষি ও সেচ দফতরের অধীনে পুকুর-সহ যে-সব জলাভূমি রয়েছে, সেখানে মাছ চাষ করা হবে। দায়িত্ব দেওয়া হবে মৎস্য দফতরকেই। সেচমন্ত্রী জানান, মাছ চাষ বাড়াতে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, সেই বিষয়ে খুব শীঘ্রই রিপোর্ট তৈরি করে মুখ্যমন্ত্রীকে দেওয়া হবে। টাস্ক ফোর্স গড়া হবে প্রতিটি জেলায়। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম নিয়ন্ত্রণের জন্য মুখ্যমন্ত্রী কিছু দিন আগে একটি টাস্ক ফোর্স গঠন করেছিলেন। তারা বাজারদর নিয়ে নিয়মিত রিপোর্ট দেয় মুখ্যমন্ত্রীকে। তার পরে মাছের বিষয়টি দেখতে গড়া হল পৃথক টাস্ক ফোর্স। |