|
|
|
|
|
|
|
পুস্তক পরিচয় ২... |
|
অর্ধশতাব্দী পেরিয়ে নবকলেবর |
বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদের অন্যতম প্রধান সংগঠক রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী বাংলা সাহিত্যজগতে এখনও অনেকটাই অবহেলিত। পরিষৎ তাঁর জন্মশতবর্ষে প্রকাশ করেছিল রামেন্দ্র রচনা সংগ্রহ। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় অনিলকুমার কাঞ্জিলাল সম্পাদকীয় ভূমিকায় জানান, ‘রামেন্দ্রসুন্দর ছিলেন বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক, কিন্তু সর্বোপরি তিনি ছিলেন শিল্পী। স্বীয় রচনাতে তিনি এই তিন রূপেই আত্মপ্রকাশ করিয়াছেন। বৈজ্ঞানিক-দার্শনিকের রাগমুক্ত বুদ্ধির উত্তাপহীন দীপ্তি এবং শিল্পীর সুমিত সৌন্দর্য্যবোধ— sweetness and light— রামেন্দ্রসুন্দরের রচনাতে যুগপৎ এই দুইয়েরই সমাবেশ ঘটিয়াছে।’ সম্প্রতি বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ রামেন্দ্র রচনা সংগ্রহ-এর সার্ধশতজন্মবার্ষিকী-সংস্করণ (৭৫০.০০) প্রকাশ করল। পূর্ববর্তী সংস্করণের সমস্তটুকু ছাড়া বর্তমান সংস্করণে রামেন্দ্রসুন্দরের নানা বয়সের আলোকচিত্র যোগ করা হয়েছে। শেষ প্রচ্ছদে রয়েছে পুলিনকৃষ্ণ কুণ্ডু অঙ্কিত রামেন্দ্রসুন্দরের পূর্ণাবয়ব প্রতিকৃতির প্রতিলিপি। সংযোজিত হয়েছে অশোক উপাধ্যায়-কৃত রচনাপঞ্জি। আর আছে তাঁর দু’টি আত্মজৈবনিক রচনা, তাঁর পঞ্চাশতম জন্মদিনে পরিষৎ কর্ত্তৃক সম্মাননার প্রতিবেদন এবং সে উপলক্ষে প্রচারিত ‘রামেন্দ্র-মঙ্গল’ পুস্তিকাটি। তাতে শুরুতেই তাঁর সম্পর্কে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী লিখছেন ‘তুমি সে সকল পদই ত্যাগ করিয়া দরিদ্র-মণ্ডিত অধ্যাপনা ও মাতৃভাষার সেবাই জীবনের ব্রত করিয়াছ...।’
নবীনচন্দ্র সেনের আত্মকথা আমার জীবন (প্রথম প্রকাশ ৫ খণ্ড ১৯০৮-’১৩) উনিশ শতকের অন্যান্য মনীষার বিখ্যাত আত্মজীবনীগুলির তুলনায়, সম্পাদক সজনীকান্ত দাসের মতে, ‘‘আয়তনে বৃহত্তর এবং বিষয়বৈচিত্র্যে সমৃদ্ধতর।... বহু স্থানের আচার-আচরণ-ধর্মসম্প্রদায়-পূজাপদ্ধতি সম্পর্কে ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতাপ্রসূত অতি সুন্দর ও বিশদ বর্ণনা তিনি দিয়াছেন।... বাংলাদেশের সামাজিক চিত্র নবীনচন্দ্র যে ভাবে অঙ্কিত করিয়াছেন বিশেষ করিয়া ‘চট্টগ্রামের দলাদলির কথা’— এমনটি আর কেহ করেন নাই।” নবীনচন্দ্র রচনাবলী-র প্রথম তিনটি খণ্ডে রয়্যাল সাইজে ১৬০০ পাতায় আমার জীবন সম্পূর্ণ। অর্ধশতক পেরিয়ে প্রকাশিত হল নতুন সংস্করণ (বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, তিন খণ্ড মোট ১৫৫০.০০)। ‘‘ভারতচন্দ্রের ‘অন্নদামঙ্গল’ কাব্য মুদ্রণ করিয়াই বাংলা দেশে বাঙালীর পুস্তক-প্রকাশ ব্যবসায় আরম্ভ হয়; ১৮১৬ খ্রীষ্টাব্দে গঙ্গাকিশোর ভট্টাচার্য ইহার একটি চমৎকার সচিত্র সংস্করণ বাহির করিয়া ‘পাবলিশিং বিজনেস’ আরম্ভ করেন; ...গোটা ঊনবিংশ শতাব্দী ধরিয়া বাংলা দেশে অন্য কোনও বাংলা পুস্তক এত অধিক প্রচারিত এবং পঠিত হয় নাই।” (ভারতচন্দ্র গ্রন্থাবলী-র ভূমিকা)। পরিষৎ থেকেই প্রথম প্রকাশের প্রায় সত্তর বছর পর নতুন সংস্করণে হাতে এল ভারতচন্দ্র গ্রন্থাবলী (সম্পা. ব্রজেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় ও সজনীকান্ত দাস, ৪০০.০০)। গঙ্গাকিশোরের বইটির সব কটি ছবির সঙ্গে ১৮৩৫-এর অন্য একটি দুর্লভ সংস্করণের একটি ছবিও এখানে সংযোজিত হয়েছে। |
|
|
|
|
|