গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র জল সঙ্কটে ভুগতে শুরু করেছে দক্ষিণ ২৪ পরগনার সুন্দরবনের বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ। বহু জায়গাতেই খারাপ হয়ে পড়ে আছে পানীয় জলের নলকূপ। ফলে ওই সব এলাকার মানুষকে পানীয় জল আনতে যেতে হচ্ছে দূরের কোনও গ্রামে। পানীয় জলের এ সমস্যার জন্য ওই সব এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগের আঙুল তুলেছেন পঞ্চায়েত ও প্রশাসনের দিকে। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবার গরমে এই সমস্যা দেখা দিলেও সমস্যা মেটাতে প্রশাসন একেবারেই উদ্যোগী হয়নি।
বাসন্তীর গদখালির বাসিন্দা কল্যাণ ভুঁইয়া বলেন, “মসজিদবাটি ও গদখালি গ্রামের কয়েক হাজার মানুষ পানীয় জলের সমস্যায় পড়েছেন। গ্রামে কোনও নলকূপ নেই। ৩-৪ কিলোমিটার দূর থেকে রিকশায় অথবা হেঁটে জল আনতে হচ্ছে। পঞ্চায়েত-প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।”
ক্যানিং মহকুমার শহর এলাকা ছাড়াও বাসন্তী-গোসাবার বিস্তীর্ণ এলাকার মানুষ জলের সমস্যায় নাজেহাল। শহর এলাকায় পাইপ লাইনের মাধ্যমে জল সরবরাহ করা হলেও অনেক ক্ষেত্রেই তা সময় মত পাওয়া যাচ্ছে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের। ক্যানিং, বাসন্তী, গোসাবার কিছু এলাকায় জরুরি ভিত্তিতে গভীর নলকূপ বসানো হলেও সেগুলিরও বেশিরভাগই অকেজো হয়ে গিয়েছে। বাসন্তীর ভরতগড় এলাকার বাসিন্দা সালালউদ্দিন মল্লিক বলেন, “এলাকার ১৪৭টি নলকূপের মধ্যে ৫০টি অকেজো। যে কটি ঠিক আচতে তার মধ্যে বেশ কিছু নলকূপে নোনা জল উঠছে যা পানের অযোগ্য।”
গোসাবা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নারায়ণ চন্দ্র মণ্ডল বলেন, “গোসাবায় পানীয় জলের সঙ্কট রয়েছে। পাইপ লাইনের মাধ্যমে নিয়মিত জল সরবরাহ হয় না। জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরে জানিয়েও কোনও লাভ হচ্ছে না।” জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের বাস্তুকার প্রদীপ রুদ্র বলেন, “গোসাবা ব্লকে দুটি পাম্পিং স্টেশন থেকে জল সরবরাহ করা হয়। কিন্তু গরমের জলের চাহিদা বাড়ায় অনেক সময় নলকূপগুলি হয়ে পড়ছে। ফলে জল সরবরাহে সমস্যা হচ্ছে।”
মহকুমা শেখর সেন বলেন, “মহকুমা এলাকার বিভিন্ন জায়গায় জলের সমস্যা রয়েছে। যার অন্যতম কারণ গরমে জলস্তর নেমে যাওয়া। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলে বিভিন্ন এলাকায় পর্যায়ক্রমে গভীর নলকূপ বসিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে।” |