দোকান উচ্ছেদের উদ্যোগ, হেনস্থা পুরপ্রধানকে
বেআইনি দোকান-ঘর উচ্ছেদ করতে গিয়ে হেনস্থা হলেন বহরমপুরের পুরপ্রধান নীলরতন আঢ্য।
দোকানপাটে ভর্তি শহরের একটি রাস্তা সম্প্রসারণে উদ্যোগী হয়েছে বহরমপুর পুরসভা। শুক্রবার সকালে শহরের ৭ নম্বর ওয়ার্ডের মোহনের মোড় থেকে গোরাবাজার রাজামিঞা মোড় পর্যন্ত ওই প্রায় সোয়া এক কিলোমিটার রাস্তার দু’ধারের অবৈধ দোকান ঘর উচ্ছেদ অভিযান চালায় পুরসভা। তার আগে অবশ্য গত সাত দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে মাইকে প্রচার চালানো হয় বলেও পুরসভার দাবি। সেই মতো এদিন উচ্ছেদ করতে গেলে তৃণমূলের লোকজন বাধা দেয় বলে অভিযোগ। পুরপ্রধান-সহ বেশ কয়েক জন কাউন্সিলর হেনস্থা হন বলেও অভিযোগ। খবর পেয়ে বহরমপুর থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
বহরমপুরে উত্তেজনা
সকাল সাড়ে ন’টা। শুরু হল উচ্ছেদ। বেলা ১০টা ১০। পুরপ্রধানকে ঘিরে বিক্ষোভ।
পুরপ্রধান বলেন, “তৃণমূলের মদতে পুষ্ট একশ্রেণির সমাজবিরোধী উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করে। তৃণমূলের লোকজনও সেখানে উপস্থিত ছিল। দুজন কাউন্সিলর আক্রান্ত হন। পুরকর্মীদের মারধর করা হয়। গাড়ি ভাঙচুর চালানো হয়। আমাকেও হেনস্থা করা হয়। সময় মত পুলিশ এলাকায় পৌঁছে যাওয়ায় পরিস্থিতি বড় আকার নেয়নি।” পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে লাঠি উঁচিয়ে মারমুখী জনতাকে এলাকা থেকে সরিয়ে দেয়।
উত্তেজনা ছড়ানোর অভিযোগে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিন জনকে আটক করে থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ জানায়, পরে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়। জেলা পুলিশ সুপার হুমায়ুন কবীর বলেন, “বহরমপুর পুরসভার উচ্ছেদ অভিযানকে ঘিরে এদিন গোরাবাজার এলাকায় ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে পরিস্থিতি আয়ত্তে আনে। ওই ঘটনায় পুরপ্রধান একটি লিখিত অভিযোগ জমা দেন। অভিযোগ পেয়ে পুলিশ তদন্ত করছে।” তবে ওই ঘটনায় এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
১১টা ৬। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশের লাঠি।
পুলিশ ও পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, মোহনের মোড় থেকে নিমতলা মোড় পর্যন্ত রেজাউল করিম সরণি এবং নিমতলা মোড় থেকে গোরাবাজার রাজা মিঞা মোড় পর্যন্ত আবদুস সামাদ রোড বরাবর রাস্তার দু’ধারে প্রায় ৫০-৬০টি অবৈধ দোকান ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা ফেঁদেছেন কিছু ব্যবসায়ী। পুরপ্রধান বলেন, “ওই দোকান ঘরগুলি অধিকাংশই বড় নালার উপরে নির্মিত। তাই সকাল থেকে রাত পর্যন্ত যাবতীয় নোংরা-আবর্জনা ফেলায় জলনিকাশি ব্যবস্থা যেমন ভেঙে পড়েছে, তেমনই ওই ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলিকে ঘিরে সমাজবিরোধীদের আড্ডাও তৈরি হয়েছে। এলাকার মহিলারা নিরাপত্তার অভাব বোধ করছিলেন। সেই সঙ্গে অসামাজিক কাজকর্মেরও অভিযোগ রয়েছে।” তিনি বলেন, “গোটা বিষয়টি জানিয়ে পদক্ষেপ করার লিখিত আবেদন করেন স্থানীয় বাসিন্দারা। এর পরেই ‘বোর্ড অফ কাউন্সিল’-এর বৈঠকে সিদ্ধান্ত নিয়ে অবৈধ নির্মাণ উচ্ছেদ অভিযান চালায় পুরসভা। তার আগে গত সাত দিন ধরে ধারাবাহিক ভাবে মাইকে প্রচার চালানো হয়।”
বিকেল সাড়ে ৪টে। তৃণমূলের মিছিল।
যদিও এদিন উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে পুরকর্মীদের স্থানীয় ব্যবসায়ীদের বাধার মুখে পড়তে হয়।
ওই ঘটনার প্রতিবাদে তৃণমূল এদিন বিকেলে গোরাবাজার এলাকায় মিছিল বের করে। বহরমপুর শহর তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি নবকুমার পাল বলেন, “ওই এলাকায় কেউ কেউ ৩০-৪০ বছর ধরে ব্যবসা করছেন। তাঁদের সঙ্গে আলোচনার মাধ্যমে সুষ্ঠু সমাধানের পথ খোঁজা উচিত ছিল পুরসভার। সেই সঙ্গে পুনর্বাসনের জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গড়ে না তুলে এ ভাবে উচ্ছেদের আমরা বিরোধী। এদিন উচ্ছেদের সময়ে ব্যবসায়ীদের কয়েক হাজার টাকার ব্যবসা-সামগ্রী নষ্ট হয়েছে। তাঁদের ক্ষতিপূরণের বন্দোবস্ত করতে হবে পুরসভাকে।”

বহরমপুরে গণ্ডগোল
মোহনের মোড় থেকে গোরাবাজার মোড় পর্যন্ত রাস্তায় উচ্ছেদ অভিযান।
এই রাস্তা জুড়ে অজস্র দোকানপাট।
নিকাশি নালার উপরে দোকান।
সমাজবিরোধীদের আড্ডা তৈরি হয়েছে বলে অভিযোগ।
পুরসভার দাবি, সাত দিন ধরে মাইকে প্রচারের পরেও দোকান সরানো হয়নি।
দুই কাউন্সিলর আক্রান্ত।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.