আপনি যাদের অপরাধী বলেছেন, তারা প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয়ের গেটের তালা ভেঙে ঢুকে পড়ল, হামলা চালাল। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যাচ্ছে তৃণমূলের লোকেরাই ছিল। অথচ তৃণমূল বলছে, তারা এই ঘটনায় জড়িত নয়!
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন হল, হামলাকারীরা ঢুকতে পারল কী করে? এই ধরনের ঘটনা প্রায়ই ঘটছে। দিল্লিতে মুখ্যমন্ত্রীর উপর হামলা হয়েছে। ওই ঘটনায় যাঁরা অভিযুক্ত, তাঁরাও দায় এড়িয়ে যাচ্ছেন। এটা এক ধরনের অভ্যাসে দাঁড়িয়ে যাচ্ছে। এমন আর ঘটবে না, এটা নিশ্চিত করাই প্রধান দায়িত্ব। আমি আশ্বাস দিচ্ছি, ছাত্রছাত্রীরা এখানে লেখাপড়ার পরিবেশ পাবেন। আমি পুলিশের সঙ্গে বসব।
প্রেসিডেন্সির এক ছাত্রের বিরুদ্ধে পাল্টা মারধর এবং ইট ছোড়ার অভিযোগ দায়ের হয়েছে। এটা তো একটা মিথ্যা মামলা।
মিথ্যা মামলা মিথ্যা মামলাই। তাতে আস্কারা দেওয়া উচিত নয়। প্রেসিডেন্সির ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে যদি এমন আচরণ করা হয়, তা হলে এ জিনিস কোথায় গিয়ে পৌঁছবে, বলা যাচ্ছে না। বিশ্ববিদ্যালয়কেই নিশ্চিত করতে হবে যাতে এই ধরনের ঘটনা আর না ঘটে। আর, ছাত্রছাত্রীদের কাছে আমার আবেদন, এই ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ান।
পুলিশি নিষ্ক্রিয়তা নিয়ে আপনি কী বলবেন?
পরিস্থিতি একেবারে চরমে না-পৌঁছলে কর্তৃপক্ষ পুলিশ ডাকতে চান না। কিন্তু তত ক্ষণে ক্ষতি যা হওয়ার তা হয়ে যায়। গুন্ডারা এটা জানে। তারা সেই সুযোগটা নেয়।
|
উপাচার্য আমাদের সঙ্গে মিছিলে হাঁটায় প্রশ্ন উঠেছে। তাঁর ইতিহাস-ভূগোল নিয়েও খোঁজখবর নেওয়ার দাবি উঠছে।
আপনারা এক জন অসাধারণ উপাচার্য পেয়েছেন। ওঁর যোগ্যতা, দায়িত্ববোধ সম্পর্কে আমার ধারণা আছে। যাঁরা কিছু করেন না, তাঁরা ব্যক্তিকে আক্রমণ করেন। আমি নিজে প্রায় ৬০ বছর ‘পাবলিক ফিগার’ থেকেছি। তাই জানি, এই ধরনের পদে থেকে প্রশংসা পাওয়া যায় না, বরং আক্রান্ত হতে হয়। যাঁরা এটা করেন, তাঁরা আসলে ইতিহাসকেই ধ্বংস করেন। আমার মনে হয়, উপাচার্য ঠিকই করেছেন।
কোথাও কিছু হলেই সরকার ক্ষতিপূরণের কথা বলে। বেকার ল্যাবরেটরি, যেখানে প্রশান্তচন্দ্র মহলানবিশ, সত্যেন্দ্রনাথ বসুর মতো মহান ব্যক্তিত্ব কাজ করেছেন, টাকা দিয়ে তার ক্ষতি মেটানো যাবে কি? ঘটনার দিন পুলিশ কিছু করল না। অথচ এখন তারা অতিসক্রিয় হয়ে উঠেছে।
গবেষণাগারের যে ক্ষতি হয়েছে, তা টাকা দিয়ে মেটানো যায় না। তবে প্রেসিডেন্সি ক্যাম্পাসে আরও পুলিশ থাকা উচিত। কিছু ছাত্র মনে করেন, বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পুলিশ থাকলে তা ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করবে। কিন্তু তাঁরা বোঝেন না যে, এই ধরনের হামলা ঠেকানোর জন্য পুলিশ থাকাটা অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে সে দিন পুলিশ থেকেও কিছু করেনি। আপনার কী মনে হয়, পুলিশ সব সময় সরকারের দিকে তাকিয়ে কাজ করে?
আমি একমত। প্রশাসনের বিভিন্ন অঙ্গকে সরকার নিজের সুবিধামতো চালনা করে। কিন্তু প্রশাসনের উপর কিছুটা আস্থা না রাখলে গণতন্ত্রই তো ব্যর্থ হয়ে যাবে। তবে পুলিশের কাজের মান আরও বাড়ানো উচিত। |