বাঁকুড়ায় দলীয় সভা সেরে কলকাতায় ‘ব্যাক’ করার সময় তৃণমূলের ‘গো-ব্যাক’ স্লোগান শুনতে হল বিরোধী দলনেতা সূর্যকান্ত মিশ্রকে। যা শুনে সূর্যকান্তবাবুর কটাক্ষ, “আমি তো তখন ফিরেই যাচ্ছি! যখন বাঁকুড়ার যাচ্ছিলাম, তখন এটা বললে না হয় মানে হত! তবে পুলিশ ছিল। গাড়িতে যাঁরা ছিলেন, তাঁদের কিছু হয়নি।”
বৃহস্পতিবার দুপুরে রানিবাঁধের ঝিলিমিলিতে সভা ছিল সূর্যবাবুর। সভা সেরে বাঁকুড়া শহরের দিকে যাওয়ার পথে সন্ধ্যার মুখে খাতড়া শহরের পাম্পমোড়ে কয়েকশো তৃণমূল কর্মী-সমর্থক দলীয় ও কালো পতাকা হাতে সূর্যবাবুর গাড়ি আটকান। নেতৃত্বে ছিলেন জেলা তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক শ্যামল সরকার। ‘সূর্যকান্ত মিশ্র গো ব্যাক, দূর হটো’ বলে তৃণমূলের কর্মীরা স্লোগান দিতে থাকেন। কয়েক মিনিট ধরে চলে এই বিক্ষোভ। রাস্তার পাশে এবং সূর্যবাবুর কনভয়ে থাকা পুলিশ কর্মীরা বিক্ষোভকারীদের সরাতে গেলে দু’তরফে কিছুটা ধস্তাধস্তি হয়। কোনও রকমে বিক্ষোভকারীদের সরিয়ে বিরোধী দলনেতার গাড়ি পার করিয়ে দেয় পুলিশ। এ দিন রানিবাঁধ থেকে ঝিলিমিলি যাওয়ার রাস্তার দু’ধারে সিপিএমের পতাকার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তৃণমূলের পতাকা, ফেস্টুন এবং ‘সূর্যকান্ত মিশ্র গো-ব্যাক’ লেখা পোস্টার দেখা গিয়েছে। |
সূর্যবাবু পরে বলেন, “আমি তখন খাতড়া এসডিও অফিসের কাছাকাছি। তৃণমূলের কর্মী-সমর্থকেরা আমার গাড়ি আটকে গো-ব্যাক স্লোগান দিতে শুরু করল। গাড়ির উপরে চড়-ঘুষিও মেরেছে।”
নিরাপত্তার অভাব বোধ করছেন কি না, এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “ওরা আমাদের এক হাজার পার্টি অফিস পুড়িয়ে দিয়েছে। সাধারণ মানুষের নিরাপত্তাই এখানে নেই।” সিপিএমের বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক অমিয় পাত্রের টিপ্পনী, “ক’দিন ধরে তৃণমূলের লোকেরা যা করছে, তাতে এটা কিছুটা হলেও ভদ্র মনে হচ্ছে!” বিক্ষোভের নেতৃত্বে থাকা শ্যামলবাবুর পাল্টা মন্তব্য, “দিল্লিতে সিপিএম-এসএফআই যে ন্যক্কারজনক কাণ্ড ঘটিয়েছে, তারই প্রতিবাদে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধী দলনেতার গাড়ি আটকে বিক্ষোভ দেখিয়েছি। আমরা তো ওঁদের মতো মানুষ খুন করে পুঁতে দিচ্ছি না!”
গত ২০ মার্চ ঝিলিমিলির রাওতোড়ায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সভা করেছিলেন। সেখান থেকে প্রায় চার কিলোমিটার দূরে ঝিলিমিলির ফুটবল মাঠে এ দিন সভা করে সিপিএম। সূর্যবাবুর সভার ভিড় অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীর সভার ভিড়ের ধারেকাছে ছিল না।
জেলা সিপিএমের দাবি, মাঠে ১৫ হাজার মানুষ ভিড় করেছিলেন। পুলিশের দাবি, খুব বেশি হলে হাজার তিনেক লোক হয়েছিল। জেলার রানিবাঁধ, রাইপুর, খাতড়ার সঙ্গে পুরুলিয়ার বান্দোয়ান, পশ্চিম মেদিনীপুরের বেলপাহাড়ি থেকেও বাসে, ট্রেকারে করে লোকজনকে সভা ভরাতে নিয়ে আসা হয়েছিল। |