সূচকের পারা কিছুটা উপরের দিকে উঠলেও বাজারের হাল ফেরার সম্ভাবনা দেখছেন না বিশেষজ্ঞরা। টানা পাঁচ দিন পড়ার পর গত বুধবার থেকে শেয়ার বাজার কিছুটা ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। বৃহস্পতিবার সেনসেক্স ফের বেড়েছে ১২৭.৭৫ অঙ্ক। এই নিয়ে গত দু’দিনে সূচকের উত্থান হল ৩১৫.৭২ পয়েন্ট। আজ শিল্পোত্পাদন ও মূল্যবৃদ্ধির পরিসংখ্যান প্রকাশিত হওয়ার কথা। তা ইতিবাচক হবে, এই আশায় ভর করেও এ দিন সূচক বেড়েছে।
তবে সূচক উঠলেও এটাকে বাজারের হাল ফেরা বলে মনে করছেন না বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অধিকাংশই। দীর্ঘ দিন ধরে পতন হওয়ার ফলে বাজার এখন অনেকটাই নিচুতে। পড়তি বাজারে শেয়ার কেনার জেরেই সূচকের পারা কিছুটা উপরের দিকে উঠে এসেছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। পাশাপাশি এই উত্থান কতটা স্থায়ী হবে, তা নিয়েও তাঁদের মনে যথেষ্ট সংশয় রয়েছে।
ফিনশোর ইনভেস্টমেন্ট সার্ভিসেসের ম্যানেজিং ডিরেক্টর লক্ষ্মণ শ্রীনিবাসন বলেন, “বর্তমানে খুচরো লগ্নিকারীরা বাজারে নেই বললেই চলে। আর্থিক সংস্থাগুলি শেয়ার কিনে বাজারকে ধরে রেখেছে। তবে ওই সব সংস্থার শেয়ার কেনার পরিমাণও গত তিন মাস ধরে অনেকটাই কমে গিয়েছে। বাজার আপাতত এই রকমই থাকবে বলে আমার ধারণা।”
ভারতের শেয়ার বাজার তেজী হওয়ার মূলে যে বিদেশি লগ্নিকারী সংস্থার বিনিয়োগ থাকে, তাও কমে গিয়েছে দ্রুত। সংবাদ সংস্থা পিটিআইয়ের খবর, ওই সব বিদেশি সংস্থা গত বুধবার ভারতের বাজারে বিনিয়োগ করেছে ৪০ কোটি টাকার মতো। সাধারণত তারা যে- পরিমাণ টাকা শেয়ারে দৈনিক বিনিয়োগ করে, তার তুলনায় এটা খুবই সামান্য বলে বাজার সূত্রের খবর।
বাজারের উত্থানের পিছনে বিদেশের শেয়ার সূচকগুলির চাঙ্গা হওয়ার প্রভাব রয়েছে বলে কোনও কোনও বিশেষজ্ঞ মনে করছেন। এ দিন এশিয়ার অধিকাংশ শেয়ার সূচকের মুখই উপরের দিকে ছিল। পাশাপাশি বেড়েছে ইউরোপের শেয়ার বাজারগুলি।
ভারতের আর্থিক ব্যবস্থাকে চাঙ্গা করতে জাপান সরকার ত্রাণ প্রকল্পগুলি চালিয়ে যাবে, এই খবরে উত্সাহিত হয় এশিয়ার শেয়ার বাজারগুলি। চিনের শেয়ার সূচক অবশ্য পড়েছে। তাদের ঋণের পরিমাণ লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গিয়েছে বলে খবর। এরই বিরূপ প্রভাব পড়েছে চিনের শেয়ার সূচকের উপর।
ভারতের বাজার কবে স্থিতিশীল হবে, তা কোনও বিশেষজ্ঞই হলফ করে বলতে পারছেন না। বিশেষ করে রাজনৈতিক অস্থিরতাকেই শেয়ার বাজারের হাল খারাপ হওয়ার প্রধান কারণ বলে ব্যাখ্যা করছেন তাঁরা। কেন্দ্রে সরকারের স্থায়িত্বের মুখে প্রশ্নচিহ্ন ঝুলে থাকার জন্যই অর্থনীতি গতি পাচ্ছে না বলে ধারণা তাঁদের।
এই অবস্থায় ক্ষুদ্র লগ্নিকারীদের আপাতত শেয়ার বাজার থেকে দূরে থাকতে পরামর্শ দিয়েছেন শ্রীনিবাসন। |