শত্রু নিধনে গ্যাস চেম্বার থেকে শুরু করে হরেক অভিনব পন্থার ব্যবহার করতে দেখা গিয়েছিল হিটলার-বাহিনীকে। সম্প্রতি জানা গেল, সেই তালিকায় তারা ব্যবহার করতে চেয়েছিল সূর্যকেও। সে জন্য অবশ্য তারা ধার করেছিল আর্কিমিডিসের বুদ্ধি। সূর্যকে বন্দুক হিসেবে ব্যবহার করে শত্রুদের ছারখার করার কথা ভেবেছিল নাৎসি বাহিনী। শুনলে মনে হতে পারে কোনও বন্ড ছবির খলনায়কি বুদ্ধি। তবে এমনটাই নাকি বাস্তবে ভেবেছিল হিটলার বাহিনী। আর তাদের এমনটা ভাবতে সাহায্য করেছিলেন হেরমান ওবার্থ নামের এক বিজ্ঞানী। ১৯৪৫ সালের একটি জার্মান পত্রিকা থেকে সম্প্রতি এই কথা জানতে পেরেছে মার্কিন সেনাবাহিনীর প্রযুক্তিবিদেরা।
জার্মানির রকেট প্রযুক্তির উন্নতির পিছনে এই অস্ট্রিয়-হাঙ্গেরীয় বংশোদ্ভূত বিজ্ঞানীর অবদান অনেকখানিই। ছোটবেলায় হয়তো পদার্থবিজ্ঞানের প্রথম পাঠ পড়ে আতস কাচ ব্যবহার করে সূর্যের আলোয় কাগজ পুড়িয়েছেন অনেকেই। তবে হেরমান ওবার্থের মাথায় প্রথম এসেছিল পৃথিবী এবং সূর্যের মাঝখানে আতস কাচের মতো একটি বিশালাকার কাচ যদি রাখা যায়, তা হলে বিশ্বের যে কোনও জায়গায় ইচ্ছে মতো সূর্যরশ্মি একই পরিমাণে পাঠানো যাবে।
১৯৪৫ সালের ওই পত্রিকাটি থেকে জানা গিয়েছে, কয়েক লক্ষ মার্ক খরচ করে ১৫ বছরের মধ্যে এমন একটি কাচ পৃথিবী থেকে ২২,২৩৬ মাইল দূরে তৈরি করার কথা ভেবেছিল নাৎসি বাহিনী। এর জন্য রীতিমতো পরিকল্পনাও শুরু করে দিয়েছিল নাৎসিরা।
সেই পরিকল্পনার মধ্যে ছিল, একটি মানুষ পরিচালিত মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র। যেখানে থাকবে ৩০ ফুট চওড়া একটা পাটাতন। পৃথিবী থেকে কোনও রকেট গিয়ে সেখানে দাঁড়াতে পারবে। সেখানে গড়ে তোলা হবে কৃত্রিম বাগান। তার থেকে অক্সিজেনের জোগান দেওয়া হবে গবেষণা কেন্দ্রের কর্মীদের। বাকি কাজকর্ম সব চলবে সৌরশক্তিতে।
তবে এত পরিকল্পনা কোনও জনহিতকর উদ্দেশ্যে নয়। নাৎসিরা ভেবেছিল আর্কিমিডিসের মতো। ওই কাচ ব্যবহার করে শত্রু দেশের শহর পুড়িয়ে ছারখার করে দেওয়া যেতে পারে চোখের নিমেষে। এমনকী সমুদ্রের যে কোনও অংশের জল ফুটিয়ে চালানো যেতে পারে নাশকতা।
নাৎসি বাহিনীর এই প্রস্তাব খুশি মনেই মেনে নিয়েছিলেন হেরমান ওবার্থ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের পর সেই অস্ত্র নির্মাণের পরিকল্পনা আর বাস্তবের দিকে এগোয়নি। তবে ১৯৫৭ সাল পর্যন্ত ওবার্থ মনে করতেন, তাঁর সূর্য-বন্দুক এক দিন বাস্তব রূপ নেবেই। আর সেটিই হবে চরম হাতিয়ার। |