গরমের শুরুতেই দিনহাটা পুরসভার বিস্তীর্ণ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা চরম আকার নিয়েছে। এর মধ্যে একটি পাম্প হাউস বিকল হয়ে পড়ায় শহরের ৫টি ওয়ার্ডে জলের সমস্যা মারাত্মক আকার নিয়েছে। বাধ্য হয়ে বাসিন্দাদের পানীয় জল কিনতে হচ্ছে। ২ এপ্রিল থেকে মহরম মাঠ এলাকার পাম্পহাউস বিকল পড়ে। তার পরেই শহরের ৭, ৮, ৯, ১২ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। স্ট্যান্ডপোস্ট তো বটেই বাড়ির জল সংযোগে জল মিলছে না। গোধূলি বাজার এলাকায় অন্য পাম্প হাউসটিও মাঝেমধ্যে বিকল হয়ে পড়ায় এলাকার বাসিন্দাদের দুর্ভোগে পড়তে হচ্ছে।
দিনহাটা পুরসভা চেয়ারম্যান চন্দন ঘোষ সমস্যার কথা স্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, “জল সরবরাহ ব্যবস্থা চাঙা করতে গোপাল মন্দির ও পুরভবন লাগোয়া এলাকায় নতুন দুটি পাম্প হাউস তৈরি হচ্ছে। তার মধ্যে মহরম মাঠ এলাকার অচল পাম্প হাউসটির বিকল্প হিসাবে গোপাল মন্দির এলাকার পাম্প হাউসটি বিদ্যুৎ সংযোগ পেলেই চালু হবে। এতে সমস্যা মিটবে।”
দিনহাটা পুর এলাকার ১৫ ওয়ার্ডে পানীয় জল সরবরাহে ৫টি পাম্প হাউস রয়েছে। গোধূলিবাজার-সহ ফুলদিঘি, পিএইচই অফিস, মহরম মাঠ, এসডিও বাংলো লাগোয়া এলাকার ওই পাম্প হাউসগুলি রয়েছে। গোধূলিবাজার ও মহরম মাঠ এলাকার পাম্পহাউস দু’টির অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বাসিন্দাদের অভিযোগ, পুরসভা রক্ষণাবেক্ষণ ঠিক মতো না করা সমস্যা দেখা দিয়েছে। ১০ কিমি পাইপ বসানো হয়নি। নতুন পাম্প চালুর আগে এক হাজার বাড়িতে সংযোগ দেওয়ায় জলের চাপ কমে গিয়ে সমস্যা আরও বেড়ে গিয়েছে।
শহরের গোপালনগর, ঝুড়িপাড়া, গোসানিরোড, স্টেশন পাড়া, বাবুপাড়া থেকে শিক্ষকপল্লি এলাকা তো বটেই থানা পাড়া রঙপুর রোড কলেজপাড়া স্টেশন রোডে বিস্তীর্ণ এলাকায় সমস্যা বেশি হচ্ছে। দিনহাটা নাগরিক উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক জয়গোপাল ভৌমিক বলেন, “পানীয় জল নিয়ে ভোগান্তি গোটা জুড়ে। তার ওপর বাড়ির সংযোগ দেওয়া হচ্ছে না। এ সব নিয়ে এ বার আন্দোলন শুরু করার কথা ভাবতে হচ্ছে।” দিনহাটা মহকুমা ব্যবসায়ী সমিতি সম্পাদক রানা গোস্বামী বলেন, “গরমের শুরুতে সঙ্কট এতটা বেড়েছে। গরমে সমস্যা বাড়বে বলে মনে হচ্ছে।” পুরসভার চেয়ারম্যান বলেন, “এপ্রিল থেকে বাড়ির সংযোগের আবেদন জমা নেওয়া স্থগিত রাখা হয়েছে। নতুন দু’টি পাম্প হাউস চালু সহ কিছু পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজের পরিকল্পনা হয়েছে।”
পুরসভার প্রাক্তন কাউন্সিলর তথা তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা অসীম নন্দী বলেছেন, “পুরসভা জল কর নিলেও পরিষেবা বলে কিছু নেই। আমরা আর কিছু দিন দেখব। কাজ না হলে পুরসভা ঘেরাও করে বিক্ষোভ দেখানো হবে।” পুরসভা সূত্রে খবর জলকর বাবদ প্রতি মাসে মাসে বিপিএল তালিকাভুক্তদের থেকে ৩০ টাকা ও এপিএল বাসিন্দাদের থেকে ৫০ টাকা নেয় পুর কর্তৃপক্ষ। |