দু’মাস আন্দোলন করবে না মোর্চা
কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী জয়রাম রমেশের পরামর্শ মেনে আগামী দুই মাস পাহাড়ে কোনও আন্দোলনে যাবে না গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। মঙ্গলবার সুকনায় জমায়েত করে ‘কালা দিবস’ পালন করে মোর্চা। সেখানে আন্দোলনে না যাওয়ার কথা ঘোষণা করেন মোর্চার সাধারণ সম্পাদক রোশন গিরি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য বিনয় তামাং। রোশন গিরি বলেন, “জয়রাম রমেশের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ হয়েছে। তাঁর কথা মেনেই আমরা আপাতত আন্দোলনে না যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমরা ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের দাবি জানিয়েছি। কেন্দ্রীয় সরকার সে ব্যপারে উদ্যোগী হওয়ার আশ্বাস দিয়েছে। যে করেই হোক পাহাড়ের উন্নয়ন দরকার।” বিনয় তামাং বলেন, “আগামী দু’মাস কোনও আন্দোলন করব না। দলের সাংগঠনিক কাজ চলবে।” ৭ এপ্রিল দার্জিলিংয়ে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রী। সে সময় তিনি গোর্খা টেরিটোরিয়াল অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের প্রধান তথা মোর্চা সভাপতি বিমল গুরুঙ্গের সঙ্গে বৈঠকে করে তাদের আন্দোলনে না গিয়ে উন্নয়নের পথে চলার পরামর্শ দেন। গুরুঙ্গরা চেয়েছিলেন উন্নয়নের ব্যপারে আর্থিক সাহায্য সরাসরি কেন্দ্রীয় সরকার জিটিএ’র হাতে তুলে দিক। কিন্তু ত্রিপাক্ষিক চুক্তি মেনে তা যে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ সম্ভব নয়। সে কথাও স্পষ্ট করে দেন জয়রাম। রাজ্য সরকারের মাধ্যমেই জিটিএ’তে আর্থিক সাহায্য পৌঁছবে বলে জানিয়ে দেন তিনি। এই সমস্যার সমাধান করতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের ব্যাপারে আশ্বাস দেন তিনি। জিটিএ’র চেয়ারম্যান রমেশ আলে বলেন, “আমরা পাহাড়ে উন্নয়ন করতে চাইছি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সেদিকে বেশি নজর দিতে বলেছেন। কিন্তু জিটিএ’ চুক্তি অনুযায়ী সব সহযোগিতা আমরা পাচ্ছি না। তিনি ফের ত্রিপাক্ষিক বৈঠকের আশ্বাস দেওয়ায় আমরা আশাবাদী।”
মোর্চার মিছিল। —নিজস্ব চিত্র।
এই পরিস্থিতিতে, রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করলেও নতুন করে আর কোনও বিরোধে চাইছে না মোর্চা নেতৃত্ব। এদিন জনসভায় তাদের বক্তব্যে সে কথা স্পষ্ট হয়ে গিয়েছে। তারা আন্দোলনে না যাওয়ার কথা ঘোষণা করে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সে বার্তা দিতে চেয়েছেন। তবে সময়সীমা বেধে দিয়ে শাসক দলের উপরে চাপও তৈরি করে রেখেছেন তারা। পাশাপাশি, তৃণমূল ও জিএনএলএফ পাহাড়ে তাদের যে রাজনৈতিক কার্যকলাপ শুরু করেছে, তার পাল্টা হিসেবে সুকনাতে এদিন সভা করে নিজেদের শক্তি প্রদর্শন করেন।
বিনয় তামাং দুই দলকেই কটাক্ষ করে বলেন, “মোর্চা যাদের নানা অপরাধমূলক কাজ ও দুর্নীতির জন্য বহিস্কার করছে তাদের তৃণমূল দলে টানছে। এটা অনেকটা পুরসভার ডাস্টবিনের ময়লা কুড়োনার মতো। আর জিএনএলএফের মিটিংয়ে যে লোককে দেখা যাচ্ছে তারাই আবার তৃণমূলের মিটিংয়ে দেখা যাচ্ছে। তাদের কাজকর্ম হাস্যকর ব্যপার। মুকুল রায়ের কালিম্পংয়ের মিটিং আমি দেখেছি। ৪০০ লোক হয়েছিল। বেশির ভাগ সমতল থেকে নিয়ে গিয়েছিল তারা।” তিনি জানান, পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিন ঘোষণা হলে ডুয়ার্স ও তরাইয়ে তারা প্রচারে নামবেন।
মোর্চা নেতৃত্ব জানান, ২০০৮ সালের ৯ এপ্রিল গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে ভূতপূর্ব সৈনিক মোর্চার একটি মিছিল সুকনা থেকে শিলিগুড়ির দিকে যাচ্ছিল। সেই সময় দার্জিলিং মোড়ের কাছে ওই মিছিলের উপরে পুলিশি লাঠিচার্জ করে বলে তাঁদের অভিযোগ। তাতে, বেশ কয়েকজন জখম হন। ওই ঘটনার প্রতিবাদে এদিন কালা দিবস পালন করেন তারা। ভূতপূর্ব সৈনিক মোর্চার ডাকা জমায়েতেই এদিন যোগ দেন মোর্চা নেতারা। এদিনও মিছিল নিয়ে তারা শিলিগুড়ির দার্জিলিং মোড়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। পঞ্চনই সেতুতে পুলিশ তাদের আটকে দলে দু’পক্ষের মধ্যে বচসা হয়। পরে অবশ্য মোর্চা নেতৃত্বের একটি দল মাল্লাগুড়িতে গিয়ে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার আনন্দ কুমারকে স্মারকলিপি দেন।
ভূতপূর্ব সৈনিক মোর্চার সভাপতি কর্নেল আলে বলেন, “ওই সময় বিনা কারণে পুলিশ প্রাক্তন সৈনিকদের মারধর করে। বিষয়টি নিয়ে একজনের একটি কমিশন গঠন করা হলেও তার কোনও রায় বেরোয়নি। আমরা অভিযুক্ত পুলিশ কর্মীদের শাস্তির দাবি করছি। সে জন্যই এদিন কালা দিবস পালন করা হয়।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.