কলকাতায় এসে পশ্চিমবঙ্গ বিজেপি-র দুর্বল দলীয় সংগঠনকে চাঙ্গা হওয়ার দাওয়াই দিয়ে গেলেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদরদাস মোদী। যে রাজ্যের বিধানসভা বিজেপি-শূন্য, সেখানকার দলীয় কর্মীদের প্রতি গুজরাতের প্রশাসনিক প্রধানের নববর্ষের শুভেচ্ছা “আসন্ন নববর্ষ থেকে পরের নববর্ষ পর্যন্ত আপনারা এত শক্তি এবং জনসমর্থন অর্জন করুন, আপনাদের পরিশ্রমের এত ফল পান, যাতে লোকে মন দিয়ে আপনাদের কথা শুনতে বাধ্য হয়।”
রাজ্য বিজেপি-র কর্মীদের প্রতি মোদীর আরও আশ্বাস, “আপনারা অবশ্যই এক দিন পরিশ্রমের মূল্য পাবেন। এমন দিন আসবে, যখন বাংলার নাগরিকরা অন্য দলের প্রতি বীতশ্রদ্ধ হয়ে আপনাদের দিকে আসবে।”
মঙ্গলবার কলকাতা সফরে মোদীর অন্যতম কর্মসূচি ছিল মহাজাতি সদনে রাজ্য বিজেপি-র বিশেষ কর্মী সম্মেলনে বক্তৃতা করা। সেই বক্তৃতার শুরুতে মোদী বলেন, “আমার সৌভাগ্য যে, গুরুদেব, সুভাষবাবুর স্মৃতি বিজড়িত এই ভবনে আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি।” |
খপ্পরে: মোদী-বিরোধী শিবকে ধরেছে পুলিশ। এসপ্ল্যানেডে। —নিজস্ব চিত্র |
মোদী জানান, একটা সময়ে দলের কর্মী হিসাবে তাঁর দায়িত্ব ছিল, রাজ্য ও দেশে সংগঠনের বিস্তার ঘটানো। সে জন্য তাঁকে অনেক সময়ে গুজরাতের বাইরে অন্যান্য রাজ্যেও ঘুরে বেড়াতে হত। এখন মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে তাঁকে অনেক বেশি সময় গুজরাতেই দিতে হয়। কিন্তু এখনও সে রাজ্যে কখনও কখনও তিনি কর্মী সম্মেলন করেন। মোদীর বক্তব্য, “গুজরাতে দলের কার্যকর্তা সম্মেলনে আমি বলি, রাজনৈতিক প্রতিস্পর্ধীর সঙ্গে শত্রুর মতো ব্যবহার ঠিক নয়। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় সব দলেরই সমান অধিকার থাকে। অন্য রাজনৈতিক দল আমাদের কর্মীদের সম্মান দেয় না। কিন্তু আমরা তা করি না।”
রাজ্য বিজেপি-র একাংশের দাবি, মোদীর ওই বক্তব্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রতি ‘বার্তা’। মোদী অবশ্য বক্তৃতায় এক বারও মমতার নাম করেননি। কিন্তু দলের রাজ্য নেতৃত্বের একাংশের ব্যাখ্যা, মোদীর সভার জন্য নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম না দিয়ে মমতা যে ‘শত্রুতামূলক আচরণ’ করেছেন, তার জবাবেই ওই কথা বলেছেন গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী।
এ রাজ্যে আন্দোলনের স্বার্থে বিজেপি- কে যে অবস্থান নিতে হয়, সেই বাধ্যবাধকতা থেকেই মোদীকে ওই কথা বলতে হয়েছে। বিজেপি-র অভিযোগ, ইন্ডোর কর্তৃপক্ষ প্রথমে তাঁদের জানিয়েছিলেন, ৯ এপ্রিল স্টেডিয়াম ফাঁকা আছে। কিন্তু পরে তাদের বিপরীত কথা বলা হয়। মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি লিখে আর্জি জানানো সত্ত্বেও লাভ হয়নি। যদিও এ দিন নেতাজি ইন্ডোরে কারও কোনও কর্মসূচি দেখা যায়নি।
অন্য দিকে, মহাজাতি সদনে স্থানাভাবে বহু বিজেপি কর্মী হলের বাইরে দাঁড়িয়ে থেকেছেন। এ নিয়ে সরকারকে কটাক্ষ করেন বিজেপি-র রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ। চন্দন মিত্র, সিদ্ধার্থনাথ সিংহ, তথাগত রায় প্রমুখ ওই সভায় বক্তৃতা করেন। নিহত সুদীপ্ত গুপ্তের স্মরণসভার জন্য এসএফআই আগামী ১৩ বা ১৭ এপ্রিল নেতাজি ইন্ডোর ভাড়া করার চেষ্টা করেছিল। সরকার তাদেরও ওই হল ভাড়া দেয়নি বলে সিপিএমের অভিযোগ। |