|
|
|
|
|
এত সাদামাঠা ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি দেখিনি
সুব্রত ভট্টাচার্য
ম্যান সিটি-২ (মিলনার, আগুয়েরো)
ম্যান ইউ-১ (কম্পানি-নিজ গোল) |
|
ম্যাঞ্চেস্টার সিটি-র ইতালীয় কোচ মানচিনি এই সম্মানের ম্যাচটা জিতেও ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডের কুড়িতম ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগ খেতাব হয়তো আটকাতে পারবেন না। তবে ম্যান ইউ অধীশ্বর ফার্গুসনকে বোধহয় একটা সত্য বুঝিয়ে দিতে পেরেছেন সোমবার রাতের ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে। সেট টিম ছাড়া, একঝাঁক নতুন ছেলে নিয়ে বড় ম্যাচ জেতা স্যর অ্যালেক্সের পক্ষেও দুঃসাধ্য!
রয় কিন, বেকহ্যাম, নিস্তেলরুই, আওয়েন, রোনাল্ডোবিভিন্ন আমলে ফার্গুসনের ম্যান ইউয়ে একটা সেট টিম ছিল। সেখানে এ বারের ইউরোপিয়ান মরসুমে রাফায়েল, জোন্স, ইয়ং, ওয়েলবেক, কাগাওয়া, এমনকী ফান পার্সি (যতই আর্সেনালে নায়ক থাক, ফার্গুসনের খেলার পদ্ধতিতে তো নতুন)এক গাদা নতুন মুখ ম্যান ইউতে। যার জন্য ইপিএল বাদে আর সব টুর্নামেন্টের খেতাব-দৌড়ে ফার্গুসনের দল ছিটকে পড়েছে। অনেকে প্রশ্ন তুলতে পারেন, তা হলে ইপিএলে ১৫ পয়েন্টে এগিয়ে রয়েছে কী ভাবে ম্যান ইউ? আমার উত্তর, এ বার ইংলিশ লিগে সান্ডারল্যান্ড, কিউপিআর-এর মতো ছোট দল-সমেত সব টিমে এত গড়পড়তা বিদেশি ফুটবলারের ভিড়, খেলার গুণগত মান আগের চেয়ে অনেক পড়ে গিয়েছে। আর্সেনালের ২৯ ফুটবলারের মধ্যে ২৩ জনই বিদেশি। এফএ সব টিমকে এমনও বার্তা দিতে বাধ্য হয়েছে, বিদেশির সংখ্যা কমিয়ে নিজেদের অ্যাকাডেমি থেকে ইংলিশ ফুটবলার সিনিয়র দলে খেলাও। এই পরিস্থিতিতে ফার্গুসনের বিদেশিরা অপেক্ষাকৃত উঁচুমানের হওয়ায় ম্যান ইউ ঘরোয়া লিগে পয়েন্ট টেবিলে অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। এটা তেমন বড় ব্যাপার নয়। |
|
লাল নয়। ওল্ড ট্র্যাফোর্ডের রং আকাশি। ছবি: এএফপি। |
বরং অনেক বড় হল, এ মরসুমে ফার্গুসনের দলের বড় ম্যাচ জেতার অক্ষমতা। শেষ আট দিনের মধ্যে এফএ কাপে চেলসি আর ইপিএলে ম্যাঞ্চেস্টার সিটির কাছে হারল ম্যান ইউ। ওদের সেট টিম না থাকার আর একটা সমস্যা প্রকটখেলা সে ভাবে দাঁনা বাঁধতে পারছে না। সিটি-ও যে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে আহামরি খেলেছে বলতে পারছি না। গত মরসুমে তেভেজ-আগুয়েরোরা ফার্গুসনের মাঠে আধ ডজন গোল দিয়ে গিয়েছিল ম্যান ইউকে। সেই দাপটের ধারেকাছে গত রাতে ছিল না মানচিনির দল।
দু’টো দলই প্রচুর মিস পাস করেছে। ম্যাচে দু’দল মিলিয়ে আট জন হলুদ কার্ড দেখায় বলা হচ্ছে, এটা মাথা গরমের ম্যাচ। কিন্তু আমি বলব, ফুটবলারদের অদক্ষতাই এর কারণ। টিভিতে দু’দলের খেলাতেই দেখলাম, ডিফেন্সের সময় বল কন্ট্রোলের বাইরে বেরিয়ে গেলেই স্লাইডিং ট্যাকল করতে গিয়ে ফাউল করে ফেলছে দু’দলের প্লেয়ারই। কার্ড তো হবেই। ইউরোপিয়ান ফুটবলের একটা ডার্বি! তা সত্ত্বেও সব মিলিয়ে দুই ম্যাঞ্চেস্টারের খেলার মান মোটেই তেমন উচুমানে ওঠেনি। এতটা সাদামাঠা ম্যাচ রিয়াল বা বাসের্লোনা খেলছে ভাবাই যায় না। |
|
ফার্গুসন নয়। মানচিনির দিন। |
তার পরেও ম্যাচে তিনটে গোল হল। তার মধ্যে দু’টোই বড় ভুলে। গিগসের অকারণ ব্যাক হিল মিলনারের ম্যান সিটিকে হাফটাইমের পর পরই ১-০ এগিয়ে দেওয়ার মূল উৎস। ম্যান ইউয়ের সমতায় ফেরাও জোন্সের হেড বিপক্ষ ক্যাপ্টেন কম্পানির গায়ে লেগে আচমকা দিক পাল্টে আত্মঘাতী গোলের কল্যাণে। বরং পরিবর্ত নেমে আগুয়েরোর প্রচণ্ড গতিতে প্রচুর জায়গা কভার করে দুর্দান্ত শটে জয়ের গোলটা অনবদ্য। ওই গতিটার অভাবেই বাকি সময় ম্যাচটা ভুগেছে। আগুয়েরোর গোলের সময়ই যা মনে হল ম্যাঞ্চেস্টার ডার্বি দেখছি! |
|
|
|
|
|