রাঁচি পুর নির্বাচন
মেয়র ভোটের গণনা স্থগিত, ফেরার খালকো
রাঁচির পুরসভা নির্বাচনে মেয়র পদের ভোট গণনা আপাতত স্থগিত রাখল নির্বাচন কমিশন। সোমবার পুরভোট হয়েছে। বৃহস্পতিবার রাঁচি নগর নিগমের পঞ্চান্নটি ওয়ার্ডের ভোটের ফল প্রকাশের কথা। একই সঙ্গে ওই দিনই মেয়র পদেরও ভোট গণনা হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কংগ্রেসের মেয়র পদ-প্রার্থী রমা খালকোর বিরুদ্ধে টাকা দিয়ে ভোটারদের প্রভাবিত করার চেষ্টার অভিযোগ ওঠায় আজ দুপুরে রাজ্য নির্বাচন কমিশনার এস ডি শর্মা গণনা আপাতত স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, “পুলিশ, আয়কর বিভাগ সকলের কাছেই তদন্ত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে। তাদের কাছ থেকে রিপোর্ট পাওয়ার পরেই পরবর্তী সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”
রবিবার দুপুরে রাঁচির সার্কুলার রোডের একটি হোটেল থেকে ২২ লক্ষ টাকা ভর্তি দু’টি ব্যাগ উদ্ধার করে পুলিশ। তার আগেই মেয়র পদপ্রার্থী রমা খালকো-সহ কংগ্রেসের অন্যান্য নেতারা ওই হোটেলেই গোপন বৈঠক করেন। পুলিশ জানতে পারে, রমার তরফ থেকেই ভোটারদের প্রভাবিত করতে টাকা বিলি করার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। রবিবার রাতেই তাঁর বিরুদ্ধে পুলিশ একটি এফআইআর দায়ের করে।
সোমবার সকালে ভোট দিলেও সন্ধ্যার পর থেকে প্রাক্তন মেয়রকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। পুলিশ তাঁর সন্ধানে অভিযান চালাচ্ছে। রমার বিরুদ্ধে আজ ঝাড়খণ্ডের নিম্ন আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছে। ওই ঘটনায় রাঁচির জেলা কংগ্রেসের সহ-সভাপতি নিরঞ্জন শর্মা ও তাঁর ব্যক্তিগত সচিব সুধীর সাহুকে ইতিমধ্যেই পুলিশ গ্রেফতার করেছে। ঘটনার সময় ওই হোটেলে হাজির ছিলেন কংগ্রেস নেতা সুনীল সহায়। তিনি প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী তথা রাঁচির কংগ্রেস সাংসদ সুবোধকান্ত সহায়ের ছোট ভাই। তাঁকেও পুলিশ জেরা করবে।
এ দিকে, আজই দিওয়ান ইন্দ্রনীল সিংহ ও সুশীল ওঁরাও নামে দুই ব্যক্তি ঘটনার সিবিআই তদন্ত চেয়ে ঝাড়খণ্ড হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ঘটনার সময় ওই হোটেলে সুবোধকান্ত নিজেও উপস্থিত ছিলেন। হোটেলের ক্লোজ সার্কিট টিভির ফুটেজ পরীক্ষা করলে তার প্রমাণও পাওয়া যাবে। পুলিশের মদতেই সুবোধকান্ত হোটেল থেকে পালাতে সক্ষম হয়েছে বলে মামলাকারীদের অভিযোগ।
তদন্তকারীদের একটি সূত্রে খবর, ঘটনার সময় ওই হোটেলে রাঁচির এক বিশিষ্ট কংগ্রেস নেতাও উপস্থিত ছিলেন। তিনি যখন হোটেলের ঘরে বৈঠক করছিলেন তখন তাঁর সরকারি নিরাপত্তা কর্মীরা হোটেলের নিচে উপস্থিত ছিলেন। তাঁরা নিরঞ্জনের সচিব সুধীরকে দু’টি বিরাট ব্যাগ নিয়ে হোটেলে ঢুকতে দেখেন। ওই কংগ্রেস নেতার নিরাপত্তার খাতিরেই ওই নিরাপত্তা কর্মীরা ব্যাগ দুটি পরীক্ষা করতে চান। কিন্তু সুধীর তাতে রাজি হননি। ফলে তাঁর সঙ্গে নিরাপত্তা কর্মীদের বচসা হয়। ইতিমধ্যে এক নিরাপত্তা কর্মী ব্যাগ দুটি পরীক্ষা করার জন্য ওয়্যারলেসের মাধ্যমে স্থানীয় লালপুর থানায় পুলিশের সাহায্য চান। ওয়্যারলেসের মারফৎ সেই বার্তা রাঁচির পুলিশ সুপারের দফতরে পৌঁছয়। সন্দেহজনক ব্যাগ পরীক্ষা করতে পুলিশ ওই হোটেলে আসার পরেই টাকা বিলির তোড়জোড়ের বিষয়টি সামনে
চলে আসে। ইতিমধ্যেই হোটেলের পিছনের দরজা দিয়ে ওই কংগ্রেস নেতা ও অন্যান্য নেতৃত্ব বেরিয়ে যান।
এ দিকে এই ঘটনার ফায়দা তুলতে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আজ আসরে নেমে পড়েছে বিজেপি। রাজ্যের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন মুণ্ডা এ দিন কংগ্রেস নেতৃত্বকে কটাক্ষ করে বলেন, “পুলিশ তদন্ত করুক। আর যাঁদের নাম ইতিমধ্যেই ঘটনার সঙ্গে জড়িয়েছে তাঁরা রাজনীতি থেকে সন্ন্যাস নিন। ওঁরা টাকা ছড়িয়ে যে ভোট করে এটাই তার প্রমাণ। পুরভোটে টাকা ছড়িয়ে ভোট করার অর্থ মানুষের দৈনন্দিন চাহিদাকে বিক্রি করে দেওয়া।”


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.