টিফিনের সময়ে গায়ে গরম চা পড়ে গিয়েছিল চতুর্থ শ্রেণির এক ছাত্রের। ওই অবস্থায় সঙ্গে-সঙ্গে তার চিকিৎসার বদলে কাপ ভেঙে ফেলার ‘অপরাধে’ ওই বালককে চড় মারার অভিযোগ উঠেছে স্কুলের এক অশিক্ষক কর্মীর বিরুদ্ধে। সোমবার ঘটনাটি ঘটেছে উল্টোডাঙার কাছে বিধাননগর রোডের সারদাপ্রসাদ ইনস্টিটিউশনে। পুলিশ জানায়, নিতাই পাত্র নামে ওই ছাত্রের ডান গাল, কান ও পেটের অনেকটা অংশ পুড়ে গিয়েছে। জখম অবস্থায় তাকে আরজিকরে নিয়ে যাওয়া হয়। ছবি দত্ত নামে ওই অশিক্ষক কর্মীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। |
পুলিশ সূত্রের খবর, এ দিন সকাল ৯টা নাগাদ টিফিনের সময়ে দৌড়ে ক্লাসে ঢুকছিল নিতাই। তখনই থালায় করে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের জন্য চা নিয়ে যাচ্ছিলেন ছবিদেবী। তাঁর সঙ্গে ধাক্কা লাগতেই গরম চায়ের কাপ উল্টে পড়ে নিতাইয়ের গায়ে। তবে নিতাইয়ের পরিবারের অভিযোগ, ওই মহিলাই অন্যমনস্ক ছিলেন। তার বাবা শঙ্কর পাত্রের কথায়, “চা পড়ে গা পুড়ে যাওয়ার পরে প্রথমে কোনও ব্যবস্থা নেননি স্কুল-কর্তৃপক্ষ। প্রায় দু’ঘণ্টা তাকে ওই ভাবেই বসিয়ে রাখা হয় বলে জানতে পেরেছি। বরং নিতাইয়ের চিকিৎসায় সাহায্য করেন মানিকতলা থানার ওসি শুভাশিস কর।” তাঁর মতে, “টিফিনের সময়ে বাচ্চারা ছুটোছুটি করবেই। ওই মহিলারই খেয়াল রাখা উচিত ছিল। আরও বড় দুর্ঘটনাও ঘটতে পারত।”
স্কুল-কর্তৃপক্ষের তরফে অবশ্য দাবি, গায়ে চা পড়ে যাওয়ায় পরে স্কুলেই তার প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয়েছে। পরে তাকে পাশের একটি চিকিৎসা কেন্দ্রেও নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানকার চিকিৎসকদের পরামর্শ মতোই তাকে নিয়ে যাওয়া হয় আরজিকরে। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জরী সাহা অবশ্য ওই ছাত্রকে চড় মারার অভিযোগ সম্পূর্ণ অস্বীকার করেছেন। তাঁর দাবি, স্কুল-কর্তৃপক্ষের তরফেই নিতাইয়ের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
এ দিন এই ঘটনার প্রতিবাদে কিছুক্ষণ স্কুল ঘেরাও করেন অভিভাবকেরা। বিষয়টি নিয়ে কলকাতা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের কাছে রিপোর্ট চান শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু। সংসদের তরফে এ দিনই রিপোর্ট পাঠানো হয়েছে মন্ত্রীর কাছে। সংসদের চেয়ারম্যান কার্তিক মান্না বলেন, “রিপোর্টে স্কুল-কর্তৃপক্ষের গাফিলতির প্রমাণ পাওয়া গেলে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে।”
|