সভা-সমাবেশ বা নাচগান কিছুই হয়নি। ফাঁকাই পড়ে থাকল নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়াম। অথচ গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র দামোদর মোদীর সভার জন্য রাজ্য বিজেপি সেটা চেয়েও পেল না।
কেন? কোনও এক বেসরকারি সংস্থাকে আগেই ওই স্টেডিয়াম দিয়ে দেওয়া হয়েছিল। তাই মোদীর সভার জন্য তা দেওয়া যায়নি বলে রাজ্য সরকারের তরফে জানানো হয়েছে।
কিন্তু মঙ্গলবার তো দেখা গেল, নেতাজি ইন্ডোরে কোনও অনুষ্ঠানই হয়নি। যারা আগেই ওই স্টেডিয়াম ভাড়া নিয়েছিল, তারা গেল কোথায়?
নেতাজি ইন্ডোরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা জানান, কোনও সংস্থার নামে এ দিন স্টেডিয়াম বরাদ্দই ছিল না।
তা হলে মোদীর সভার জন্য বিজেপি চেয়েও সেটা পেল না কেন?
নেতাজি ইন্ডোরের কর্তাদের বক্তব্য, স্টেডিয়াম পেতে হলে সরাসরি ক্রীড়ামন্ত্রীর কাছে আবেদন করতে হয়। মন্ত্রী কোনও আবেদন বিবেচনা করলে তবেই স্টেডিয়াম বরাদ্দ করা হয়। মোদীর অনুষ্ঠানের জন্য মন্ত্রীর কাছ থেকে আবেদন স্টেডিয়াম সংক্রান্ত সেলে আসেনি বলে জানান তাঁরা।
অন্য কারও আবেদন ছিল কি?
স্টেডিয়াম-কর্তারা জানান, অন্য কারও বা অন্য কোনও সংস্থার আগাম আবেদনও ছিল না। ফলে স্টেডিয়াম এ দিন খালিই পড়ে ছিল।
তা হলে কি স্টেডিয়ামেরই মেরামতি বা অন্য সমস্যা ছিল?
কর্তাদের জবাব, স্টেডিয়ামের জন্য বুকিংয়ের কোনও সমস্যা নেই। রক্ষণাবেক্ষণের কাজকর্ম চলছে, এমনও নয়। তাই মন্ত্রী চাইলে রাজ্য বিজেপি-কে এ দিনের জন্য ইন্ডোর স্টেডিয়াম দিতেই পারতেন। কেন দেননি, তা তাঁদের অজানা বলে জানান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্তারা।
কী বলছেন মন্ত্রী?
ক্রীড়ামন্ত্রী মদন মিত্র অসুস্থ হয়ে দক্ষিণ কলকাতার একটি নার্সিংহোমে ভর্তি রয়েছেন। তাই তিনি কথা বলতে পারেননি। তাঁর ঘনিষ্ঠ মহল থেকে বলা হয়েছে, একটি ভুঁইফোঁড় অর্থ লগ্নি সংস্থা ৮-৯ এপ্রিল অনুষ্ঠান করার জন্য দু’লক্ষ টাকা দিয়ে স্টেডিয়াম ভাড়া নিয়েছিল। কিন্তু তারা এ দিন অনুষ্ঠান করেনি। অনুষ্ঠান যে হচ্ছে না, তা-ও জানায়নি। তাই বিজেপি-কে স্টেডিয়াম দেওয়া সম্ভব হয়নি।
রাজনৈতিক শিবির এর মধ্যে নোংরা রাজনীতি দেখছে। শাসক পক্ষের ‘ভয়’-ও দেখছে। যেমন রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক শমীক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, এ রাজ্যে সিপিএম তাঁদের প্রধান রাজনৈতিক শত্রু। তা সত্ত্বেও অতীতে সিপিএম-ও এ-সব ছোটখাটো ব্যাপার নিয়ে নোংরা রাজনীতি করেনি। তৃণমূল কংগ্রেস এক সময় বিজেপি জোটের শরিক ছিল। তবু তাদের আমলেই এই ঘটনা ঘটল। শমীকবাবু বলেন, “স্টেডিয়াম খালি থাকল অথচ নরেন্দ্র মোদীর অনুষ্ঠানের জন্য তা দেওয়া হল না। এ কেমন সৌজন্য! সরকারে আসার দু’বছরের মধ্যে এত ভয় কেন? মনে হচ্ছে, পঞ্চায়েত ভোট না-করা থেকে শুরু করে ইন্ডোর স্টেডিয়াম না-দেওয়া পর্যন্ত সব কিছুর পিছনেই গদি উল্টে যাওয়ার ভয় কাজ করছে!” |