চটজলদি খাবারে ঝটিতি লাভ। এই সমীকরণে আস্থা রেখেই এখন ভারতে চটজলদি খাবারের রেস্তোরাঁ ব্যবসায় টাকা ঢালতে এক পায়ে খাড়া বহু দেশি-বিদেশি প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থা। সেই আগ্রহকে কাজে লাগিয়ে ব্যবসা সম্প্রসারণের পথে পা বাড়াচ্ছে এ রাজ্যের বেশ কিছু রেস্তোরাঁ চেনও।
যেমন, নয়া ব্র্যান্ড লাজিজ-এর হাত ধরে এ বার চটজলদি খাবারের রেস্তোরাঁ (কুইক সার্ভিস রেস্টোর্যান্ট বা কিউএসআর) খোলার পথে পা বাড়াচ্ছে সিরাজ। দেশের দশটি শহরে চালু হচ্ছে ১৬২টি রেস্তোরাঁ। ৭৫টি নিজেদের হাতে রেখে বাকিগুলি ফ্র্যাঞ্চাইজি মডেলে চালাবে তারা। সংস্থা প্রধান ইশতিয়াক আহমেদের দাবি, এই নয়া ব্যবসার জন্য ৩৩ কোটি টাকা লগ্নির মধ্যে ২৫ কোটিই আসবে প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থার থেকে।
একই পথে হেঁটেছে অঞ্জন চট্টোপাধ্যায়ের স্পেশালিটি রেস্তোরাঁও। শেয়ার বাজারে পা-ও রেখেছে তারা। এ বার বিদেশি ব্র্যান্ডকে সঙ্গী করে চটজলদি খাবারের ব্যবসা শুরু করতে অধিগ্রহণ প্রক্রিয়া প্রায় চূড়ান্ত বলে তাঁর দাবি।
কোনও সংস্থা তৈরির একেবারে শুরুতে যেমন উদ্যোগ মূলধন (ভেঞ্চার ক্যাপিটাল) সংস্থা টাকা ঢালে, তেমনই পরে ব্যবসার বহর বাড়াতে অর্থ জোগায় প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থা। সাধারণত সংস্থার শেয়ারের বিনিময়ে এই লগ্নি করে তারা। তাই যত দ্রুত ওই সংস্থা মুনাফা করবে, তত তাড়াতাড়ি তার শেয়ার বেচে লাভের কড়ি ঘরে তুলতে পারবে প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থা। সে কারণেই চটজলদি খাবারের ব্যবসা তাদের কাছে এত আকর্ষণীয় বলে সংশ্লিষ্ট মহলের দাবি।
দেশে চটজলদি খাবারের বাজার এই মুহূর্তে কতটা সম্ভাবনাময়, তা স্পষ্ট পরিসংখ্যান থেকেই। টেকনোপ্যাক-এর সমীক্ষা অনুযায়ী, পাঁচ বছরে এই ব্যবসা বাড়বে ২২% হারে। এই মুহূর্তে ভারতে রেস্তোরাঁ ব্যবসার বহর প্রায় ৪৫ হাজার কোটি টাকা। যার ৭% কিউএসআর-এর দখলে। সংশ্লিষ্ট শিল্প মনে করছে এই ব্যবসা বাড়ছে মূলত কেএফসি, ম্যাকডোনাল্ডস, সাবওয়ের মতো বিদেশি ব্র্যান্ডের সৌজন্যে। যেমন, ২০১৫-এর মধ্যে দেশে নতুন ২৫০টি রেস্তোরাঁ খুলবে ম্যাক। ডমিনোজ ২৭০টি। সাবওয়ে ৭০০-র বেশি বিপণি। এদের রমরমা দেখেই এ বার তাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ময়দানে নামছে দেশি সংস্থাগুলি।
ইন্ডিয়ান হসপিটালিটি রিভিউ-এর মতে, এ বছরে ২৫০টি বিপণি খুলবে মুম্বইয়ের জাম্বো কিং। দু’বছরে বিপণি তিন গুণ করতে চায় বারবিকিউ নেশন আর নিরুলা-ও। পুঁজি জোগাবে প্রাইভেট ইক্যুইটি সংস্থাই। মুম্বইয়ের আর আম্মিজ বিরিয়ানিতে ৪০ কোটি টাকা ঢালছে একটি সংস্থা। ৩২.৫ কোটি টাকা পেয়েছে আর এক রেস্তোরাঁ চেন মস্ত-কলন্দরও। |