স্বরচিত কবিতা থেকে শ্রুতিনাটক, ক্যুইজে জমে উঠেছে রূপনারায়ণপুর সুভাষ গ্রামীণ বইমেলা। ৬ এপ্রিল পশ্চিম রাঙামাটিয়া ইয়ুথ ক্লাব আয়োজিত এই মেলার আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন সাহিত্যিক মানব চক্রবর্তী। মেলা চলবে ১৪ এপ্রিল পর্যন্ত।
মেলা কমিটির এক কর্মকর্তা গোপাল দাস জানান, ১১ বছর আগে গ্রামীণ এলাকায় যাঁরা সাহিত্যচর্চা করেন তাঁদের প্রতিভার মর্যাদা দিতেই এই মেলা শুরু করা হয়েছিল। ধীরে ধীরে মেলার জনপ্রিয়তা বেড়েছে। মিহিজাম, সালানপুর, গৌরান্ডি, মাইথনের বাসিন্দারাও এই মেলার ওতপ্রোত জড়িয়ে গিয়েছেন। এ বছর মেলার প্রথম দিনে স্বরচিত কবিতা পাঠের আসর জমে উঠেছিল। |
সন্ধ্যায় জমজমাট বইমেলা। —নিজস্ব চিত্র। |
দ্বিতীয় দিন ‘শহবাগ ও আমরা’ শীর্ষক আলোচনায় যোগ দেন স্থানীয় বুদ্ধিজীবীরা। আলোচনাচক্রে বক্তব্য রাখেন ডিওয়াইএফ-এর রাজ্য কমিটির সভাপতি আভাস রায়চৌধুরী, প্রাক্তন অধ্যাপক সুহৃদ বসুমল্লিক। আন্তর্জাতিক ভলিবল খেলোয়াড় স্থানীয় কল্যাণগ্রামের বাসিন্দা ইন্দ্রজিৎ ভাদুড়ি-সহ তিনজনকে সংবর্ধনাও দেওয়া হয় এ দিন। স্মরণ করা হয় সদ্য প্রয়াত সাহিত্যিক সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়কে। তরুণ কবি মহুয়া ভট্টাচার্য থেকে দীর্ঘদিনের স্থানীয় এক লিটল ম্যাগজিনের সম্পাদক বাসুদেব মণ্ডল সকলেই বলেন, “সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় যুগান্তরের কবি ও লেখক। তাঁর প্রাসঙ্গিকতা কোনও দিনই বাংলা সাহিত্য ও সমাজ থেকে হারাবে না।” বাকি দিনগুলোতেও আবৃত্তি, সঙ্গীত, নৃত্যানুষ্ঠান ও ক্যুইজের আয়োজন রয়েছে। এছাড়া আঞ্চলিক কবি অরুণ চট্টোপাধ্যায় স্মরণে গীতিআলেখ্য, অদ্বৈত মল্লবর্মনকে নিয়ে আলোচনা, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় স্মরণ ইত্যাদি অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে বলেও মেলা কমিটির তরফে জানানো হয়েছে। এ বছরের মেলা উৎসর্গ করা হয়েছে রবীন্দ্রনাথ, স্বামী বিবেকানন্দ, দ্বিজেন্দ্রলাল রায় এবং আচার্য প্রফুল্লচন্দ্র রায়কে।
বই, লিটল ম্যাগাজিন সব নিয়ে ৩৮টি স্টল বসেছে মেলায়। পাণ্ডুলিপির অলীক দাস জানান, শরৎচন্দ্র, বঙ্কিমচন্দ্র ও বিবেকানন্দের বইয়ের বেশ ভালই চাহিদা রয়েছে। চাহিদা রয়েছে শিশু সাহিত্যের বইয়েরও। এছাড়া বিক্রি রয়েছে স্থানীয় প্রকাশনার বই ও লিটল ম্যাগাজিনেরও। ফলে প্রকাশকের পাশাপাশি খুশি স্থানীয় কবি বিজন রায়, প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়, কল্পনা মিত্র এবং ছড়াকার নিতীশ চৌধুরীরা। তাঁদের কথায়, “স্থানীয় কবি সাহিত্যিক এবং শিল্পীদের মেলবন্ধনে এই মেলা বার্ষিক উৎসবে পরিণত হয়েছে।” আবৃত্তিকার রত্না সোম, নৃত্যশিল্পী শতাব্দী মাজি, গায়ক বিপ্লব নাগরাও জানান, বইমেলা তাঁদের কাছে সাংস্কৃতিক মিলনমেলা হয়ে দাঁড়িয়েছে। |