হাসপাতাল চত্বরে পুকুরের এক দিকে দাঁড়িয়ে সৌন্দর্যায়নের কাজের উদ্বোধন করছেন রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী। উল্টো দিকের পাড় বেয়ে তখন ওই পুকুরেই মিশছে নিকাশি নালার জল।
সোমবার এমনই দৃশ্য দেখা গেল বেহালার বিদ্যাসাগর হাসপাতালে। সৌন্দর্যায়নের প্রথম পর্যায়ের কাজ শেষ হওয়ায় ওই হাসপাতালে এ দিন এক অনুষ্ঠানে শিল্পমন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের সঙ্গে হাজির ছিলেন স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, মেয়র পারিষদ তারক সিংহ। জলে কয়েকটি রাজহাঁস, পাতিহাঁস এবং মাছের চারা ছাড়েন বিশিষ্ট অতিথিরা। |
পার্থবাবু বলেন, “হাসপাতাল ও সংলগ্ন এলাকার রাস্তাগুলি পূর্ত দফতর ও পুরসভার যৌথ উদ্যোগে চওড়া করা হয়েছে। পুকুরটি কচুরিপানায় ভর্তি ছিল। পরিবেশ দফতর সেটির সৌন্দর্যায়নের দায়িত্ব নেয়। জল পরিষ্কারের পাশাপাশি পুকুরে ফোয়ারা লাগানো হয়েছে। আলোও বসেছে।” একই সঙ্গে অবশ্য কয়েক জন রোগীর আত্মীয় এবং আশপাশের এলাকার বাসিন্দারা অভিযোগ তুলেছেন যে, হাসপাতালে উন্নত নিকাশি ব্যবস্থা নেই। ফলে নর্দমার নোংরা, দুর্গন্ধযুক্ত জল গিয়ে পড়ে ওই পুকুরেই। চিকিৎসাজাত বর্জ্যও ওই জলে মিশে থাকে বলে অভিযোগ।
এ দিন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দিকে গিয়ে দেখা যায়, নিকাশি নালার জল ঢুকছে ওই পুকুরে। দুর্গন্ধ ঢাকতে ছড়ানো হয়েছে ব্লিচিং পাউডার, চুন। রোগীর আত্মীয়দের জন্য তৈরি শৌচাগারেরও বেহাল দশা। ভিতরে নোংরা জল, আবর্জনার স্তূপ। হাসপাতালের কার্নিস থেকে ঝুলছে পুরনো ব্যান্ডেজ, নোংরা কাপড়। |
অভিযোগ পুরোপুরি অস্বীকার করেননি রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী। চন্দ্রিমাদেবীর বক্তব্য, “পুকুরে নোংরা জল ঢোকা বন্ধ করতে পরিকল্পনা করেছেন স্থানীয় পুর-কর্তৃপক্ষ। হাসপাতালের নিকাশি নালাগুলি অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হবে। পাঁচ-সাত দিনের মধ্যেই ওই কাজ করা হবে।” হাসপাতালের সুপার পরমার্থ চট্টোপাধ্যায় অবশ্য অভিযোগ মানতে চাননি। তিনি বলেন, “নিকাশি নালার জল পুকুরে গিয়ে পড়ে না। তবে বর্ষাকালে বাইরের দূষিত জল পুকুরে এসে মেশে। পুরসভা ওই সমস্যা মেটাতে তৎপর হয়েছে।”
এ দিন পার্থবাবু জানান, ওই হাসপাতালে একটি ‘ফেয়ার প্রাইস’ ওষুধের দোকান খোলার জায়গা চিহ্নিত হয়েছে। ঠিক হয়েছে সিটি স্ক্যান ও ডিজিট্যাল এক্স-রে যন্ত্র বসানোর জায়গাও। শিশুদের জন্য ‘এসএনসিইউ’ চালু হবে। পরবর্তী পর্যায়ে ডায়ালিসিস ইউনিট খোলার পরিকল্পনা রয়েছে। চন্দ্রিমাদেবী বলেন, “অনেকগুলি দফতরের যৌথ উদ্যোগে সৌন্দর্যায়ন হয়েছে। হাসপাতালের পরিবেশ ভাল থাকলে পরিষেবাও ত্বরান্বিত হয়।” |