ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের রায়
আলট্রাসোনোগ্রাফির রিপোর্টে ভ্রান্তি, ক্ষতিপূরণ দম্পতিকে
গাফিলতির অভিযোগে চিকিত্‌সক ও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে লক্ষাধিক টাকা ক্ষতিপূরণের নির্দেশ দিল হুগলি জেলা ক্রেতা সুরক্ষা আদালত।
আদালত সূত্রের খবর, ২০০৭ সালের ২৯ জানুয়ারি রিষড়া পুরসভা পরিচালিত রিষড়া সেবাসদন হাসপাতালে আলট্রাসোনোগ্রাফি করানো হয় শ্রীরামপুরের নেতাজি সুভাষ অ্যাভেনিউয়ের বাসিন্দা রেশমি পরভিনের। ওই তরুণী সে সময়ে অন্তঃসত্ত্বা ছিলেন। হাসপাতালের রেডিওলজিস্ট ঊর্মি চৌধুরীর দেওয়া রিপোর্টে জানা যায়, গর্ভস্থ ভ্রূণের হৃদস্পন্দন নেই। অসম্পূর্ণ গর্ভপাত হয়েছে। জরায়ুতে ভ্রূণস্থ কোনও অংশ থেকে গিয়েছে। প্রসূতির শারীরিক ক্ষতি এড়াতে ওই অংশটি জরায়ু থেকে বের করার পরামর্শও দেওয়া হয়।
রেশমি অবশ্য তা করেননি। যদিও রিপোর্ট পেয়ে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়ে গোটা পরিবার। রেশমি বলেন, “আমার মনে হয় রিপোর্টটি ভুল। কেননা গর্ভে সন্তানের নড়াচড়া টের পেতাম।” সেই মতো অন্য চিকিত্‌সকের পরামর্শে আরও কিছু দিন ধৈর্য ধরার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা।
ছেলে কোলে রেশমি। ছবি: প্রকাশ পাল।
রেশমির স্বামী মুজিবর রহমন জানান, ২০০৭ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর সেবাসদনেই সুস্থ-স্বাভাবিক পুত্রসন্তানের জন্ম দেন রেশমি। তিনি বলেন, “ওই রিপোর্টের ভিত্তিতে যদি স্ত্রীর গর্ভস্থ ভ্রূণ নষ্ট করে ফেলতাম, তবে কী মারাত্মক ক্ষতি হত। ওদের ভুলে কত বড় মাসুল দিতে হত আমাদের!” শেখ মহম্মদ ইমতিয়াজ নামে রেশমি-মুজিবরের ছেলে এখন আপার নার্সারিতে পড়াশোনা করে। সন্তানের জন্মের পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ এবং সংশ্লিষ্ট রেডিওলজিস্টের শাস্তি চেয়ে বিভিন্ন দফতরে দৌড়ঝাঁপ শুরু করেন রেশমি-মুজিবর। রিষড়া থানা, রাজ্য স্বাস্থ্য ভবন, মেডিক্যাল কাউন্সিলে ঘটনার কথা লিখিত ভাবে জানান। তদন্তও শুরু হয়। ২০০৮ সালের মার্চ মাসে ক্রেতা সুরক্ষা আদালতের দ্বারস্থ হন ওই দম্পতি। আদালত সূত্রের খবর, ২০১২ সালের ২৫ নভেম্বর প্রধান বিচারক নারায়ণচন্দ্র চক্রবর্তী রায় দেন, সংশ্লিষ্ট চিকিত্‌সক ও হাসপাতালকে গাফিলতির দায়ে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১ লক্ষ টাকা এবং মামলা চালানোর খরচ বাবদ আরও ২০ হাজার টাকা দিতে হবে ওই দম্পতিকে। এক মাসের মধ্যে টাকা মিটিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেয় আদালত। অভিযোগ, ঊর্মিদেবী নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ৬০ হাজার টাকা জমা দিলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তা দিচ্ছিলেন না। বিষয়টি ফের আদালতকে জানান রেশমিরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে ফের একই নির্দেশ দেন বিচারক। অন্যথায় পরোয়ানা জারি করার কথাও বলেন। দিন কয়েক আগে চুঁচুড়ায় আদালতে রেশমির হাতে ৬০ হাজার টাকার চেক তুলে দেন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। হাসপাতাল পরিচালন কমিটির সম্পাদক তথা কাউন্সিলর দিলীপ সরকার বলেন, “এতে হাসপাতালের গাফিলতি ছিল না। চিকিত্‌সকের ভুলে হয়েছিল। তবু আদালতের রায় মানা হয়েছে।” ঊর্মিদেবী আবার আদালতকে আগে জানিয়েছিলেন, মেশিনপত্রের গোলমালেই এই বিভ্রাট।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.