জমি মালিকদের কাছ থেকে কারখানা শিলান্যাসের জন্য লিখিত অনুমতি নেওয়া হয়েছে। অথচ শিলান্যাসের পরে মালিকদের জমি বাবদ কোনও টাকা না দিয়ে সেখানে কারখানার পাঁচিল তৈরির অভিযোগ উঠেছে শিলিগুড়ি জলপাইগুড়ি উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে। জলপাইগুড়ির কোতিয়ালি থানার খারিজা বেরুবাড়ি ১ নম্বর গ্রাম পঞ্চায়েতে সিপাইপাড়ায় ঘটনাটি ঘটেছে। ১০ একর ওই জায়গায় প্রস্তাবিত প্রকল্প হওয়ার কথা। তবে টাকা না-দিয়ে এসজেডিএ জোরকদমে কাজ শুরু করায় দুশ্চিন্তায় পড়েছেন জমির মালিকপক্ষ। মালিকপদের পক্ষে শান্তিরঞ্জন সাহা বলেন, “শিলান্যাস অনুষ্ঠানের সময় তারা অনুমতি চাইলে তাও দিয়েছি। কিন্তু জমি কেনা না হলেও কাজ শুরু হয়েছে দেখে দুশ্চিন্তায় রয়েছি। আমি এবং ভাইয়েরা এসজেডিএ’র দফতরে গিয়ে মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিককে বলেছি। তিনি আশ্বাস দিয়েছেন, সাত দিনের মধ্যেই জমি কেনার টাকা দেওয়া হবে। তবুও চিন্তা দূর হচ্ছে না।”
গত ৭ মার্চ উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী গৌতম দেবের উপস্থিতিতে ওই প্রকল্পের শিলান্যাস অনুষ্ঠানও হয়। উপস্থিত ছিলেন এসজেডিএ’র তৎকালীন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য-সহ অনেকেই। বর্তমানে গৌতমবাবু এসজেডিএ’র চেয়ারম্যানও। তিনি জানান, ওই জায়গায় প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে প্রস্তাবিত ওই টম্যাটো প্রক্রিয়াকরণ ইউনিট গড়ে তোলার কথা। সেই মতো প্রথমে ময়নাগুড়িতে এবং পরে তা হলদিবাড়ি-জলপাইগুড়ি সড়কের পাশে ওই জায়গায় গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত হয়। মার্চের প্রথম সপ্তাহেই কেন্দ্রের তরফে প্রকল্পের কাজের অনুমোদন মেলায় ৪ কোটি টাকা বরাদ্দও করা হয়। অথচ জমি না কিনেই প্রকল্পের শিলান্যাস করে কাজ শুরু করা নিয়ে প্রশ্ন ওঠায় উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন মন্ত্রী ক্ষুব্ধ। তিনি বলেন, “সোমবারই দফতরে গিয়ে ঠিক কী হয়েছে তা খোঁজ নেব। আধিকারিকরা জানিয়েছিলেন অগ্রিম টাকা দেওয়া হয়েছে। জমির মালিকদের ডেকে তাঁদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেব।”
প্রাক্তন চেয়ারম্যান রুদ্রনাথ ভট্টাচার্য বলেন, “ওই জমি কেনার প্রক্রিয়া শেষ করতে তৎকালীন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিকের উপর দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। জমি মালিকদের বায়নার টাকা, বাকি জমির দাম মেটাতে ‘চেক’, রেজিস্ট্রেশনের সব ব্যবস্থাই করা হয়েছে বলে আমাকে জানানো হয়েছিল। এখন কী অবস্থায় রয়েছে বর্তমান কর্তৃপক্ষ বলতে পারবেন।”
এসজেডিএ’র প্রাক্তন মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক গোদালা কিরণ কুমার জানিয়েছেন, মালিকেরা জমি দিতে রাজি। তাঁদের নামে জমির দামের ‘চেক’ তৈরি রয়েছে। রেজিস্ট্রি না হওয়ায় তা দিতে পারেননি। পঞ্চায়েত নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হলে কাজ পিছিয়ে যেতে পারে দেখেই তাঁরা তাড়াতাড়ি শুরু করেন। সে কথা জানিয়ে, শিলান্যাস অনুষ্ঠান করার লিখিত অনুমতিও দেওয়া হয়েছিল। এসজেডিএ’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শরদ দ্বিবেদী বলেন, ‘‘বিষয়টি দেখা হচ্ছে। সমস্যা দ্রুত তা মিটিয়ে নেওয়া হবে।”
|