আরামবাগ হাসপাতাল রোড
আধ কিলোমিটার রাস্তা পেরোতেই ছোটে কালঘাম
মস্যা মাত্র হাফ কিলোমিটারকে ঘিরে। কিন্তু আরামবাগ শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং ব্যস্ততম রাস্তা হাসপাতাল রোডের নেতাজি স্কোয়ার থেকে পোলট্রিপাড়া পর্যন্ত হাফ কিলোমিটার এলাকা পেরোতে প্রতিদিন গলদঘর্ম হতে হচ্ছে যাত্রীদের। কারণ, যানজট। যা শুরু হয়ে যায় সকাল থেকেই। রাতেও সেই জট সহজে কাটে না। দিনের পর দিন একই সমস্যায় জেরবার যাত্রীরা ওই রাস্তাকে যানজটমুক্ত করার ব্যাপারে প্রশাসনের বিরুদ্ধে উদাসীনতার অভিযোগ তুলেছেন। ট্রাফিক পুলিশ মোতায়েনেরও দাবি তুলেছেন কেউ কেউ।
মহকুমাশাসক অরিন্দম রায়ের আশ্বাস, “রাস্তাটি যানজটমুক্ত করতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।”
রাস্তাটি চওড়া মাত্র ২০ ফুট। এই রাস্তা ধরেই মহকুমা হাসপাতাল, আরামবাগ স্টেশন যাতায়াত করতে হয়। রাস্তার ধারে রয়েছে পুরসভার সুপার মার্কেট এবং ব্লক অফিস। যাত্রীবাহী বাস-সহ সব ধরনের যানবাহনই চলে ওই রাস্তায়। ট্রাফিক পুলিশ না থাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণেরও কোনও বালাই নেই। বাস যত্রতত্র দাঁড়িয়ে যাত্রী তোলে। যেখানে-সেখানে দাঁড়িয়ে যায় অটো, ভ্যান, রিকশা, ট্রেকার। সঙ্কীর্ণ রাস্তাটিতে ফুটপাথও নেই। বহু দোকানেরই সিঁড়ি এসে মিশেছে রাস্তায়। রাস্তার দু’ধারে অনেকটা করে জায়গা জুড়ে ফল, জুতো-সহ নানা পসরা নিয়ে বসে পড়েন হকারেরা। ফলে, হেঁটে যাতায়াত করতেও পদে পদে হোঁচট খান যাত্রীরা।
প্যাচপ্যাচে গরমেও নিস্তার নেই এই যানজট থেকে। হাসপাতাল রোডে ছবিটি তুলেছেন মোহন দাস।
তা ছাড়া, ওই রাস্তার দু’ধারে বেশ কিছু ওষুধের দোকানে রোগী দেখেন চিকিৎসকেরা। তাঁদের গাড়িগুলিও রাস্তার ধারেই থাকে। তাতে রাস্তাটি আরও সঙ্কীর্ণ হয়ে পড়ে। বছর দুয়েক আগে রাস্তাটি ‘ওয়ান-ওয়ে’ করা হলেও সমস্যা মেটেনি।
বরং যানজট আরও জটিল আকার নিয়েছে। তাতে আটকে পড়ে অ্যাম্বুল্যান্সও। মাঝেমধ্যেই রোগীদের অ্যাম্বুল্যান্স থেকে বের করে বয়ে নিয়ে যেতে হয় হাসপাতালে। মাঝেমধ্যে দুর্ঘটনাও ঘটছে। ভুক্তভোগীদের অনেকে তিন চাকার মোটরভ্যানের দৌরাত্ম্যকেও যানজটের জন্য দায়ী করেছেন।
অতীতে হাসপাতাল রোড যানজটমুক্ত করার দাবিতে ক্ষোভ-বিক্ষোভ অনেক হয়েছে। কিন্তু পুরসভা, পুলিশ বা মহকুমা প্রশাসন স্থায়ী ব্যবস্থা কিছু করেনি বলে স্থানীয় মানুষের অভিযোগ। নেতাজি স্কোয়ারে স্বয়ংক্রিয় সিগন্যাল ব্যবস্থা চালু থাকলেও তাতে হাসপাতাল রোডের যানজটমুক্তি ঘটে না বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
ওই রাস্তার ধারেই মনোহারি দোকান রয়েছে প্রশান্ত গণের। তাঁর ক্ষোভ, “সকাল থেকেই যে ভাবে যানজট বেড়ে যায়, তাতে বিক্রিবাটার খুব অসুবিধা হয়। অনেক ক্রেতাই দোকানে আসতে পারেন না।” মহকুমা হাসপাতালের শিশু চিকিৎসক সুব্রত ঘোষের কথায়, “হাসপাতালের জরুরি প্রয়োজনে ডাক পড়লে নেতাজি স্কোয়ারে গাড়ি রেখে হেঁটে যাই। কবে যে সমস্যা মিটবে জানি না।” ওই হাসপাতালেই চিকিৎসাধীন এক রোগীর আত্মীয়, গৌরহাটির বাসিন্দা উত্তম দত্ত বলেন, “ট্র্যাফিক পুলিশ মোতায়েন করা হলেও যানজট কিছুটা নিয়ন্ত্রণে থাকবে বলেই মনে হয়।”
যানজট সমস্যা মেটানোর ব্যাপারে এসডিপিও (আরামবাগ) শিবপ্রসাদ পাত্র বলেন, “রাস্তাটি পুরসভার অধীন। তারা যানজটমুক্ত করার বিষয়ে সহযোগিতা চাইলে আমরা দেব। মহকুমা প্রশাসন, পুলিশ এবং পুরসভার মিলিত ভাবে কার্যকরী পরিকল্পনার প্রয়োজন।” আরামবাগ পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল কচ বলেন, “রাস্তাটি যানজটমুক্ত করতে আমরা নাজেহাল হয়ে যাচ্ছি। কার্যকরী কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যায় কি না, মহকুমা প্রশাসন এবং পুলিশের সঙ্গে তা নিয়ে আলোচনা করব।”
সেই আলোচনা বা সমস্যা মেটানোর পরিকল্পনা কবে হয়, আপাতত সে দিকেই তাকিয়ে ভুক্তভোগীরা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.