অনেকেই বলছেন, ছাত্ররা হঠাৎ পড়াশোনা ফেলে শহরের রাস্তায় আইন অমান্য করতে যাবে কেন? সেটা তো বৃহত্তর
রাজনীতির ব্যাপার। ছাত্ররা তাতে অহেতুক জড়িয়ে পড়েছিল বলেই তো এমন ঘটনা ঘটল।
এই ধরনের চিন্তার
মধ্যে অনেক ভুল ধারণা এবং কয়েকটি রীতিমতো আপত্তিকর মনোভাব লুকিয়ে রয়েছে।
পার্থ চট্টোপাধ্যায় |
সুদীপ্ত গুপ্ত-র মৃতু্যুকে ঘিরে আর এক বার ছাত্র রাজনীতি নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে। যে আইন অমান্য আন্দোলনে অংশ নিতে গিয়ে সুদীপ্তর মৃত্যু ঘটল, তার দাবি ছিল কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্র সংসদ নির্বাচনের ওপর সাম্প্রতিক সরকারি নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার। সুতরাং, ছাত্র রাজনীতির প্রসঙ্গটা এ ক্ষেত্রে একেবারে অপ্রাসঙ্গিক নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও আমার মনে হয়েছে যে, বিতর্কে একাধিক বিষয় তালগোল পাকিয়ে যাচ্ছে। খানিকটা নিজের চিন্তা স্পষ্ট করার তাগিদেই এই প্রবন্ধ।
প্রথম যে কথাটা মনে রাখা প্রয়োজন, তা হল, সুদীপ্ত গুপ্তর মৃত্যুর কারণ দলীয় কোন্দল বা দু’দল ছাত্রের মারামারি নয়। ঘটনাটা কোনও কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে ঘটেনি। মৃত্যুটা গুরুত্বপূর্ণ, আদৌ ছোট বা তুচ্ছ ঘটনা নয়, তার প্রধান কারণ সুদীপ্তর মৃত্যু ঘটেছে পুলিশের হেফাজতে, গ্রেফতার হওয়া অবস্থায় জেলে নিয়ে যাওয়ার পথে। অনেকেই জানবেন যে, ১৯৭০-৭১ সাল থেকে পুলিশের হেফাজতে বন্দিদের, বিশেষ করে রাজনৈতিক কর্মীদের মৃত্যু নিয়ে বহু আলোড়ন হয়েছে। অনেক কমিশনের সুপারিশ, আদালতের নির্দেশের পর এই নিয়ে একটা স্পষ্ট পদ্ধতি আইনগত স্বীকৃতি পেয়েছে। রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে নাগরিক অধিকার রক্ষায় এই পদ্ধতি একটি কষ্টার্জিত হাতিয়ার। সুদীপ্ত গুপ্ত-র মৃত্যু অথবা জোসেফ হুসেনের মারাত্মক জখম হওয়ার ঘটনায় যদি এই আইনানুগ পদ্ধতি যথাযথ ভাবে পালন করা না হয়, তা হলে পশ্চিমবঙ্গে নাগরিক অধিকার রক্ষার ক্ষেত্রে একটি বড় বিপর্যয় হবে। সে জন্যই জাতীয় সংবাদমাধ্যম থেকে মানবাধিকার কমিশন পর্যন্ত এত জনে এ নিয়ে উৎকণ্ঠিত আর সরব হয়েছেন। |
উচিত ছিল না? ট্রাম ভাড়া বৃদ্ধির বিরুদ্ধে ছাত্ররা। কলকাতা, ২৮ জুলাই, ১৯৬৫ |
কিন্তু নাগরিক অধিকার রক্ষার প্রশ্নে সুদীপ্ত বা জোসেফের ছাত্র-পরিচয়টা আদৌ প্রাসঙ্গিক নয়। প্রশ্নটা হল, আইন অমান্য নিয়ে পুলিশ তার কর্তব্য যথাযথ ভাবে পালন করেছিল কি না। সে দিনের আইন অমান্যকারীরা ছাত্রছাত্রী না হয়ে যদি শ্রমিক বা শিক্ষক বা রাজনৈতিক দলের কর্মী হতেন, আর পুলিশের ব্যবস্থা (বা অব্যবস্থা) আর ব্যবহার (কিংবা দুর্ব্যবহার) যদি একই রকম হত, তা হলে ছাত্রের বদলে শ্রমিক বা শিক্ষক বা রাজনৈতিক কর্মীরও মৃত্যু ঘটতে পারত। বিশেষ করে পুলিশ অথবা মুখ্যমন্ত্রীর দুর্ঘটনা-তত্ত্ব যদি ঠিক হয়, তা হলে তো যে-কোনও গোষ্ঠীর আন্দোলনের বেলাতেই এ রকম দুর্ঘটনা ঘটা সম্ভব ছিল। তবে এই প্রসঙ্গে ছাত্র রাজনীতির বাঞ্ছনীয়তার কথাটা আসছে কেন? তাতে নাগরিক অধিকার নিয়ে প্রশাসনের দায়িত্বের প্রশ্নটা পিছনে সরে যাচ্ছে।
কেউ অবশ্য বলতেই পারেন, ছাত্ররা হঠাৎ পড়াশোনা ফেলে শহরের রাস্তায় আইন অমান্য করতে যাবে কেন? সেটা তো বৃহত্তর রাজনীতির ব্যাপার। ছাত্ররা তাতে অহেতুক জড়িয়ে পড়েছিল বলেই তো এমন ঘটনা ঘটল। এ রকম চিন্তাসূত্র ধরেই মনে হয় আজকের বিতর্কটা উঠেছে। কিন্তু এর মধ্যে অনেক ভুল ধারণা এবং কয়েকটি রীতিমতো আপত্তিকর মনোভাব লুকিয়ে রয়েছে।
সকলেই জানেন, কিন্তু এই সব আলোচনায় ভুলে যান যে, দেশের বর্তমান সাংবিধানিক আইন অনুসারে আঠারো বছর বয়স হলেই যে-কোনও ভারতীয় নাগরিক নির্বাচনে ভোট দেওয়ার অধিকার অর্জন করেন। ভোট দেওয়ার অধিকারের পিছনে যে গণতান্ত্রিক যুক্তিটি রয়েছে, তার তাৎপর্য কিন্তু বৈপ্লবিক। যুক্তিটি হল যে, নির্বাচনী গণতন্ত্রের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিকের মতামতের মূল্য সমান। অর্থাৎ, কলেজের প্রথম বর্ষের যে ছাত্র বা ছাত্রী সবেমাত্র ভোটাধিকার পেয়েছে, আর যে প্রাজ্ঞ শিক্ষাবিদ রোজ সন্ধ্যায় টেলিভিশনে ছাত্রদের রাজনীতি করার কুফল নিয়ে অশ্রুপাত করছেন, ভোটদাতা হিসেবে তাঁদের দু’জনের রাজনৈতিক বিচক্ষণতা কিন্তু সমান বলে গণ্য করতে হবে। কারণ ছাত্রীটির ভোটের মূল্য এক, আর শিক্ষাবিদ, তিনি যত প্রবীণই হোন না কেন, তাঁর ভোটের মূল্যও এক। কিন্তু সনাতন আশ্রমধর্মের সংস্কার আমাদের এমনই মজ্জাগত যে, এই মৌলিক গণতান্ত্রিক সত্যটা আমরা কিছুতেই মানতে চাই না। ছাত্রদের অপরিণত বুদ্ধি, স্বাভাবিক চাপল্য, দূরদৃষ্টির অভাব ইত্যাদি অপ্রাসঙ্গিক বিষয় তুলে আসলে যথার্থ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের প্রসারকেই ঠেকিয়ে রাখতে চাই।
ভোটের অধিকারের সঙ্গে সঙ্গে আরও দু’টি মৌলিক সাংবিধানিক অধিকারের স্বীকৃতি অপরিহার্য হয়ে যায়। সে দু’টি হল, ১৯(১) ধারায় অস্ত্র ছাড়া শান্তিপূর্ণ ভাবে সমাবেশ করার অধিকার এবং সমিতি বা সংগঠন তৈরির অধিকার। এই দু’টি অধিকার সীমিত করা যায় কেবল তখনই, যখন রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব বা ঐক্য বিপর্যস্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে কিংবা নাগরিক বিশৃঙ্খলার আশঙ্কা থাকে। সেই নিরিখে সমাজের যে-কোনও গোষ্ঠী বা শ্রেণির বেলায় সমাবেশ বা সংগঠন করার যে অধিকার প্রযোজ্য, ছাত্রদের বেলায় সেই একই মৌলিক সাংবিধানিক অধিকার প্রযোজ্য। এখানে অন্য কোনও যুক্তি টেনে আনার বিন্দুমাত্র অবকাশ নেই। ছাত্র সংসদের নির্বাচন নিয়ে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের নিষেধাজ্ঞা শোনা যাচ্ছে সাময়িক। না হলে, আপাতদৃষ্টিতে তা সংবিধান-বিরোধী।
এ ব্যাপারে অনেকেই পশ্চিমের গণতন্ত্রে ছাত্র রাজনীতির কথা টেনে আনেন। একটা চালু ধারণা আছে, ইউরোপ-আমেরিকার কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের রাজনীতির সংস্রবে আসতে দেওয়া হয় না। কথাটা একেবারে ভুল। বিদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন যুক্ত থাকার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, সেখানকার ছাত্রছাত্রীরা যথেষ্ট রাজনীতি করে। তার কারণ, মত প্রকাশের স্বাধীনতা আর সমাবেশ বা সংগঠন করার অধিকার সে-সব দেশের গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির অঙ্গাঙ্গি অংশ। ছাত্রদের তা থেকে বঞ্চিত করার প্রশ্নই ওঠে না। বস্তুত সমাজের অন্যান্য জনগোষ্ঠীর তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের রাজনৈতিক সচেতনতা এবং সক্রিয়তা অনেকটাই বেশি। সেখানে রীতিমতো ছাত্র আন্দোলন হয়, ছাত্র ধর্মঘট প্রচুর না হলেও মোটেই বিরল নয়। কলেজ চত্বরে দলীয় রাজনীতি যে প্রবেশ করে না, তা-ও নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দেখেছি, রাষ্ট্রপতি বা অন্য কোনও গুরুত্বপূর্ণ পদের জন্য নির্বাচনের সময় ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস থেকে ছুটি নিয়ে প্রচার বা দলীয় সংগঠনের কাজে যোগ দিতে চলে যায়। ওবামার নির্বাচনের আগে দিন দশ-পনেরো তো বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর প্রায় ফাঁকা হয়ে গিয়েছিল। সব ছেলেমেয়ে ওবামার হয়ে প্রচার করতে অন্যত্র চলে গিয়েছিল। অকুপাই ওয়াল স্ট্রিট আন্দোলনের সমাবেশে যারা যেত, তাদের অধিকাংশই কলেজের ছাত্রছাত্রী। মার্কিন মুলুকের অনেক নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে গেলে দেখা যাবে প্যালেস্তাইনে ইজরাইলি হামলা, কী আফগানিস্তানের যুদ্ধ, কী সমকামীদের বিবাহের অধিকার নিয়ে সভা-সমাবেশ চলেছে। এ শুধু বামপন্থী ছাত্রদের কাণ্ড, এমনও নয়। দক্ষিণপন্থী ছাত্রেরাও রীতিমতো সংগঠিত ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে রাজনৈতিক প্রচার করে। সুতরাং, পশ্চিমী গণতন্ত্রে ছাত্রজীবন রাজনীতিমুক্ত, এ ধারণা তথ্য হিসেবে ভুল। এমন অবস্থা কাম্য বলেও বিশেষ কেউ মনে করে না। এই প্রসঙ্গে আরও মনে রাখা দরকার যে, পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তুলনায় ভারতে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীরা জনসংখ্যার সেই পাঁচ-ছয় শতাংশের মধ্যে পড়ে, যারা উচ্চশিক্ষিত। তাদের রাজনীতির বাইরে থাকতে বলার অর্থ ভবিষ্যতের উচ্চশিক্ষিত প্রজন্মকে রাজনীতিবিমুখ করে তোলা। তাতে যে সমাজের মঙ্গল হবে, এটা মেনে নেওয়া কঠিন।
আসলে যা নিয়ে অনেকেই খুব বিচলিত, তা হল পশ্চিমবঙ্গের ছাত্রজীবনে দলীয় রাজনীতির ব্যাপক অনুপ্রবেশ। এর একটা বিশেষ ইতিহাস আছে, যা ভারতের অন্য অনেক রাজ্যে নেই। স্বাধীনতা-পূর্ব যুগে ছাত্রদের মধ্যে বিপ্লবী দলগুলির প্রচার আর সংগঠন থেকে এর শুরু। গোপন সংগঠন থেকে শুরু করে পরবর্তী যুগে কলেজে কলেজে প্রকাশ্য দলীয় ছাত্র সংগঠন গড়ে ওঠে। এর ফলে ছাত্র সংগঠনের স্বাতন্ত্র্য হারিয়ে যায়, বাইরের নেতাদের উপদেশে তথা নির্দেশে কলেজের ছাত্রছাত্রীরা চালিত হতে থাকে। ক্রমে তার সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়ে নানা দুর্নীতি এবং অর্থকরী কার্যক্রম। যেমন ছাত্র ভর্তিতে ইউনিয়নের হস্তক্ষেপ কিংবা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের অর্থানুকূল্যে বিশাল বাজেটের কলেজ সোশ্যাল, ইত্যাদি। রাজনৈতিক দলের কাছে তাই ছাত্র ইউনিয়ন দখল করা বা দখলে রাখা জরুরি হয়ে উঠল। এর ফলে যে কলেজ চত্বরে দলাদলি, বিশৃঙ্খলা আর হিংসা প্রবল ভাবে বেড়েছে, তাতে কোনও সন্দেহ নেই।
কিন্তু এ সমস্যা ছাত্রদের রাজনীতি করার অধিকার নিয়ে সন্দেহ জাগায় না। ছাত্রদের রাজনৈতিক সমাবেশ বা সংগঠন কী ভাবে হবে, এ হল তার নিয়ম নির্ধারণের সমস্যা। সেই নিয়ম নিয়ে নতুন করে ভাবা অবশ্যই জরুরি হয়ে পড়েছে। ভারতের প্রাক্তন মুখ্য নির্বাচনী কমিশনার জেমস লিংডো এ বিষয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করে কিছু নির্দিষ্ট সুপারিশ করেছেন। এ নিয়ে পশ্চিমবাংলার শিক্ষা ও রাজনৈতিক মহলের সকলেরই ভেবে দেখা উচিত। লিংডো-র প্রস্তাবের মূল উদ্দেশ্য হল প্রতিটি কলেজে ছাত্র সংগঠনের স্বাতন্ত্র্য ও নিজস্বতা বজায় রাখা এবং রাজনৈতিক দল আর বহিরাগত নেতাদের অনুপ্রবেশ বন্ধ করা।
প্রশ্ন হল, পশ্চিমবঙ্গে এই সুপারিশ কার্যকর করা যাবে কি? ধরা যাক, শিক্ষাবিদ, রাজনৈতিক দল এবং সরকার এ নিয়ে একমত হল। তা হলেও কিন্তু সমস্যা মিটবে না। কারণ, যে শিক্ষকেরা কলেজে কলেজে এই দলীয় রাজনীতি-মুক্ত ছাত্র সংসদ নির্বাচন পরিচালনা করবেন, তাঁরা নিজেরা কি দলীয় রাজনীতির ছোঁয়া এড়িয়ে থাকতে পারবেন? যেখানে শিক্ষক সংগঠন দলীয় রাজনীতির বাইরে নয়, কলেজের পরিচালন সমিতিও তার বাইরে নয়, সেখানে যে আধিকারিকেরা ছাত্রদের নির্বাচন পরিচালনা করবেন তাঁদের নিরপেক্ষতা নিয়ে খুব সঙ্গত কারণেই প্রশ্ন উঠবে। তা হলে দলীয় নির্বাচন-মুক্ত ছাত্র সংসদের প্রস্তাব ধোপে টিকবে কী করে? সরকারি মুখপাত্রেরা আজ ছাত্র রাজনীতি নিয়ে যতটা মুখর, পরিচালন সমিতি কিংবা শিক্ষক সংগঠন নিয়ে কিন্তু ততটাই নীরব। এর ফলে তাঁদের প্রস্তাবের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন জাগাটা স্বাভাবিক। মনে হতেই পারে, একটা হঠাৎ-বেড়ে-ওঠা সমস্যার চটজলদি সমাধান হিসেবেই ছাত্র নির্বাচন নিষেধ কিংবা লিংডো কমিশনের কথাটা তোলা হচ্ছে।
পশ্চিমবাংলার কথা হচ্ছে বলে আরও একটা বিষয় ভেবে দেখা দরকার, যা নিয়ে কিন্তু কোনও আলোচনাই আমার চোখে পড়েনি। এ রাজ্যের ছাত্র রাজনীতিতে দলীয় রাজনীতির প্রভাব অধিকাংশ রাজ্যের তুলনায় অনেক বেশি। কিন্তু একই সঙ্গে ধর্ম বা জাতিভিত্তিক সংগঠন বা আন্দোলনের প্রাদুর্ভাব এ রাজ্যে অনেক কম। অন্যান্য রাজ্যে কলেজ রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলের অনুপ্রবেশ কম হলেও জাতি-ধর্মের রাজনীতি প্রবল। পশ্চিমবঙ্গে ছাত্র রাজনীতিতে দলীয় প্রভাব কমলে যে অন্য ধরনের জাতি-ধর্মভিত্তিক সংগঠন এবং আন্দোলন বেড়ে উঠবে না, তা জোর গলায় বলা যায় না। সে রকম রাজনীতির পক্ষে-বিপক্ষে দু’দিকেই যুক্তি দেওয়া যায়। কিন্তু এই সম্ভাবনা নিয়ে কাউকে প্রশ্ন তুলতে শুনিনি।
বিতর্ক হচ্ছে, তা ভাল লক্ষণ। বহু বছরের একটা বন্ধ্যা অচলাবস্থা কেটেছে নিশ্চয়। কিন্তু আপাতত কাজ চালিয়ে যাওয়ার মতো সমাধানে বেশি দূর যাওয়া যাবে না। উল্টে সমস্যা আরও বাড়তে পারে। সতর্ক হয়েই আরও গভীরে গিয়ে সমাধান খোঁজা প্রয়োজন। কিন্তু তার জন্য সরকারের মুখাপেক্ষী হয়ে থাকাটা সমীচীন নয়। শিক্ষাজগতের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত আছেন, তাঁদেরই আজ এ কাজে এগিয়ে আসতে হবে।
|
নিউ ইয়র্কে কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নৃতত্ত্বের অধ্যাপক, কলকাতার সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন সোশাল সায়েন্সেস-এ সাম্মানিক অধ্যাপক |