নিজস্ব সংবাদদাতা • কাঁকসা |
সারা দিনে বাস চলে মাত্র ৫-৬টা। অথচ প্রাত্যহিক নানা কাজে হাজারো মানুষকে সিলামপুর থেকে দুর্গাপুর যেতে হয় প্রতিদিন। ফলে সময়ে বাস না পেয়ে ভোগান্তি প্রায় রোজকার ঘটনা হয়ে দাঁড়িয়েছে এলাকায়। বাসের সংখ্যা বাড়ানোর আর্জি জানিয়ে জেলাশাসককে চিঠিও দিয়েছেন তাঁরা।
সিলামপুর আর দুর্গাপুরের মধ্যে দ্রুত এবং সহজে যোগাযোগ করার লক্ষ্যে এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। রাস্তার দু’পাশ ধরে গ্রামও রয়েছে বেশ কয়েকটা। আয়মা, কেটেন, মোবরকগঞ্জ, ধোবাঘাটা, বাবনাবেড়া, গাংবিল ইত্যাদি গ্রামের বাসিন্দাদের দুর্গাপুরে যাওয়ার একমাত্র ভরসা এই রুটে চলা খানকয়েক বাস। তাও দিনের সবসময় বাস পাওয়া যায় না বলে অভিযোগ তাঁদের। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, সিলামপুর থেকে নডিহা হয়ে দুর্গাপুর যাওয়ার জন্য বাসের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম হওয়ায় বেশিরভাগ সময়েই বাস পান না তাঁরা। ফলে ঘুরপথে পানাগড় হয়ে দুর্গাপুর যেতে হয়। ফলে যানজটে আটকে সময়ও বেশি লাগে, খরচও বেশি হয়। |
এছাড়া আশপাশের বিভিন্ন গ্রামে যাতাযাতের জন্যও এই রাস্তা ব্যবহার করতে হয়। অর্থাত্ এলাকার মানুষের স্কুল, কলেজ, অফিস, কাছারি, হাসপাতাল ইত্যাদি প্রায় সমস্ত প্রয়োজনে নির্ভর করতে হয় এই রাস্তার উপরে। সিলামপুরের বাসিন্দা খাদেম মোহর আলি বলেন, “রুটে বাস কম হওয়ায় নিজেদের সময়মতো দুর্গাপুরে যাওয়াআসা করতে পারি না। বাস বাড়ালে সাধারণের খুব উপকার হয়।”
স্থানীয়রাই জানান, এলাকায় বেশ কয়েকটি স্কুল, ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন সরকারি দফতর ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র রয়েছে। বাইরে থেকেও অনেকেই এলাকায় কাজ করতে আসেন। নডিহা বা তার আশপাশের এলাকা থেকে সিলামপুর স্কুলে অনেক শিক্ষক এবং ছাত্রও আসেন। স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল জানান, দুর্গাপুরের সঙ্গে গ্রামীণ এলাকার যোগাযোগ বাড়াতে এই রাস্তা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু বাস না থাকায় মানুষ সেই সুবিধা নিতে পারছেন না। তিনি আরও জানান, আশপাশের যে ছাত্ররা স্কুলে পড়তে আসে রুটের বাসই ভরসা তাদের। কিন্তু মাঝেমধ্যেই বাস না পাওয়ায় স্কুলে দেরিতে পৌঁছয় তারা। বিশেষত পরীক্ষার সময় যদি কোনও কারণে বাস বন্ধ থাকে বা একটা বাস হাতছাড়া হয় তাহলে রীতিমতো সমস্যায় পড়তে হয় তাদের। নডিহা থেকে সিলামপুর স্কুলে পড়তে আসা নবম শ্রেণির এক ছাত্র বিধান বাগদি বলে, “আমার প্রায় দিনই বাসের কারণে স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যায়। আর সময়ে বাস পেলেও এত ভিড় থাকে যে বাসে চাপতে পারি না।” শুধু ছাত্ররাই নয়। একই অসুবিধায় পড়েন স্কুলের বেশ কিছু শিক্ষকও। এমনই একজন শিক্ষক চঞ্চল রুইদাস বলেন, “স্কুলে আসার জন্য এই রাস্তা দিয়েই বাসে যাতায়াত করি। বাসের সংখ্যা কম হওয়ায় স্কুল যেতে বা স্কুল থেকে ফিরতে অনেকসময় দেরি হয়ে যায়। যদি এই রুটে বাসের সংখ্যা বাড়ে তাহলে আমার মতো অনেকেই উপকৃত হবেন।” স্কুলের প্রধান শিক্ষক সুকুমার পাল বলেন, “আমি এই সমস্যার কথা জানিয়ে গ্রামবাসীদের তরফে জেলাশাসককে চিঠি দিয়েছি। তিনি যদি কিছু ব্যবস্থা করেন তাহলে অঞ্চলের বহু মানুষের উপকার হয়।”
এ প্রসঙ্গে জেলাশাসক ওঙ্কার সিংহ মিনার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা হবে। তিনি বলেন, “যদি কেউ এই রুটে বাস চলানোর জন্য পারমিট চান তাহলে সে বিষয়ে আমি যথাযোগ্য ব্যবস্থা নেব।” |