বেআইনি ভাবে মজুত করা রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ফেটে যাওয়ায় আগুনে পুড়ে গেল একটি বাড়ি। অগ্নিদগ্ধ হন এক বালক-সহ চার জন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। রবিবার দুপুরে দুর্ঘটনাটি ঘটে ভদ্রেশ্বরের কুটোচণ্ডীতলা অঞ্চলে। দীর্ঘদিন ধরে সমর চৌধুরী নামে ওই বাড়ির মালিক বেআইনি ভাবে সিলিন্ডারের গ্যাস অটো-সহ বিভিন্ন গাড়িতে জ্বালানি হিসেবে ভরে দেওয়ার ব্যবসা করতেন বলে অভিযোগ তুলেছেন এলাকার লোকজন।
এসডিপিও (চন্দননগর) সৈকত ঘোষ বলেন, “যে ব্যবসা এখানে চলত, তা সম্পূর্ণ বেআইনি। মামলা শুরু করা হয়েছে। সব দিক খতিয়ে দেখে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
|
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, সমরবাবুর সিলিন্ডারগুলি রাখা থাকত তাঁর একতলা বাড়ি লাগোয়া টিনের ছাউনি দেওয়া একটি ঘরে। এ দিন দুপুর সওয়া একটা নাগাদ একটি সিলিন্ডার থেকে গ্যাস লিক করছে দেখে সমরবাবু তা দেখতে যান। তখনই অন্য দু’টি সিলিন্ডার ফাটে। সমরবাবু ছাড়াও অগ্নিদগ্ধ হন তাঁর বোন বেবি চৌধুরী এবং ভাড়াটে রঞ্জিত রায় ও তাঁর শ্যালিকার ছেলে বছর বারোর রণজিৎ প্রামাণিক। বিস্ফোরণের শব্দে সমরবাবুর বাড়ির টিনের চাল উড়ে যায়। আগুনে পুড়ে যায় বাড়ির আসবাবপত্র-সহ অনেক জিনিসপত্র। আহতদের চন্দননগর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সমরবাবু ও তাঁর বোনের অবস্থা গুরুতর হওয়ায় পরে তাঁদের স্থানান্তরিত করানো হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। দমকলের একটি ইঞ্জিন এসে আগুন নেভায়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লিক হওয়া সিলিন্ডারটি উদ্ধার করে পুকুরে ফেলে দেয়। বাড়িটি দড়ি দিয়ে ঘিরে দেয় পুলিশ।
স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, এলাকাটি ঘনবসতিপূর্ণ হওয়ায় সমরবাবুকে একাধিকবার ব্যবসা অন্যত্র সরানোর জন্য বলা হলেও তিনি শোনেননি। বিষয়টি পুলিশকেও জানানো হয়েছিল। পুলিশ অবশ্য দাবি করেছে, এ পর্যন্ত সমরবাবুর বেআইনি ব্যবসা নিয়ে কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি।
সমরবাবুর প্রতিবেশী সুভাষ নিয়োগী বলেন, “বিস্ফোরণে আমাদের বাড়ির জানালার কাচ ভেঙে যায়। বাইরে বেরোতেই দেখি সমরদের বাড়ি জ্বলছে। উদ্ধার করার সময়ে সমর বলছিল, ওর বিড়ির আগুন থেকেই এই দুর্ঘটনা। ওকে অনেক বার বারণ করেছিলাম ব্যবসা এখানে না করতে। ও শোনেনি।” একই কথা বলছেন অন্য প্রতিবেশীরাও।
|
