বাড়ি তৈরির টাকা দাবি ময়ূরেশ্বরে |
আগুনে স্কুল ছাত্রের মৃত্যু মহম্মদবাজারে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মহম্মদবাজার ও ময়ূরেশ্বর |
গরম পড়তে না পড়তেই প্রায় প্রতিদিনই বাড়িতে আগুন লাগার ঘটনা ঘটছে। রবিবার দুপুরেই আগুনে পুড়ে মৃত্যু হল সহিম শেখ নামে প্রথম শ্রেণির এক ছাত্রের। এ বারের ঘটনাস্থল মহম্মদবাজারের কাঁইজুলি। এ দিন সে সমবয়সী ভাগনির সঙ্গে খেলা করছিল। দাদা মনি শেখ বলেন, “আমরা ঘরে শুয়েছিলাম। হঠাৎ আগুন আগুন চিৎকার শুনে বেরিয়ে দেখি এক আত্মীয়ের বাড়ি জ্বলছে। পাড়াপড়শিরা মিলে আগুন নেভানোর চেষ্টা করি। দমকলের একটি ইঞ্জিনও আসে। আগুন নিভে গেলেও ভাইকে খুঁজে পাইনি। পরে ভাগনি জানায়, ওরা দু’জনে খেলছিল। আগুন দেখে সে ছুটে বাইরে চলে যায়। কাউকে কিছু বলতে পারেনি।” বলতে বলতে তাঁর গলা ধরে আসছিল। পরে তাঁরা ছাই, আসবাবপত্র সরিয়ে ভাইয়ের দেহ উদ্ধার করেন। পুলিশ জানায়, কাঠ ও ঘুটের উনুনে অনেক সময় আগু থেকে যায়। সেখান থেকে কোনও ভাবে আগুন ছড়ায় বলে মনে করছে পুলিশ।
অন্য দিকে, চড়া রোদ থেকে বাঁচতে ত্রাণ সামগ্রীর পরিবর্তে বাড়ি নির্মাণের জন্য অনুদানের টাকা চান ময়ূরেশ্বরের আগুনে ক্ষতিগ্রস্ত বাসিন্দারা। শুক্রবার আগুনে ময়ূরেশ্বরের টেকেড্ডা গ্রামে ৫৩ ও বাজিতপুরে ১৬টি বাড়ি পুড়ে গিয়েছে। প্রশাসন ছাড়াও ওই সব ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলির জন্য সাহায্যের হাত বাড়িয়েছে বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী ও ধর্মীয় সংগঠন। ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে শনিবার গ্রামে গিয়েছিলেন সাঁইথিয়ার একটি ধর্মী সংগঠনের প্রতিনিধিরা। রবিবার টেকেড্ডা গ্রামে বাসনপত্র ও জামাকাপড় বিলি করে মল্লারপুরের একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা।
প্রশাসনের তরফে ইতিমধ্যে পূর্ণবয়স্কদের জন্য মাথা পিছু ১২ কেজি ও বাচ্চাদের জন্য ৬ কেজি চাল মিলেছে। পরিবার পিছু নগদ টাকা, রান্নার সরঞ্জাম, পোশাক, ত্রিপল দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ত্রিপলের চাউনি দেওয়া ঝুপড়িতে নাভিশ্বাস উঠছে দুর্গতদের। টেকেড্ডার কল্যাণী লেট, সুকুমার লেট, বাজিতপুরের সুধা কর্মকার, ঝিন্টু মালরা বলেন, “রোদে পলিথিলের ত্রিপল এত গরম হয়ে যাচ্ছে, বেশিক্ষণ ভিতরে থাকা যাচ্ছে না। এর পরে ঝড়ে সব উড়িয়ে নিয়ে গেলে আমাদের গাছতলায় থাকতে হবে। এসডিও, বিডিওকে সমস্যার কথা জানানো হয়েছে।” এ দিনই ওই দুই গ্রামে যান রামপুরহাট মহকুমাশাসক রত্নেশ্বর রায় ও ময়ূরেশ্বর ১ ব্লকের বিডিও বিশ্বনাথ চক্রবর্তী। বিডিও বলেন, “দুর্গতরা বাড়ি নির্মাণের জন্য অনুদান পাবেন। সম্পূর্ণ ক্ষতিগ্রস্তরা সর্বাধিক ১০ হাজার ও আংশিক ক্ষতিগ্রস্তরা ২৫০০ টাকা পাবেন। এ ছাড়া, ইন্দিরা আবাস যোজনায় তাঁরা যাতে অনুদান পান সে জন্য পঞ্চায়েত স্তরে সমীক্ষার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।” |