নির্দেশই যায়নি সব কেন্দ্রে
ব্রিজ কোর্সে গিয়েও হয়রানির শিকার শিক্ষকরা
স্কুল সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা, প্রাথমিকে শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষার পরে এ বার কর্মরত প্রাথমিক শিক্ষকদের ব্রিজ কোর্স করানোর ক্ষেত্রেও অব্যবস্থার অভিযোগ উঠল। অব্যবস্থা এতটাই যে, শনিবার এই প্রশিক্ষণ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও অনেক কেন্দ্রেই তা হয়নি। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের দিনভর হয়রানির পরে প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদ স্বীকার করে নিয়েছে, দুই দফতরের সমন্বয়ের অভাবেই সমস্যা হয়েছে।
শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণের ভার প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। আর যে সব বি এড কলেজে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে, সেগুলি উচ্চশিক্ষা দফতরের অধীন। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামধাম জানিয়ে দেওয়া হলেও অনেক ক্ষেত্রেই সংশ্লিষ্ট বি এড কলেজে সরকারি নির্দেশ পৌঁছয়নি।
ন্যাশনাল কাউন্সিল ফর টিচার এডুকেশন (এনসিটিই)-র নিয়মে এক বছরের প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত কর্মরত সব প্রাথমিক শিক্ষককেই এক বছরের ব্রিজ কোর্স করতে হবে। রাজ্যে এমন শিক্ষকের সংখ্যা প্রায় ২১ হাজার। শনি-রবি ও অন্যান্য ছুটির দিনে এই প্রশিক্ষণ হওয়ার কথা। কিন্তু প্রশিক্ষণ যেখানে হবে সে সব কলেজের অধিকাংশই পর্ষদের নির্দেশিকা না পাওয়ায় দিনভর রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে ফিরে যেতে হয় অনেক শিক্ষক-শিক্ষিকাকে।
কোথাও কোথাও বিক্ষোভও দেখিয়েছেন তাঁরা। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সভাপতি মানিক ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘সামান্য বোঝাপড়ার অভাবে এমন হয়েছে।”
ক্লাস হচ্ছে না। ক্ষুব্ধ শিক্ষিকারা। শ্রী শিক্ষায়তন কলেজে। —নিজস্ব চিত্র
উচ্চশিক্ষা দফতর ও স্কুলশিক্ষা দফতরের মধ্যে বোঝাপড়া না করেই ব্রিজ কোর্স চালু হল কেন? পর্ষদ সূত্রের খবর, এনসিটিই-র প্রতিনিধি দলের কাল, সোমবার রাজ্যে পরিদর্শনে আসার কথা। ব্রিজ কোর্স যে শুরু হয়ে গিয়েছে, তা তাঁদের দেখানোর জন্যই এই তাড়াহুড়ো।
ব্রিজ কোর্সের প্রশিক্ষণকেন্দ্র নিয়ে কয়েক দিন ধরেই ক্ষোভ জমছিল শিক্ষক-শিক্ষিকাদের একাংশের মধ্যে। কারও কারও অভিযোগ, প্রশিক্ষণের জন্য বাড়ি থেকে ২০০ কিলোমিটার দূরের কেন্দ্র নির্দিষ্ট করা হয়েছে। সদুত্তর নেই মানিকবাবুর কাছে।
গত রবিবার প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষায় বসতে গিয়ে যেমন জেলায় জেলায় হয়রান হয়েছিলেন প্রার্থীরা, এ দিনও সেই ছবি দেখা গেল জেলায় জেলায়। পূর্ব মেদিনীপুরের তমলুক কলেজে প্রায় ১০০ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে ফিরে যেতে বাধ্য হন। পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি নীলকমল মাহাতো জানান, ওই জেলার কিছু শিক্ষককে ব্রিজ কোর্সের জন্য বর্ধমানের শক্তিগড়, লাউদোহা ও ভাতারে যেতে বলা হয়েছিল। ওই সব জায়গাতেও এ দিন ক্লাস হয়নি।
এবিপিটিএ-র বাঁকুড়া জেলা সম্পাদক হীরালাল পাল বলেন, “আমাদের জেলার কিছু প্রাথমিক শিক্ষককে পাঠানো হচ্ছে পুরুলিয়া, পশ্চিম মেদিনীপুরে।” জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি রিঙ্কু বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “পর্ষদকে বিষয়টি মৌখিক ভাবে জানিয়েছি।” কোথাও আবার প্রশিক্ষণের জন্য প্রার্থীদের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার অভিযোগও এসেছে। মানিকবাবু জানিয়েছেন, প্রশিক্ষণের খরচ বহন করবে সরকার। প্রার্থীদের থেকে টাকা নিলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
একই হয়রানি কলকাতাতেও। যেমন, গড়ফা জগদীশচন্দ্র বসু শিক্ষক মহাবিদ্যালয়ে পর্ষদের নির্দেশিকা না আসায় দীর্ঘক্ষণ রাস্তায় দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করে ফিরে যান শিক্ষক-শিক্ষিকারা। একই ঘটনা ঘটেছে শ্রী শিক্ষায়তন কলেজ, মুকুন্দপুর সম্মিলনী টিচার্স ট্রেনিং কলেজ, ডেভিড হেয়ার ট্রেনিং কলেজ ইত্যাদি প্রতিষ্ঠানেও। মানিকবাবু অবশ্য আশ্বাস দিয়েছেন, আগামী সপ্তাহের মধ্যে সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে।
কর্মরত যে সব শিক্ষকের আদৌ প্রশিক্ষণ নেই, এনসিটিই-র নিয়মে তাঁদের দু’বছরের প্রশিক্ষণ নিতে হবে। এই প্রশিক্ষণের দায়িত্বও প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের। এই প্রশিক্ষণও শুরু হওয়ার কথা আজ, রবিবার। রাজ্যে ৪৮ হাজার শিক্ষককে এই প্রশিক্ষণ নিতে হবে। তাঁদের যাতে সমস্যা না হয়, সেই চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন পর্ষদ সভাপতি।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.