প্রদেশ যুব কংগ্রেসের নতুন সভাপতি নির্বাচিত হলেন রেলের প্রতিমন্ত্রী অধীর চৌধুরীর স্নেহধন্য সৌমিক হোসেন। তাঁর প্রধান প্রতিপক্ষ ছিলেন কেন্দ্রীয় নগরোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী দীপা দাশমুন্সির ঘনিষ্ঠ অরিন্দম ভট্টাচার্য। গত বারও সভাপতির পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে সাংসদ মৌসম বেনজির নূরের কাছে হেরেছিলেন অরিন্দম। এ বার তিনি সৌমিকের কাছে পরাস্ত হলেন।
|
জয়ের পরে সৌমিক হোসেন।
—নিজস্ব চিত্র। |
কংগ্রেস অন্দরে শিবির রাজনীতির ট্র্যাডিশন যুব কংগ্রেস সভাপতি নির্বাচন ঘিরেও ছিল। এ বারের লড়াই ছিল কার্যত দীপা-অধীর শিবিরে। মুর্শিদাবাদের সাংসদ মান্নান হোসেনের পুত্র সৌমিককে জয়ী করতে অধীর-ঘনিষ্ঠরা তো বটেই, মানস ভুঁইয়া, অজয় দে, আব্দুল মান্নান, অমিতাভ চক্রবর্তীর মতো প্রদেশ কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা সক্রিয় ছিলেন। তবে দীপা এ দিন স্পষ্ট জানিয়েছেন, এ বার প্রদেশ যুব কংগ্রেস সভাপতি ভোটের সঙ্গে কোনওভাবেই তিনি যুক্ত ছিলেন না। দীপার কথায়, “গতবার অরিন্দম নতুন ছিল বলে ওকে ভোট প্রক্রিয়ায় সহযোগিতা করেছিলাম। আমি তো এ বার ভোট প্রক্রিয়ার মধ্যেই ছিলাম না। ভোটে হেরে তো কেউ বিদায় নেয়নি। অরিন্দম তো সহ সভাপতি হয়েছে।” দলের যুব সংগঠনের সভাপতি নির্বাচনে অধীর-দীপা শিবিরের বিভাজন থাকলেও, মুর্শিদাবাদে কংগ্রেসে এই সমস্যা কিছুটা কমবে বলেই ধারণা দলীয় নেতৃত্বের একাংশের। কারণ অধীরের সঙ্গে দীর্ঘদিন ধরে সৌমিকের বাবা মান্নানের বিরোধ সুবিদিত। এ বারের ভোটে সৌমিককে সমর্থন করেছিলেন অধীর। তাই, এই ভোটের সূত্রে অধীর-মান্নান দূরত্ব কমার সম্ভাবনা রয়েছে বলে ওই নেতারা আশা করছেন। পঞ্চায়েত ভোটের মুখে এটা সংগঠনের পক্ষে স্বস্তিকর বলে তাঁরা মনে করেন। পারিবারিক রাজনীতির বৃত্তে বেড়ে ওঠা ছেলে দলের যুব নেতা নির্বাচিত হওয়ায় আপ্লুত মান্নান হোসেন বলেন, “যুব সংগঠনকে আগামী দিনে সৌমিক আরও শক্তিশালী করতে পারবে, এই আশা ভরসা আমার রয়েছে।” সৌমিকের বক্তব্য, “পঞ্চায়েত ভোটে দলের সাংগঠনিক শক্তি আরও বাড়াতে চাই সংগঠনের আন্দোলনের মধ্য দিয়ে। চেষ্টা করব পঞ্চায়েতে যুব প্রতিনিধি যত বেশি সম্ভব দেওয়ার। এ জন্য প্রদেশ সভাপতির সঙ্গে কথা বলব।” যুব সম্প্রদায়কে আরও বেশি করে রাজনীতির বৃত্তে এনে মানুষের সঙ্গে সংযোগ বাড়ানোর যে স্বপ্ন দলের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী দেখছেন, তাকেই বাস্তব করতে চান সৌমিক।
গত বার যুব সভাপতি নির্বাচনের দিন নজরুল মঞ্চে গণ্ডগোল হয়েছিল, তার পুনরাবৃত্তি যাতে না ঘটে, তার জন্য এ বার বদল হয়েছিল ভোট প্রক্রিয়ায়। নির্বাচিত বুথ ভিত্তিক সদস্যরা প্রত্যেকে বিধানসভা, লোকসভা এবং রাজ্য স্তর তিনটি ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা ভাবে ভোট দিয়েছিলেন। গত ৩ এবং ৪ এপ্রিল ভোটদানের পরে প্রতিটি বিধানসভা এবং লোকসভা কেন্দ্রের ভোটবাক্স গণনা হয়ে গিয়েছে। রাজ্য স্তরের ব্যালট গণনা হয় প্রদেশ কংগ্রেস দফতরে। এই গণনাকে ঘিরে প্রদেশ দফতরে ছিল কড়া নিরাপত্তা বলয়। |