|
|
|
|
বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় |
এ বার রাজ্যপালের কাছে উপাচার্যের বিরুদ্ধে নালিশ |
নিজস্ব সংবাদদাতা • মেদিনীপুর |
বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘শিক্ষার পরিবেশ বাঁচাতে’ রাজ্যপাল এম কে নারায়ণনের দ্বারস্থ হতে চান বলে জানিয়েছিলেন বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য রঞ্জন চক্রবর্তী। তার আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধেই একগুচ্ছ অভিযোগ তুলে আচার্য তথা রাজ্যপালকে চিঠি পাঠালেন শিক্ষক, আধিকারিক ও শিক্ষাকর্মীদের একাংশ। দুর্নীতি, অস্বচ্ছতা-সহ মোট ১০টি অভিযোগ লিখিত ভাবে শুক্রবার রাজ্যপালের কাছে পাঠানো হয়েছে বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর।
উপাচার্য বলেছেন, “কেউ অভিযোগ জানাতেই পারেন। আমি স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করতে চাই। আমার লক্ষ্য, অশুভ শক্তিকে পরাস্ত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিকাঠামো ও শিক্ষার মানোন্নয়ন।” রাজ্যে পালাবদলের পরেই রঞ্জনবাবু উপাচার্যের দায়িত্ব পান। কিন্তু কাজ করতে গিয়ে পদে পদে ‘সমন্বয়ের অভাবে’ সমস্যায় পড়েন। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের দাবি, তার কারণ তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। মুকুল রায়ের অনুগামী তথা মন্ত্রী সৌমেন মহাপাত্রর গোষ্ঠীর সঙ্গে তমলুকের সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠদের বিরোধ। এই পরিস্থিতিতে রাশ টানতে চেয়েই রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করতে আগ্রহী হন উপাচার্য। সে জন্য তড়িঘড়ি তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে দু’গোষ্ঠীর তরফে। অভিযোগপত্রে ৩০ জনের সই রয়েছে। শুভেন্দুবাবু মন্তব্য করতে চাননি। সৌমেনবাবু বলেন, “আমার কোনও গোষ্ঠী নেই। কাদা ছোড়াছুড়ি বন্ধ হোক, এটাই চাই। সে জন্য সাহায্য করতেও রাজি।”
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রের খবর, উপাচার্যের বিরুদ্ধে প্রধান অভিযোগ মূলত ক্ষমতার অপব্যবহার ও দুর্নীতির। অভিযোগ, সম্প্রতি ৪০ জন শিক্ষক নিয়োগের সময় অন্তত ১৫ জনের ক্ষেত্রে অনিয়ম হয়েছে। ‘ডিন অফ স্টুডেন্টস ওয়েলফেয়ার’ নিয়োগে নিয়ম মানা হয়নি। উপাচার্যের হাজিরা অনিয়মিত, তিনি দু’-তিন দিনের বেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকেন না, ছুটির দিনেও গাড়ির তেলের বিল করেন, যে বৈঠক ৪-৫ হাজার টাকা খরচে হয়ে যায়, সেখানে উপাচার্য ৫০-৬০ হাজার টাকা খরচ করেন এমনই নানা অভিযোগও করা হয়েছে।
এই সব তো বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ তদন্তেও যাচাই করা যেত? অভিযোগকারীদের ব্যাখ্যা, “অভ্যন্তরীণ কমিটিকে দিয়ে তদন্ত হলে তার উপরে প্রভাব খাটানোর সুযোগ থাকে। আমরা চাই, আচার্য নিরপেক্ষ তদন্তের ব্যবস্থা করুন।” অভিযোগকারীদের অন্যতম, তৃণমূলপন্থী শিক্ষক সংগঠন ‘ওয়েবকুপা’র বিশ্ববিদ্যালয় ইউনিটের আহ্বায়ক ইন্দ্রাণী দত্ত চৌধুরীর বক্তব্য, “বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন হচ্ছে। কিন্তু আর্থিক নয়ছয়-সহ নানা অভিযোগ যখন উঠেছে, তারও তদন্ত হওয়া উচিত।” শিক্ষক-আধিকারিকদের একাংশের মতে, উপাচার্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মানোন্নয়নের চেষ্টা চালাচ্ছেন, এটাই অনেকে মেনে নিতে পারছেন না। ‘ইনস্পেক্টর অফ কলেজেস’ বিনয় চন্দর কথায়, “এখন দ্রুত গতিতে উন্নয়নের কাজ চলছে। উন্নয়ন-বিরোধীরা তাতেই ক্ষুব্ধ।” এই অবস্থায় কবে রাজ্যপালের সঙ্গে দেখা করার অনুমতি মেলে, সেই অপেক্ষাতে রয়েছেন উপাচার্য। |
|
|
|
|
|