এলাকা পরিদর্শনে দুই মন্ত্রী
বাম আমলে বাতিল বায়ু-বিদ্যুৎ প্রকল্প ফের গড়তে তৎপরতা
বাম আমলে যে বায়ু-বিদ্যুৎ প্রকল্প পরিবেশ ও জমি ক্ষতিপূরণ সংক্রান্ত সমস্যায় ভেস্তে গিয়েছিল, সেই প্রকল্পই ফের বাস্তবায়িত করতে উদ্যোগী হল রাজ্য সরকার। পূর্ব মেদিনীপুরের রামনগরে দাদনপাত্রবাড় এলাকায় এই প্রকল্প গড়ে ওঠার কথা। শনিবার ওই এলাকা পরিদর্শনে যান বিদ্যুৎমন্ত্রী মণীশ গুপ্ত এবং সেচমন্ত্রী তথা পশ্চিমবঙ্গ পুনর্নবীকরণ যোগ্য শক্তি উন্নয়ন সংস্থা (ওয়েবরেডা)-র সহ-সভাপতি রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।
৫০০ কোটি টাকার এই প্রকল্পে ৪০০ কোটিই বেসরকারি বিনিয়োগে আসবে বলে দাবি করেন বিদ্যুৎমন্ত্রী। বাকি ১০০ কোটি টাকা দেবে রাজ্য। কিন্তু কোন সংস্থা বিনিয়োগ করবে তা জানাতে পারেননি মণীশবাবু। তাঁর কথায়, “কোন সংস্থা তা এখনও ঠিক হয়নি। এ রকম প্রকল্প করা যেতে পারে, তাই এলাকাটি দেখে গেলাম। ফিরে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রীকে বিষয়টি জানাব।”
শনিবার দাদনপাত্রবাড়ে মণীশ গুপ্ত এবং রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়।—নিজস্ব চিত্র।
এ দিন দিঘায় সেচ দফতরের বাংলোয় সাংবাদিক বৈঠক করেন দুই মন্ত্রী। মণীশবাবু জানান, মন্দারমণি পর্যটনকেন্দ্র-সহ দাদনপাত্রবাড় এলাকায় দূষণমুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার জন্যই এই বায়ু-বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিকল্পনা। প্রকল্প রূপায়িত হলে দিনে ৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপন্ন হবে। এলাকায় ‘ইকো ট্যুরিজম পার্ক’ গড়ে তোলা হবে বলেও জানান মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর কথায়, “সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাসে ওই প্রকল্পের জমি জলমগ্ন হওয়ার বা ক্ষয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে কি না, তা সেচ দফতর দেখছে।” পযর্টন সচিব বিক্রম সেন জানান, বিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকার পরিকাঠামো উন্নয়নের পরে ‘ইকো-ট্যুরিজম’ পার্কের পরিকল্পনা হবে।
বর্তমানে ডিজেল পুড়িয়ে বিদ্যুৎ ব্যবস্থা সচল রাখা হয়েছে মন্দারমণি ও লাগোয়া এলাকায়। দূষণ এড়াতেই পরিবেশবান্ধব বায়ু-বিদ্যুতের পরিকল্পনা হয়েছিল বাম আমলে। সিপিএমের প্রাক্তন সাংসদ প্রশান্ত প্রধান বলেন, “ওই সময় একটি সমীক্ষা করিয়েছিলাম। দাদনপাত্রবাড়ের এই এলাকা বঙ্গোপসাগরের ‘সাইক্লোন জোনে’ পড়ায় কেন্দ্রের পরিবেশ সংক্রান্ত অনুমতি মেলেনি।” প্রশান্তবাবুর মতে, “এই সমস্যা এখনও আছে। ফলে, বায়ু-বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। তা সত্ত্বেও পঞ্চায়েত ভোটের আগে চমক দিতে চাইছে তৃণমূল।” মন্ত্রীদের সঙ্গে এ দিন এলাকায় যাওয়া তৃণমূল সাংসদ শিশির অধিকারী অবশ্য দাবি করেন, “মুখ্যমন্ত্রী নিজে বিষয়টি দেখছেন। এ সব কোনও সমস্যা হবে না।”
বায়ু-বিদ্যুৎ প্রকল্পটি গড়ে তুলতে ৭০০ একর জমি প্রয়োজন। আর দাদনপাত্রবাড়ের এই এলাকায় জমি রয়েছে ১৫১৭ একর। তার মধ্যে ৭৭৯ একর লবণ প্রস্তুতকারী সংস্থা ‘বেঙ্গল সল্ট কোম্পানি’র। বাকি ৭৩৮ একরে রয়েছে মৎস্য দফতর ও বিশ্ব ব্যাঙ্কের যৌথ উদ্যোগে গড়ে তোলা বাগদা খামার। তবে লবণ কারখানা ও খামার দুই-ই দীর্ঘ দিন ধরে পরিত্যক্ত। ‘বেঙ্গল সল্ট কোম্পানি’র কর্মীদের বকেয়া টাকা মিটিয়ে জমি হস্তান্তরের জটিলতায় বাম আমলে আর প্রকল্প এগোয়নি। এখন জমি কোনও সমস্যা হবে না বলেই দাবি ‘ওয়েবরেডা’-র সহ-সভাপতি তথা মন্ত্রী রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের। তাঁর কথায়, “শিল্প পুনর্গঠন দফতরের হাতে প্রস্তাবিত প্রকল্পের জমি রয়েছে। তারাই জমিটি হস্তান্তর করবে। এতে কোনও জটিলতা হবে না।” ‘বেঙ্গল সল্ট কোম্পানি’কে ক্ষতিপূরণ বাবদ ২ কোটি টাকা রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়ার ভাবা হচ্ছে বলেও প্রশাসন সূত্রের খবর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.