|
|
|
|
শ্লীলতাহানি, যুব তৃণমূল নেতা ধৃত এক মাস পরে |
নিজস্ব সংবাদদাতা • ঝাড়গ্রাম |
অবশেষে গ্রেফতার হলেন আদিবাসী মহিলাদের শ্লীলতাহানিতে অভিযুক্ত বিনপুরের যুব তৃণমূল নেতা জলধর পণ্ডা। ঘটনার এক মাসেরও বেশি পরে শনিবার জলধর-সহ পাঁচ জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। শ্লীলতাহানি ছাড়াও আদিবাসী নিগ্রহ-প্রতিরোধ আইনে মামলা হয়েছে। ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য জেল হেফাজতে পাঠিয়েছে ঝাড়গ্রাম আদালত।
এ ক্ষেত্রেও সামনে এসেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব। বিনপুর ১ ব্লক যুব তৃণমূলের সহ-সভাপতি জলধর ও তাঁর সঙ্গীরা সাংসদ শুভেন্দু অধিকারীর ঘনিষ্ঠ। ১২ এপ্রিল বিনপুরে কর্মী সম্মেলন ডেকেছেন শুভেন্দু। তাঁর আগে জলধরদের গ্রেফতার আসলে শুভেন্দু-গোষ্ঠীকে দুর্বল করে দেওয়ার চেষ্টা বলে তৃণমূলেরই একাংশের অভিমত। জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব অবশ্য এ সব মানতে নারাজ। |
|
ধৃত জলধর পণ্ডা।—নিজস্ব চিত্র। |
শুক্রবার আদালতে গোপন জবানবন্দি দেন এক নির্যাতিতা ও এক প্রত্যক্ষদর্শী মহিলা। জলধরের প্রাক্তন দেহরক্ষী পুলিশকর্মী চুনারাম মুর্মুরও জবানবন্দি নেওয়া হয়। তারপরই এ দিন বিনপুর-লালগড়ের বিভিন্ন গ্রাম থেকে ধরা হয় জলধর মাহাতো, শান্তনু ঘোষ, বংশী চালক, অনাদি মাহাতো ও দিলীপ মাহাতোকে। নির্যাতিতারা ঝাড়খণ্ডী সমর্থক। যদিও এই গ্রেফতারে আশার আলো দেখছেন না ঝাড়খণ্ড পার্টি (নরেন)-এর নেত্রী চুনিবালা হাঁসদা। তাঁর বক্তব্য, “এক মাস টালবাহানার পরে এই গ্রেফতার পঞ্চায়েত ভোটের আগে শাসকদলের মুখ বাঁচানোর চেষ্টা।”
যুব-তৃণমূলের পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা সভাপতি শ্রীকান্ত মাহাতো এ নিয়ে মন্তব্য করতে চাননি। তবে জেলা তৃণমূলের কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষ বলেন, “দল বা সংগঠনের কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়।” শ্লীলতাহানির অভিযোগটি ওঠে গত ৩ মার্চ। মাগুরা ও আঁকরো গ্রামে দুই ঝাড়খণ্ডী কর্মীর বাড়িতে হামলার সময় জলধর ও তাঁর দলবল পরিবারের মহিলাদের শ্লীলতাহানি করে বলে অভিযোগ। ওই দিনই বিনপুর থানায় সাত জনের নামে অভিযোগ দায়ের হয়। কিন্তু পুলিশ ব্যবস্থা না নেওয়ায় রাজ্য মানবাধিকার কমিশন, মহিলা কমিশন-সহ নানা মহলে বিষয়টি জানান নির্যাতিতারা।
গোটা ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে শাসকদল। জলধরের নিরাপত্তায় থাকা দুই পুলিশকর্মীকে সরানো হয়। ১৯ মার্চ বিনপুরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসভা চলাকালীন থানায় বসিয়ে রাখা হয় জলধরকে। সভায় ভিড় না হওয়ার জন্য জলধরের আচরণ অন্যতম কারণ বলেও অভিযোগ ওঠে।
এই পরিস্থিতিতে জলধরের গ্রেফতার তৃণমূলের ভাবমূর্তি ফেরানোর চেষ্টা বলে মনে করছেন তৃণমূলেরই একাংশ। |
|
|
|
|
|