সৌরভের সঙ্গে কমেন্ট্রির স্বপ্ন ‘ভবঘুরে’ দেবেন্দ্র-র
‘ওয়েলকাম টু সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ড...ইটস ইন্ডিয়া ভার্সাস অস্ট্রেলিয়া...মহেন্দ্র সিংহ ধোনি ওন দ্য টস অ্যান্ড ডিসাইডেড টু ব্যাট ফার্স্ট...দেয়ার ইজ ওনলি ওয়ান চেঞ্জ ইন দ্য ইন্ডিয়ান টিম...হর্ষ হোয়াট ডু ইউ থিঙ্ক...?’
দুুপুর তিনটে। কাঠফাটা রোদ উপেক্ষা করে আরসিএ অ্যাকাডেমির চেয়ারে মাথা দুলিয়ে ‘কমেন্ট্রি’ করে চলেছেন সাতাশ বছরের এক যুবক। সাধারণ, অতি সাধারণ চেহারা। রংচটা লাল টি-শার্ট, দিনদশেক না কাচা জিনস। এক টিভি চ্যানেলের রিপোর্টার ক্রমাগত খুঁচিয়ে চলেছে, “ক্যায়া রে? হুয়া তেরা? আমাদের হয়ে আজকের রাজস্থান ম্যাচে কমেন্ট্রি করবি না?”
উত্তরে বোকা-বোকা একটা হাসি। তারপর ছোট্ট উত্তর, “আভি আয়া।”
কে রে বাবা, পাগল নাকি? কেউ কোথাও নেই, ফাঁকা নেটের দিকে তাকিয়ে কমেন্ট্রির নামে এমন ‘প্রলাপ’-এর মানে কী? অর্ধোন্মাদ বললেও বুঝি অর্ধসত্য হবে। ইনি পুরোদস্তুর উন্মাদ। তবে ক্রিকেট নিয়ে। থুড়ি, কমেন্ট্রি নিয়ে। ব্যাট-বল নিয়ে নেমে পড়ার ইচ্ছে এঁর কস্মিনকালেও ছিল না, ভবিষ্যতেও নেই।
ইনি দেবেন্দ্র কুমার। নিবাস, যোধপুর। পেশায়, ভবঘুরে কমেন্টেটর! বিনাপয়সায় কমেন্ট্রির ‘কাজে’ এখন ঠিকানা জয়পুর। এক পয়সা আয় নেই, তবু মাথায় একটাই ভাবনা আমাকে টেস্টে কমেন্ট্রি করতে হবে। অন্তত একশো টেস্ট! সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের সঙ্গে বসে! আর সোমবার কেকেআর বনাম রাজস্থান ম্যাচেও স্থানীয় এক টিভি চ্যানেলে দেবেন্দ্র-র কমেন্ট্রির একটা এপিসোড থাকছে!
এক বর্ণ ইংরেজি এমনিতে বলতে পারেন না। সে ভাষায় প্রশ্ন করলে, উত্তর দিতে আটকে যান। কিন্তু টনি গ্রেগের আদলে কমেন্ট্রি করতে বলুন, গড়গড়িয়ে বেরোবে ইংরেজি। “সতেরো বছর বয়স থেকে এটা শুরু হয়েছে। ভোর তিনটেয় উঠে বিবিসি-র কমেন্ট্রি শুনতাম। টিভি খুলে বসে শুধু কমেন্ট্রি শুনতাম। ক্রিকেটার কোনও দিন হতে চাইনি। কমেন্টেটর হওয়াই একমাত্র লক্ষ্য,” বলছিলেন দেবেন্দ্র।
যে লক্ষ্য তাঁকে জীবন নিয়ে উদাসীন করে দিয়েছে। যে লক্ষ্য টনি গ্রেগকে তাঁর পিতা-সম করে দিয়েছে। এমনকী গ্রেগ মারা যাওয়ার পর দেবেন্দ্র অশৌচও পালন করেছেন!
“করব না? উনি বাবার মতো ছিলেন। আর রোজগার? ভাবি না। এত দিন খাওয়াদাওয়ার অভাব হয়নি, বাকি দিনেও হবে না।” হর্ষ ভোগলে থেকে ইয়ান চ্যাপেল সবার সঙ্গেই কখনও না কখনও অতিথি কমেন্টেটর হিসেবে থেকেছেন। গ্রেগ চ্যাপেলের উপহার দেওয়া পানামা টুপি দেবেন্দ্র-র মাথায় সর্বদা মজুত। কিন্তু এ ভাবে কত দিন? পেশাদার কমেন্টেটর হতে ইচ্ছে করে না? “আর মাস তিনেক। হর্ষর সঙ্গে কথা হয়েছে। সাহায্য করবে। একটাই স্বপ্ন আমার। সৌরভের সঙ্গে কমেন্ট্রি করা।”
অতঃকিম? আপাতত যা এত দিন করেছেন, তাই। রঞ্জি থেকে শুরু করে যে কোনও ম্যাচে কমেন্ট্রি। কখনও মাইক হাতে। কখনও কাগজ পাকিয়ে। ক্রিকেটার হওয়ার জন্য এমন পাগলামি দেখেছে ভারত। কিন্তু কমেন্টেটর?
সত্য সেলুকাস, বড় বিচিত্র এই দেশ!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.