কেকেআর ম্যাচে অনিশ্চিত দ্রাবিড়: গম্ভীরদের ভাবনায় নতুন বিদেশি পেসার
তিন কাঁটা নাইট শিবিরে
গোলাপি শহরের অনিন্দ্যসুন্দর ক্রিকেট-স্টেডিয়ামকে এক ঝলক দেখলে দু’টো ভাবনা মাথায় আসতে পারে। যে কোনও ক্রিকেটপ্রেমীর ড্রইংরুম সাজানোর জন্য এটা নিখুঁত অয়েল পেন্টিং। কিংবা সংস্কার-অভিলাষী দেশের কোনও রাজ্য ক্রিকেট সংস্থার কাছে পারফেক্ট ‘মডেল’ স্টেডিয়াম।
কিন্তু দুঃস্বপ্নেও মনে হবে না, এমন ছবির মতো স্টেডিয়ামও গা ঝাড়া দিয়ে জয়পুরে অতিথি টিমের কাছে কড়া প্রশ্নপত্র নিয়ে হাজির হতে পারে!
অতিথি টিম মানে, গৌতম গম্ভীরের কেকেআর। যারা কিনা আইপিএল সিক্সে ‘ফিয়ারলেস ক্রিকেট’-এর জয়মন্ত্র নিয়ে ঝাঁপাচ্ছে, এবং যাদের জয়পুর পৌঁছতে পৌঁছতে শনিবার সন্ধে পেরিয়ে গেল। তাই স্টেডিয়ামের হাল হকিকতের খোঁজ আর নেওয়া হয়নি। গেলে হয়তো টিম গম্ভীরের মুখ যে আরও গম্ভীর হত না, কে বলতে পারে। তবে এ সবের মাঝে একটা ছোট্ট ভাল খবর, দিল্লির বিরুদ্ধে ম্যান অব দ্য ম্যাচ হওয়া রাহুল দ্রাবিড় সোমবার কেকেআরের বিরুদ্ধে চোটের জন্য অনিশ্চিত।
মরু-শহরে নাইটদের কাঁটার সংখ্যা দুই। ভুল হল, তিন। শেষোক্তকে পরে আসা যাবে, কারণ সে রোগের ওষুধ আছে নাইটদের নিজেদের হাতে। কিন্তু প্রথম দু’টোয় নেই, বরং খুব সহজে অবস্থা ‘ভগবান ভরসা’! সোজাসুজি বললে জয়পুরের স্টেডিয়ামের বাইশ গজের বৃত্তান্ত। এবং আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় শহরে প্রখর গ্রীষ্মেও শিশিরের আবির্ভাব।
শনিবার সকালে জয়পুরের মানচিত্রে ঢুকে পড়ে দেখা গেল, অটোচালক থেকে সাধারণ পথচারী মুখ কারওরই মোটামুটি দেখা যাচ্ছে না। মুখ-মাথা সব কাপড়ে ঢাকা। গ্রীষ্মের নির্যাতন এতটাই অসহ্য। এই অবস্থায় কিনা রাতে শিশির? এসএমএস স্টেডিয়ামের বাঙালি কিউরটের তাপস চট্টোপাধ্যায় যে প্রশ্ন শুনে চটজলদি জানিয়ে দিচ্ছেন, রাত বাড়লে শিশিরের দাপটও বাড়ছে। অতএব, রাজস্থানের বঙ্গসন্তানের কেকেআরের জন্য ঠারেঠোরে টোটকা: আগামী সোমবার টস জিতলে আগে বল করো। আর টস হারলে? নাইটদের রাজপুত-বধ মুশকিল হতে পারে।
“গম্ভীর কী করবে সেটা ওর ব্যাপার। আমি কেকেআরকে পরামর্শ দিচ্ছি না। কিন্তু ওদের বোলিং যেহেতু নারিন নির্ভর, পরে ব্যাট করলে ভাল। শিশিরের প্রভাব তো আর একশো শতাংশ কমানো যাবে না। কিছুটা যাবে, কিন্তু পুরোটা নয়,” পরিষ্কার বলে দিচ্ছেন কিউরেটর। যাঁর কাছে উইকেটের চরিত্র সরকারি ভাবে ‘গুড’। কিন্তু আরসিএ অন্যান্য কর্তাদের কথাবার্তা শুনে উইকেট ‘গুড’, ‘ব্যাড’ না ‘আগলি’ শেষ পর্যন্ত কী দাঁড়াবে, বোঝা গেল না।
প্রশ্ন উঠতেই পারে, টি-টোয়েন্টি ম্যাচে উইকেট নিয়ে এত ফিরিস্তি কীসের? কারণ আছে। রাজস্থানের স্পোর্টস কাউন্সিলের সঙ্গে আরসিএ-র জটিল টানাপোড়েনে স্টেডিয়াম বন্ধ পড়ে ছিল আট মাস। যে সময়ে মাঠে দিব্যি আগাছা জন্মেছে, বাইশ গজে মৌরসিপাট্টা নিয়ে জাঁকিয়ে বসেছে গোড়ালি সমান উচ্চতার ঘাস। ফেব্রুয়ারি মাসে খুলেছে বন্ধ স্টেডিয়াম। আইপিএলের আগে দেড় মাস সময় পাওয়া গিয়েছে উইকেট-প্রস্তুতির। এক কর্তা যেমন বলে দিলেন, “উইকেট খারাপ হবে বলছি না। কিন্তু ভাল হবে, সেটাও নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।”
এক গেল, দুই গেল, পড়ে তিন নম্বর কাঁটা। সেটা অবশ্য বহিরঙ্গে নয়, নাইটদের অন্দরমহলে। যার ভরকেন্দ্রে দাঁড়িয়ে টিমের বোলিং-মেন্টর কাম বোলার ব্রেট লি। গত বুধবারের ইডেনে দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে দু’টো উইকেট পেলেও লি চার ওভারে রান দিয়েছেন চল্লিশ। শোনা যাচ্ছে, যা নিয়ে খুব একটা খুশি নয় টিম ম্যানেজমেন্ট। বরং রাজপুত-বধের নকশায় বর্ষীয়ান অস্ট্রেলীয় পেসারকে বসিয়ে দেওয়ার সম্ভাবনা পঞ্চাশ-পঞ্চাশ। এও শোনা যাচ্ছে, ভাল বিদেশি পেসারের খোঁজ চলছে কেকেআরে। কারণ, যাঁরা পড়ে আছেন, তাঁদের মধ্যে প্রদীপ সঙ্গওয়ানের কাঁধে চোট। বালাজি চোটপ্রবণ। লি-র অফ ফর্ম। মার্শাল ডি’ল্যাঞ্জকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া তাঁর পিঠে চোট। চেষ্টা চলছে, নিলামে অবিক্রীত অবস্থায় অস্ট্রেলীয় পেসারদের মধ্যে কোনও এক জনকে পাওয়ার। এ সবের মধ্যে দিল্লির বিরুদ্ধে হারা ম্যাচ রাজস্থান রয়্যালসের জিতে যাওয়াও দেখতে হল। যা টিভিতে দেখতে দেখতে টিম লক্ষ্মীরতন শুক্ল-র মতো কেউ কেউ সন্ধেয় বলে ফেললেন, “বিশ্বাসই হচ্ছে না রাজস্থান এ ভাবে জিতে গেল দেখে।” আর বলে রাখা ভাল, সোমবার কিন্তু রাজপুতদের হয়ে শেন ওয়াটসন নামছেন, নামছেন অসীম খিদে নিয়ে নিজের চেনা বিশ্বে। যার নাম টেস্ট নয়। টি-টোয়েন্টি।




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.