|
|
|
|
হাউসবোটে কুপিয়ে খুন ব্রিটিশ তরুণীকে,
পালানোর পথে গ্রেফতার ডাচ পর্যটক |
নিজস্ব সংবাদদাতা • শ্রীনগর |
ফের রক্তাক্ত ভূস্বর্গ। আজ ডাল লেকের একটি হাউসবোট থেকে উদ্ধার হয়েছে এক ব্রিটিশ মহিলা পর্যটকের দেহ। বছর চব্বিশের ওই বিদেশিনিকে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন ডাচ পর্যটক ডি-উইট রিচার্ড।
চার পাশ রক্তে ভেসে যাচ্ছে। একাধিক বার যে ছুরি দিয়ে কোপানো হয়েছে, সারা দেহে সেই ছাপ স্পষ্ট। ধস্তাধ্বস্তির চিহ্ন ও জামা-কাপড়ের হাল দেখে পুলিশের অনুমান, খুনের আগে ওই ব্রিটিশ তরুণীকে ধর্ষণও করা হয়েছে। তবে ময়না তদন্তের রিপোর্ট হাতে না পেলে এ নিয়ে নিশ্চিত করে কিছু বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছেন কাশ্মীর পুলিশের আইজি আবদুল গনি মির।
প্রায় মাস দু’য়েক আগে ডাল লেকের হাউসবোটটিতে এসে উঠেছিলেন ওই বিদেশিনি। এপ্রিলের চার তারিখ ওই হাউসবোটেরই অন্য একটি ঘর ভাড়া নেন রিচার্ড। খুনের পর প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই পালিয়ে যান তিনি। আজ সকালে ঘটনাস্থলের প্রায় ৭৫ কিলোমিটার দূরে কাজিগুন্দ এলাকা থেকে পুলিশ পাকড়াও করে রিচার্ডকে। পুলিশ জানায়, হাউসবোটে সমস্ত জিনিসপত্র রেখে, শুধু পাসপোর্ট সঙ্গে নিয়ে পালাচ্ছিলেন তিনি। উপত্যকা ছেড়ে পালানোর পরিকল্পনা ছিল ৪৩ বছর বয়সি নেদারল্যান্ডের ওই বাসিন্দার। |
ব্রিটিশ তরুণীর দেহ নিয়ে যাচ্ছে পুলিশ। ছবি: এপি |
হাউসবোটের মালিক ও তাঁর ছেলের দাবি, কাল রাত ১২টা নাগাদ তাঁরা ঘুমোতে চলে যান। রাত আড়াইটে নাগাদ ওই বিদেশিনির ঘর থেকে ঝগড়া ও কান্নাকাটির আওয়াজ শুনতে পেয়েছিলেন তাঁরা। এ দিন মৃতদেহের পাশ থেকে একটি রক্তমাখা ছুরি উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ব্রিটিশ বিদেশ ও কমনওয়েলথ অফিস এই ঘটনার বিস্তারিত রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছে। দূতাবাসের তরফে মৃতার পরিবারকে সাহায্যের আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। জম্মু-কাশ্মীরের পরিস্থিতি উত্তপ্ত থাকায় সেখানে ব্রিটিশ পর্যটকদের বেড়াতে যাওয়ার উপর কিছু বিধিনিষেধ আরোপ করেছিল ব্রিটেন। শ্রীনগর বা জম্মুতে পর্যটকদের উপর আক্রমণের কোনও ঘটনা না ঘটায় কিছু দিন আগে শিথিল করা হয়েছিল নিষেধাজ্ঞা। তার পরই আজকের এই ঘটনা।
গত কয়েক মাস ধরে অবশ্য ভারতের নানা প্রান্তে বিদেশি পর্যটকদের উপর আক্রমণের ঘটনা ক্রমশ বেড়েই চলেছে। ১৬ মার্চ আগরা যাওয়ার পথে দাতিয়ার জঙ্গলে গণধর্ষণ করা হয় এক সুইস মহিলাকে। এর তিন দিন পরেই, যৌন নির্যাতন ঠেকাতে আগরার এক হোটেল থেকে ঝাঁপ দেন এক ব্রিটিশ পর্যটক। গত বছর ডিসেম্বর মাসে দিল্লির চলন্ত বাসে ডাক্তারি ছাত্রীর গণধর্ষণের পর ভারতে সফররত ব্রিটিশ পর্যটকদের সতর্ক করে দিয়েছিল ব্রিটিশ দূতাবাস।
এত কড়াকড়ি সত্ত্বেও মেয়েদের নিরাপত্তা যে এখনও কতটা ঠুনকো, ডাল লেকের এই ঘটনা আরও এক বার তা প্রমাণ করে দিল। |
|
|
|
|
|