|
|
|
|
|
|
|
নানা রকম... |
|
পৃথিবীও তো এখন বিগ বাজার |
দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায় |
|
দুনিয়াটা একটা বিগ বাজার। যে বাজারে অন্যান্য পণ্য বস্তুর সঙ্গে মনুষ্যত্বের, মানবিকতার এমনকী সম্পর্কেরও কেনাবেচা হয়। এই বাজারের ব্যবসায়ীর একমাত্র মূলধন লোভ-লালসা-কামনা-বাসনা, যার প্রতাপে নষ্ট হচ্ছে পৃথিবীর ভারসাম্য। সহ্যের বাঁধ ভেঙে পৃথিবী প্রতিবাদ করছে। মাঙ্গলিকের প্রযোজনায় মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের নাটক ‘মল্লভূমি’র দেবকুমার প্রতিটি পলে আমাদের এই আগ্রাসী মনোভাবের দিকে আঙুল তুলেছে। মোহিত চট্টোপাধ্যায়ের অসাধারণ সংলাপের বুননে এবং সমীর বিশ্বাসের নিপুণ পরিচালনায় নাটকটি মনে দাগ কাটে। মঞ্চের এক দিকে দেখা যায় মহাকাশ, আর এক দিকে বাড়ি বাজারের বিজ্ঞাপন। সোমনাথ দত্তের মঞ্চ ভাবনাটি ভাল লাগে। ভাল লাগে মুরারী রায়চৌধুরীর আবহ এবং কবীর সেন বরাটের নৃত্য ভাবনা। বাবলু সরকারের আলো নাটকের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। অভিনয় এ নাটকের সম্পদ। সমীর বিশ্বাসের দেবকুমার এক কথায় অনবদ্য। বাসুর চরিত্রে সৌম্য বিশ্বাস অপূর্ব। ভাল লাগে চন্দ্রার ভূমিকায় দেবযানী মুখোপাধ্যায়ের অভিনয়।
|
একাই একশো |
|
রাজা অয়দিপাউস থেকে সোজা পঞ্চানন সাঁতরা। সুদূর ইউরোপের করিন্থ ও থিবস হয়ে একেবারে খাস কলকাতার ড্রয়িংরুমে। আজ তাদের সপ্তম বিবাহবার্ষিকী, কিন্তু তারা স্থির করেছে বিবাহের বন্ধন ছেড়ে বেরিয়ে আসবে। এখান থেকেই জন্ম নিল ‘খচখচ’ আর সেই খচখচ তাড়াতেই কোর্টের মুখ থেকে উকিল ভেবে অপহরণ করে আনা হল পঞ্চাননকে। আর কী ভাবে মঞ্চে উপস্থিত না থেকেও ‘মানুর মা’ নাটকের কেন্দ্রীয় চরিত্র হয়ে ওঠেন, তাই নিয়েই তুমুল হাসির নাটক ‘যদিদং’। সোহন বন্দ্যোপাধ্যায়ের রচনা ও নির্দেশনায় মৌসুমী সেনগুপ্ত ও সোহন স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন। নাটকের বড় প্রাপ্তি দেবশঙ্কর হালদার ওরফে পঞ্চানন সাঁতরা। অভিনয়ের গুণে তিনিই হয়ে ওঠেন নাটকের সেরা চরিত্র। নজর কাড়ে সুদীপ সান্যালের আলো, সৌমিক-পিয়ালির মঞ্চ।
|
অন্য প্রয়াস |
আশিস চট্টোপাধ্যায় |
|
হিন্দুস্থানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের বন্দিশ ভিত্তিক সাহিত্যচর্চা যে যথেষ্ট জনপ্রিয় হয়েছে, তা আবার প্রমাণিত করল রাগ-রস-সাহিত্যের চতুর্থ অধিবেশন। সঙ্গীতজ্ঞা, লেখিকা মীনা বন্দ্যোপাধ্যায়ের তত্ত্বাবধানে ভারতীয় ভাষা পরিষদের এই প্রশংসনীয় প্রয়াস তুলে আনল ধ্রুপদ সাহিত্যের কয়েকটি রত্ন। পরিষদ হল মুখরিত হল ফাল্গুনী মিত্রের সংগ্রহ থেকে তাঁরই উদাত্ত কণ্ঠে হরিদাস, বৈজু, তানসেন, সুরতসেন প্রমুখ কিংবদন্তি সঙ্গীতজ্ঞের রচনায়। তাঁর ভাবজগৎকে মূর্ত করল কত্থক নৃত্যশিল্পী আলোকপর্ণা গুহর দৃষ্টিনন্দন নৃত্য। সহযোগিতায় অপূর্বলাল মান্না পাখোয়াজে, প্রদীপ পালিত হারমোনিয়ামে এবং সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্য তবলায় তাঁদের ভূমিকা সার্থক ভাবে পালন করেন। রূপ-অরূপের মনোজ্ঞ ব্যাখ্যা করেন মীনা স্বয়ং যা এই শিক্ষণীয় পরিবেশনাকে অন্য মাত্রা দেয়।
|
জাগ্রত বসন্ত |
সম্প্রতি ‘জাগ্রত বসন্ত’ শীর্ষক একটি সুন্দর অনুষ্ঠান হয়ে গেল কলাকুঞ্জে। এই একক গানের অনুষ্ঠানে দিল্লি নিবাসী শিল্পী শাশ্বতী সেনগুপ্ত শ্রোতাদের মন জয় করে নিলেন। এর আগেও তিনি কলকাতায় এসে বহু বার গান শুনিয়ে গেছেন। তবে এদিন প্রত্যাশা অনুযায়ী তাঁর চর্চিত কণ্ঠে বাছাই করা কিছু গান এক অন্য মাত্রা পেয়েছিল। তিনি অনেকগুলি গান শোনালেও বিশেষ ভাবে উল্লেখ করতে হয়, ‘সহসা ডালপালা’, ‘বসন্ত তার গান’, ‘তুমি কিছু দিয়ে যেও’, ‘যদি তোরে নাই চিনি গো’, ‘এই উদাসী হাওয়ার পথে পথে’ প্রভৃতি। তবে মনে থাকবে তাঁর কণ্ঠে ‘সেই ভাল সেই ভাল’ এবং ‘তোমায় নতুন করে পাব বলে’। গানের পরে ছিল শুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নির্দেশনায় একটি নাটক ‘হস্তিনাপুর’। বিষয়বস্তু এবং অভিনয়ের গুণে নাটকটি বেশ ভাল লাগে। আয়োজক ‘অন্য স্বর’।
|
তাঁকে মনে রেখে |
সঙ্গীতাচার্য কৃষ্ণচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্মরণে ‘সঙ্গীত দরবার’ সংস্থার উদ্যোগে শিশির মঞ্চে শুরুতেই সেতার পরিবেশন করলেন সপ্তর্ষি হাজরা। জয়পুর সেনিয়া ঘরানার এই শিল্পী প্রথমে পূরবী রাগে পূর্ণাঙ্গ আলাপ পেশ করলেন। এর পরে তিনি বাজান পরজবসন্ত রাগে তিনতাল বিলম্বিত ও দ্রুত গত, তান-তোড়া এবং ঝালা। তবলায় ছিলেন শঙ্করপ্রসাদ চৌধুরী। এর পরে ছিল সুগত মার্জিতের গান। এ দিন তিনি রাগ শঙ্করা ও পরে রাগ ছায়ানট পরিবেশন করেন। বাংলা গানগুলিও শ্রোতাদের মন ছুঁয়ে যায়। |
|
|
|
|
|