চেনা নাইট অধিনায়কের অচেনা জগৎ আনন্দবাজারে
ক্যারিবিয়ান জাদুকর,
তোমাকে সেলাম
কী খবর বন্ধুরা? দুঃখিত, আপনাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে একটু দেরি হয়ে গেল। আসলে খুচরো ঝামেলা ছিল কিছু। যা-ই হোক, এই লেখা যখন আপনারা পড়বেন, ততক্ষণে আইপিএল সিক্স বেশ মেজাজেই শুরু হয়ে গিয়েছে। দু’টো ম্যাচও শেষ। মুম্বই ইন্ডিয়ান্স অল্পের জন্য বৃহস্পতিবার হেরে গেল রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুর কাছে। আমরা আবার প্রথম ম্যাচেই দুর্দান্ত একটা জয় তুলে নিলাম দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের বিরুদ্ধে। যা কি না আবার আমার পুরনো টিম।
আমাদের ম্যাচে পরে আসছি। তার আগে এই খুব সুন্দর টুর্নামেন্টটা কী ভাবে বিভিন্ন ব্যক্তিত্ব, এমনকী বিভিন্ন যুগকেও মিলিয়ে দেয়, সে ব্যাপারে একটু বলে নিতে চাই।
এ রকমই একজন ব্যক্তিত্ব হচ্ছেন অস্ট্রেলিয়ার প্রাক্তন ওপেনার ডেভিড বুন। যিনি কিনা বুধবারে আমাদের প্রথম ম্যাচে ম্যাচ রেফারি ছিলেন। আমি ওঁকে ম্যাচের দিন ভোরে প্রথম দেখি। তখন ক’টা বাজে? ছ’টা-সাতটা হবে। আমি তখন সবে হোটেল রুমের পর্দা সরিয়ে পুল-এর দিকে তাকিয়েছি, দেখি মিস্টার বুন মোটা গোঁফ আর ঠোঁটে জ্বলন্ত সিগারেট নিয়ে নিজস্ব মেজাজে হাঁটছেন।
ডেভিড বুন। এখন যেমন।
ওঁকে দেখেই জাস্টিন ল্যাঙ্গারের ‘অস্ট্রেলিয়া, ইউ লিটল বিউটি’ বইটার কথা মনে পড়ে গেল। যেখানে ‘সংমাস্টার’ বলে বইয়ের প্রথম অধ্যায়ে বুনকে নিয়ে অনেক কিছু লিখেছে ল্যাঙ্গার। তার পর ‘কিল হিম, বিশি’ বলে আর একটা চ্যাপ্টারে ল্যাঙ্গার লিখেছে যে, ওর মাথায় একবার বাউন্সার আছড়ে পড়েছিল, আর নন-স্ট্রাইকিং প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা বুন ওর দিকে হেঁটে এসে বলেছিলেন, “টেস্ট ক্রিকেটে নায়ক বলে কিছু হয় না। তুমি বাবা বরং রিটায়ার হার্ট হয়ে যাও।”
ল্যাঙ্গার স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছিল নিজের শৈশবের নায়ককে ‘রিটায়ার হার্ট’ করার পরামর্শ দিতে শুনে। তবে ল্যাঙ্গার রিটায়ার হার্ট হয়ে মাঠ ছাড়েনি, আর পরে কী হয়েছিল সে তো ইতিহাস। ল্যাঙ্গারের এই মনোভাব আমার বেশ ভাল লেগেছিল। ম্যাচের দিন সকালে আমার কারও সঙ্গে বিশেষ কথাবার্তা শুরু করতে ইচ্ছে হয় না। কিন্তু বুধবার সকালে ভীষণ ইচ্ছে হচ্ছিল মিস্টার বুনের সঙ্গে ওই ঘটনাটা নিয়ে আরও কিছু কথা বলতে। অস্ট্রেলিয়া টিমের গানবাজনার ঐতিহ্য এবং আরও অনেক কিছু নিয়ে।
আসলে খেলায় নেতা হতে গেলে নামের পাশে লেখার দরকার পড়ে না যে, আপনি ‘লিডার।’ বুন ও লাঙ্গারই কেউই অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়কত্ব করেনি। কিন্তু তাই বলে ‘লিডার’ হতেও ওদের অসুবিধা হয়নি। ওদের ক্রিকেটই টিমের সতীর্থদের কাছে, এমনকী পরবর্তী প্রজন্মের কাছেও ওদের ‘লিডার’ বানিয়ে দিয়েছিল। আমি নিজেও এটা বিশ্বাস করি। এ বছর টিমের জন্য আমার মন্ত্রটা হচ্ছে, ‘ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলো।’ কিন্তু সতীর্থদের সেটা করতে বলার আগে, আমাকে নিজেকে সেটা করে দেখাতে হবে। তাই প্রথম ম্যাচের একদম প্রথম বল থেকে আমি সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলাম। চেয়েছিলাম একটা নির্দিষ্ট প্যাটার্ন তৈরি করতে। একটা উদারণ তৈরি করতে। সেটা পেরেছি বলে ভাল লাগছে।
আর আমার টিমও আমাকে সুযোগ দিয়েছিল ভয়ডরহীন ক্রিকেট খেলার। ব্রেট লি শুরুটা দুর্দান্ত করল। বালা আবারও অসাধারণ। রজতও বরাবরের মতো পারফর্ম করা শুরু করেছে, আর দেখছি বরাবরের মতো এ বারও ওকে কোথাও হইচই নেই! এই ব্যাপারটা আমার অদ্ভুত লাগে। লক্ষ্মী যেমন দুর্দান্ত বল করেছে, তেমনই ফিল্ডিংটাও অসাধারণ করেছে। লক্ষ্মী আমার বহু দিনের পুরনো বন্ধু, ওর কাছে আমার প্রত্যাশাও অনেক বেশি। আর কালিস নিয়ে কী-ই বা বলার আছে? ক্রিকেটের প্রতি ওর মনোভাব, নিজের কাজের প্রতি দায়বদ্ধতা আগেও আমাকে মুগ্ধ করত, এখনও করছে। আর সুনীল নারিনক্যারিবিয়ান জাদুকর, যেটা সবচেয়ে ভাল পারে, সেটাই করেছে। নারিন, তোমাকে সেলাম!
দক্ষিণ আফ্রিকান, অস্ট্রেলীয়, শ্রীলঙ্কান, ভারতীয়, ক্যারিবিয়ানআইপিএল সমস্ত রং-কে একসঙ্গে করে উপহার দেয়। কেকেআর ড্রেসিংরুমে যেটা আবার সবচেয়ে বেশি। ওহ্, বলা হয়নি। আমাদের নিরাপত্তারক্ষীদের একজন আবার নেপালের!




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.