হলদিয়ায় আইকেয়ার পরিচালিত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা যেমন চলছে, তেমন চলবে বলেই বৃহস্পতিবার জানাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের ডিভিশন বেঞ্চ। ওই বেঞ্চে রয়েছেন বিচারপতি বিক্রমজিৎ সেন এবং এ আর দাভে। বেঞ্চ বলেছে, পড়াশোনার ঘাটতি মেটাতেপ্রয়োজনে রবিবারেও ক্লাস নিতে হবে।
দীর্ঘদিন ধরে টানাপোড়েন চলছে হলদিয়া মেডিক্যাল কলেজের অস্তিত্ব নিয়েই। সব থেকে বেশি দুশ্চিন্তা ছাত্রছাত্রী এবং অভিভাবকদেরই। তাঁদের পড়াশোনা কী ভাবে চলবে, তা জানতে চেয়ে শীর্ষ আদালতে আবেদন করেছিলেন প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা। প্রধান বিচারপতি আলতামাস কবীরের ডিভিশন বেঞ্চ পড়ুয়াদের দুর্ভাবনা অনুভব করেছে। রায়ে বলা হয়েছে, রাজ্য সরকার, রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়া ওই কলেজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সব দিক থেকে সহায়তা দেবে বলেই মনে করে সর্বোচ্চ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ, যে-সব ছাত্রছাত্রী প্রথম বর্ষের পরীক্ষায় কম নম্বর পেয়েছেন, চার সপ্তাহের মধ্যে তাঁদের জন্য সাপ্লিমেন্টারি পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে হবে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়কে। অবিলম্বে ওই সব ছাত্রছাত্রীকে রেজিস্ট্রেশন নম্বর দিতে হবে। আর কলেজ-কর্তৃপক্ষের জন্য শীর্ষ আদালতের নির্দেশ, ওই ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনায় যে-ক্ষতি হয়েছে, প্রয়োজনে রবিবারেও ক্লাস নিয়ে সেই ঘাটতি মিটিয়ে দিতে হবে। এই রায়ের ফলে ওই কলেজ নিয়ে দীর্ঘ টানাপোড়েন শেষ হল।
বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই হলদিয়া মেডিক্যালের অনুমোদন খারিজ করে। কয়েক দিনের মধ্যেই অনুমোদন খারিজ করে মেডিক্যাল কাউন্সিল। তার পরে অনুমোদন খারিজ করে রাজ্য স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। কলেজ-কর্তৃপক্ষ হাইকোর্টে মামলা করেন। বিচারপতি গিরীশ গুপ্তের ডিভিশন বেঞ্চ সরকার, বিশ্ববিদ্যালয় এবং এমসিআইয়ের অনুমোদন খারিজের বিজ্ঞপ্তি বাতিল করে বলে, এ রাজ্যে চিকিৎসকের খুবই অভাব। এই অবস্থায় একটি চালু কলেজ, যেখান থেকে প্রতি বছর রাজ্য ২০০ জন চিকিৎসক পাবে, সেটা বন্ধ করে দেওয়ার বিলাসিতা সাজে না। সেই রায়ের পরেও রাজ্য এবং এমসিআই ওই কলেজ বন্ধ করার চেষ্টা চালিয়ে যায়। প্রথম বর্ষের ছাত্রছাত্রীরা ভবিষ্যতের কথা ভেবে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদনকারীদের আইনজীবী রোহিত অগ্রবাল জানান, ছাত্রছাত্রীদের সব আবেদনই মঞ্জুর করেছে সুপ্রিম কোর্ট। |