পুর-এলাকায় ‘অনুপ্রবেশ’ পঞ্চায়েতের রিকশার
অবৈধ রিকশার জটে নিত্য ভোগান্তি শহরে
পুরসভা, পুলিশ ও প্রশাসনের উদাসীনতায় বিধি ভেঙে জলপাইগুড়ি শহরের রাস্তায় যথেচ্ছ ভাবে ঢুকছে পঞ্চায়েত এলাকার রিকশা। ফলে শহরের যানজট বেড়ে চলেছে। পুরসভার তরফে পঞ্চায়েত রিকশা নিয়ন্ত্রণ করতে কেউ উদ্যোগী হননি। তাই শহরের মূল রাস্তা দিয়ে পঞ্চায়েতের রিকশার সংখ্যা হু হু করে বাড়ছে বলে অভিযোগ রয়েছে। চালকদের অনেকেরই লাইসেন্স নেই বলে জানতে পেরেছে পুরসভা। কিন্তু, প্রায় দারিদ্রসীমার নিচে থাকা রিকশা চালকদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া ঠিক হবে কি না সেই প্রশ্নেই থমকে যাচ্ছেন পুরকর্তারা। জলপাইগুড়ি পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান পিনাকী সেনগুপ্ত বলেন, “অবৈধ রিকশার সমস্যার বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে কিছু নতুন বিধি নিষেধ আরোপের কথা ভাবা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে শীঘ্রই তা চালু করা যাবে।” জলপাইগুড়ির পুলিশ সুপার অমিত জাভালগি জানান, পুরসভার সঙ্গে আলোচনা করে রিকশা চালককে ‘গ্রিন কার্ড’ দেওয়ার কথা ভাবা হয়েছে। তিনি বলেন, “তা হলে কোন রিকশা কোথাকার তা চেনা সহজ হয়ে যাবে।”
জলপাইগুড়ি শহরে বাড়ছে রিকশার সংখ্যা।—নিজস্ব চিত্র।
ওই বিধি ও কার্ড যতদিন তা চালু না হয়, ততদিন অবৈধ রিকশার জন্য যানজটে আটকে নিত্যযাত্রীদের কেমন দুর্ভোগ চলবে তা একনজরে দেখে নেওয়া যাক।
সকাল সাড়ে ৮ টা শিলিগুড়িগামী লোকাল ট্রেন যাওয়ার প্রায় ১০ মিনিট আগে থেকেই বন্ধ হয়ে যায় ১,২,৩,৪ নম্বর রেলগেটগুলি। ওই ১০ মিনিট রেলগেট বন্ধ থাকায় দুপাশে দাঁড়িয়ে যায় প্রায় কয়েকশো রিকশা। ফলে পথচারীদের সমস্যায় পড়তে হয় রোজই। একই চিত্র দেখা যায় সকাল ১০ টা নাগাদ হলদিবাড়িগামী ট্রেনটি যাওয়ার সময়। আর অফিস-স্কুল টাইম থাকায় রোজ ভোগান্তিতে পড়তে হয় ছাত্র-ছাত্রী, অফিস কর্মীদের।
শুধু ট্রেন চলাচলের সময় রেল গুমটি এলাকায় নয়, শহরের বিভিন্ন ব্যস্ত এলাকা গুলিতে রিকশা দাঁড় করিয়ে রাখার ফলে যানজট বাড়ছে। প্রতিদিনই রেল লাইনের কাছে যানজটের কারণে স্কুলে যেতে দেরি হয়ে যায় বলে জানায় অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী দেবাদৃতা বিষ্ণু। সে বলে, “বেশ কয়েকদিন স্কুলে যেতে দেরিও হয়েছে। এ সব সমস্যার সমাধান কেন হয় না জানি না।” নিত্যযাত্রীরা জানান, যানজটের সময়ে ছোটখাট দুর্ঘটনা প্রায় রোজই ঘটছে।
জলপাইগুড়ি পুরসভার হিসেব অনুযায়ী, শহরে লাইসেন্স প্রাপ্ত রিকশা রয়েছে ৪৩০০। কিন্তু, দ্বিগুণ সংখ্যক রিকশা শহরে রোজ চলাচল করে বলে বাসিন্দাদের অভিযোগ। বাইরের রিকশাগুলি পঞ্চায়েতের থেকে লাইসেন্স প্রাপ্ত। তা শহরের রাস্তায় চলাচল করতে পারে না। পুরসভার তরফে পঞ্চায়েতের রিকশা বাজেয়াপ্ত করার আইন রয়েছে। বিধি রয়েছে জরিমানা করারও। অথচ পুরসভার পক্ষ থেকে কিছু করা হচ্ছে না কেন? পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান বলেন, “কেউ তো শখ করে রিকশা চালান না। রুটি-রুজি জোগাড়ের জন্য চালান। সে জন্য সব দিক মাথায় রেখেই পদক্ষেপ করতে হচ্ছে।”
পক্ষান্তরে, রিকশা চালক সংগঠনের তরফে বিস্তর অভিযোগ করা হয়েছে পুরসভার বিরুদ্ধে। জলপাইগুড়ির জাতীয় রিকশাচালক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মানিক সরকার বলেন, “আমাদের আলাদা স্ট্যান্ড নেই। যেখানে সেখানে দাঁড় করাতে হয়। ভাড়ার ঠিকঠাকানা নেই। এক সময়ে শহরে ৪০টি রিকশা স্ট্যান্ড ছিল। এখন মোটে ১০টি স্ট্যান্ড রয়েছে। পুরসভা-প্রশাসনের সে দিকে খেয়াল রাখা উচিত।”
বেশ কিছু রাস্তায় পঞ্চায়েতের রিকশা চলাচলে কড়াকড়ি হবে। পান্ডাপাড়া, রেসকোর্স পাড়া, গোমস্তা পাড়া এলাকার দিকে পঞ্চায়েতের রিকশা চালানো যাবে বলে পুরসভা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। মূল রাস্তা গুলি যেমন কদমতলা, বেগুনটারি, দিনবাজার ইত্যাদি এলাকায় বাইরের রিকশার চলাচল বন্ধ করা হবে বলে জানান পুরসভার ভাইস চেয়ারম্যান।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.